সকাল হোক বা দুপুর, কিংবা রাত—তরকারি যত রকমই হোক না কেন, তার সঙ্গে রুটি আবশ্যক। ভারতে এমন রাজ্যও আছে, যেখানে ভাত খেতেই পছন্দ করেন লোকে। এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা তিন বেলাও ভাত খান। তবে এ দেশে আছে এমনই এক রাজ্য, যেখানকার মানুষের রুটি ছাড়া চলে না। শুধু আটা নয়, এই রাজ্যের বাসিন্দাদের রুটিতেও আছে বৈচিত্র।
ভারতের এক এক রাজ্যের রূপ, সৌন্দর্য, কৃষিজাত পণ্য, সংস্কৃতি এক এক রকম। তেমনই এক রাজ্য হরিয়ানা। উৎকৃষ্ট মানের গম উৎপাদনের জন্য এ রাজ্যের খ্যাতি। চাষ হয় ভুট্টা, বাজরাও। আর ঠিক সে কারণেই এই রাজ্যের খাদ্যতালিকায় অবশ্যম্ভাবী ভাবে জুড়ে গিয়েছে রুটি। হরিয়ানার পরিচিতি ‘রুটির রাজ্য’ হিসাবে।
বাঙালি হেঁশেলে রুটি হয় মূলত আটা দিয়ে। কেউ কেউ স্বাদের জন্য তাতে ময়দাও মিশিয়ে নেন। তবে হরিয়ানার বাসিন্দারা যে ধরনের রুটি খান, তাতে শুধু গমের আটা থাকে না। থাকে অনেক কিছু। সে কারণে, তার পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। কী ভাবে সেই রুটি তৈরি হয়?
বাজরা-আলুর রুটি: কলকাতায় গমের আটা ব্যবহার হলেও এতে গ্লুটেন থাকে। অনেকেই গ্লুটেন হজম করতে পারেন না। তবে বাজরার আটা গ্লুটেনমুক্ত, এতে প্রচুর ফাইবার থাকে। বাজরার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। অর্থাৎ চট করে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায় না। এখানকার লোকজন বাজরার আটার সঙ্গে সেদ্ধ আলু মেখে রুটি তৈরি করেন।
আরও পড়ুন:
এই রুটি বানাতে হলে আলুসেদ্ধ, জোয়ান, কাঁচালঙ্কা কুচি, আদা কুচি, ধনেপাতা, জিরে স্বাদমতো নুন দিয়ে আটা মেখে নিতে হবে। তার পর রুটি করে নিলেই হবে। এই ধরনের রুটি আটার রুটির মতো পাতলা ফুলকো হয় না। এগুলি হয় একটু মোটা। ঘি দিয়ে তা সেঁকে নেওয়া হয়।
আটা-বেসনের রুটি: গমের আটার সঙ্গে কিছুটা বেসন মিশিয়ে এই রুটি তৈরি হয়। আটা মাখা হয় টক দই দিয়ে। ছোলার বেসন রুটিতে প্রোটিন যোগ করে। টক দই প্রোবায়োটিকের জোগান দেয়, যা পেটের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। ২ ভাগ আটার সঙ্গে ২ ভাগ বেসন মিশিয়ে সামান্য তেল, নুন, মশলা দিয়ে আটা মেখে নিন। তার পর রুটি করে নিন।
মক্কি রুটি: ভুট্টার আটা দিয়ে তৈরি রুটি খাওয়ার চলও রয়েছে হরিয়ানায়। কেউ কেউ ভুট্টার আটার সঙ্গে বাজরাও মিশিয়ে নেন। কেউ শুধুই বাজরার রুটি খান। ভুট্টার আটা ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে মেখে আধ ঘণ্টা কাপড় ঢাকা দিয়ে রেখে দিন। তার পর রুটি করে নিন। এই রুটিও একটু মোটা হয়। সেঁকে নেওয়ার সময় ঘি ব্যবহার করা হয়। ‘মক্কি দি রোটি’ বা ভুট্টার আটার তৈরি রুটির সঙ্গে সর্ষে শাক খাওয়ার চল রয়েছে এই রাজ্যে।
যে হেতু এখানে ভাল মানের গম পাওয়া যায়, তাই গমের আটার রুটি খাওয়ার চলও যথেষ্ট। পাশাপাশি জোয়ার, বাজরার রুটিও খাওয়া হয় এই রাজ্যে।