Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে মোয়াও

শীতের মরসুমে মোয়ার টানে জয়নগরে আসেন অনেকে। শুধু মোয়াই নয়, ভোজনরসিকদের কাছে এই এলাকার নলেন গুড়, বাদাম পাটালি, ক্ষীরের মোয়ার আকর্ষণও কম নয়। স্থানীয় ব্যবসায়ী মহল জানালেন, কলকাতা বা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত তো বটেই, দেশের অন্যান্য জায়গা থেকেও মোয়ার ক্রেতারা আসেন।

মোয়া-চাই: জয়নগরে একটি দোকানে। নিজস্ব চিত্র

মোয়া-চাই: জয়নগরে একটি দোকানে। নিজস্ব চিত্র

সমীরণ দাস
জয়নগর শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৩২
Share: Save:

মাউসের ক্লিকে জয়নগরের মোয়া এ বার আক্ষরিক অর্থেই ‘ছেলের হাতের মোয়া’ হতে চলেছে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে কম্পিউটার মাউসের এক ক্লিকেই মোয়া মিলবে বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে।

শীতের মরসুমে মোয়ার টানে জয়নগরে আসেন অনেকে। শুধু মোয়াই নয়, ভোজনরসিকদের কাছে এই এলাকার নলেন গুড়, বাদাম পাটালি, ক্ষীরের মোয়ার আকর্ষণও কম নয়। স্থানীয় ব্যবসায়ী মহল জানালেন, কলকাতা বা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত তো বটেই, দেশের অন্যান্য জায়গা থেকেও মোয়ার ক্রেতারা আসেন। দেশের বাইরের ক্রেতারাও যে জয়নগরের মোয়া নিয়ে কম আগ্রহী নন।

এই উৎসাহের দিকে তাকিয়েই জয়নগরের মোয়া-সহ অন্যান্য খাদ্যসামগ্রীকেও দেশ ও দেশের বাইরে ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগ করলেন এলাকার কয়েকজন যুবক। অনলাইন মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে তাঁরা মোয়াকে পৌঁছে দিচ্ছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। ঘরে বসেই মোয়ার মজা উপভোগ করতে পারছেন মোয়াপ্রেমীরা।

গত বছরই পরীক্ষামূলক ভাবে এই ব্যবস্থা শুরু হয় www.joynagar.com-এর উদ্যোগে। সাফল্যও আসে। এ বার তাই আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে মোয়া পৌঁছে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। উদ্যোক্তাদের অন্যতম শোভন রায় মণ্ডল বলেন, ‘‘অনেকে বাইরে থেকে এখানে এসে মোয়া কেনেন, বাড়ির জন্য নিয়ে যান। তবে এর বাইরেও অনেকেই আছেন, যাঁরা মোয়া কেনার জন্য এখানে এসে পৌঁছতে পারেন না। তাঁদের কথা ভেবেই আমরা এই ব্যবস্থাটা শুরু করি।’’

জয়নগরের বাইরে অনেক জায়গাতেই ‘জয়নগরের মোয়া’ নাম দিয়ে মোয়া বিক্রি হয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই মোয়ার সঙ্গে জয়নগরের আদৌ কোনও যোগাযোগ নেই বলেই দাবি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। আসল জয়নগরের মোয়ার সঙ্গে সেই সব মোয়ার স্বাদ-গন্ধের ফারাকও বিস্তর। তবু তা দিয়েই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটান মানুষ। শোভন জানান, কনকচূড় খইয়ে তৈরি আসল জয়নগরের মোয়ার স্বাদ অতুলনীয়। অনেকেই বিভিন্ন জায়গার মোয়া খান কিন্তু সেই স্বাদটা পান না। শোভনের কথায়, ‘‘আমরা খাঁটি জয়নগরের মোয়া মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাইছি। জয়নগর, বহড়ুর প্রথম সারির কয়েকটি মোয়া প্রস্তুতকারকের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে। অনলাইন অর্ডার এলে তাঁদের তৈরি মোয়াই আমরা সরবরাহ করি।’’

অর্ডার কাছাকাছি জায়গা থেকে এলে ‘ওয়েবসাইট’ যাঁরা পরিচালনা করছেন, তাঁদের লোকই দিয়ে আসেন। অর্ডার দূর থেকে এলে ‘কুরিয়ার সার্ভিসে’র সাহায্য নেওয়া হয়। কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা বা সংলগ্ন জায়গা থেকে অর্ডার এলে দিনের দিনই পৌঁছে যায় মোয়া। একটু দূরের জেলা থেকে অর্ডার এলে একদিন সময় লাগে। দেশের মধ্যে যে সব জায়গায় বিমান পরিষেবা রয়েছে সেখানেও একদিনের মধ্যেই অর্ডার পৌঁছয়। দেশের প্রত্যন্ত এলাকা বা বিদেশের ক্ষেত্রে সময় কিছুটা বেশি লাগছে বলে জানালেন উদ্যোক্তারা।

মোয়ার রফতানি নিয়ে আগেও একাধিক উদ্যোগ করা হয়েছে। তবে সেই সব চেষ্টা তেমন সাফল্য আসেনি। অনলাইন মার্কেটিং নিয়ে অবশ্য আশাবাদী মোয়া ব্যবসায়ীরা। জয়নগরের এক মোয়া কারবারি খোকন দাস বলেন, ‘‘অনেকেই আমাদের মোয়া পাঠাতে অনুরোধ করেন। পাঠাতে পারি না। একটা ব্যবস্থা হলে খুবই ভাল। আজকাল তো মানুষ সব কিছুই অনলাইনে কিনতে অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন। মোয়াই-বা কিনবেন না কেন!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Online Selling Jaynagarer Moya Tech
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE