প্রতীকী ছবি।
করোনার উগ্রতা বাড়ছে দিনে দিনে৷ কিন্তু তা বলে তো আর দিনের পর দিন ঘরে বসে থাকা যাবে না! অফিস-কাছারি খুলছে, অন্য কাজকর্মও আছে৷ বাসে-ট্রামে-অটোয় উঠতে হবে৷ সব সময় ৬ ফুট দূরত্ব যে থাকবে না, তা বলাই বাহুল্য৷ কাজেই মাস্ক, স্যানিটাইজার ইত্যাদির পাশাপাশি এমন কিছু চাই যা ভিতর থেকে সুরক্ষা দেবে৷ সুষম খাবারে সে গুণ আছে অবশ্যই, তা-ও আজকের পরিপ্রেক্ষিতে চাই আরও একটু বেশি৷ আর সে রসদ লুকিয়ে আছে আমাদের সুপ্রাচীন ভেষজ উপাদানের মধ্যেই৷
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ‘ওজো’, অর্থাৎ চেহারার উজ্জ্বলতা থেকেই বোঝা যায় মানুষটি শরীরে-মনে কতটা ভাল আছেন৷ তাঁর রোগ প্রতিরোধ শক্তি কতটা কার্যকর৷ ওজো বাড়ানোর অঢেল উপাদান আছে তাঁদের ভাড়ারে, যা নিয়মিত খেলে আজকের এই ক্রান্তিকালে একটু হলেও শান্তিতে থাকা যায়৷ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি হয়ে জীবাণুর সঙ্গে লড়াইয়ের ক্ষমতা যেমন বাড়ে, কোষের ভাঙচুর কমে কমতে থাকে বিভিন্ন ক্রনিক অসুখ, যেমন, ডায়াবেটিস-হাইপ্রেশার ও কোলেস্টেরল, হৃদরোগ, মেদবাহুল্য, মানসিক অশান্তি-উদ্বেগ-অবসাদ ইত্যাদির প্রবণতা, যার প্রত্যেকটিই কোভিড-১৯-এর জটিলতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত৷ উপরি পাওনা উজ্জ্বল ত্বক-চুল ও চেহারায় বয়সের ছাপ কম পড়া৷
কী খাবেন
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ দেবাশিস ঘোষ জানিয়েছেন, “ঘরে কম তেলে বানানো সুষম খাবার খাবেন চার বেলা৷ তার সঙ্গে খাবেন একটি বিশেষ পানীয়, সকালে খালি পেটে৷ তবে আগে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জেনে নেবেন, এই সব উপাদানে আপনার কোনও ক্ষতি হবে কি না৷ যদিও তার আশঙ্কা নেই বললেই চলে৷ এর পাশাপাশি হালকা ব্যায়াম করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে দিনে দিনে৷ বাড়বে জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা৷”
কী ভাবে বানাবেন
সারা রাত ভিজিয়ে রাখা ১০টি অ্যামন্ড বাদাম ও ৫টি খেঁজুরের সঙ্গে মেশান আধ চামচ কাঁচা হলুদ বাটা, এক চিমটি এলাচ গুঁড়ো, এক চা-চামচ ভাল ঘি ও এক কাপ দুধ৷ ভাল করে মিক্সিতে ফেটিয়ে এক চামচ মধু মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেয়ে নিন৷
মাস্ক, স্যানিটাইজার ইত্যাদির পাশাপাশি এমন কিছু চাই যা ভিতর থেকে সুরক্ষা দেবে৷ ফাইল চিত্র।
উপকার
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে, চেহারা উজ্জ্বল হবে, তার পাশাপাশি হবে আরও অনেক উপকার৷ যেমন—
• অ্যামন্ডে আছে প্রচুর পরিমাণে উপকারী ফ্যাট, প্রোটিন, ভিটামিন ই, ভিটামিন বি২ এবং ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, ফসফরাসের মতো উপকারী খনিজ৷ নিয়মিত খেলে কোষের ক্ষতির হার কমে যায়৷ ফলে ডায়াবেটিস-হাইপ্রেশার ও কোলেস্টেরল, হৃদরোগ, মেদবাহুল্য, মানসিক অশান্তি-উদ্বেগ-অবসাদ ইত্যাদির মতো ক্রনিক অসুখের প্রবণতা কমে৷
• খেঁজুরে আছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি৬, প্রোটিন, ফাইবার, আয়রন ও আরও নানা রকম খনিজ৷ আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যে কোষের ক্ষতির হার কমিয়ে কমায় সব ধরনের ক্রনিক অসুখের প্রবণতা৷ ব্রেন ভাল রাখে৷ ভাল থাকে হাড়ও৷
• হলুদ জীবাণুনাশক৷ প্রদাহের প্রবণতা কম রাখে৷
• এলাচও তাই৷ সঙ্গে আছে শ্বাসপ্রশ্বাসে সহায়তা করার গুণ৷
• ঘি-কে সাধারণ ভাবে আমরা ভিলেন ভেবে থাকি, কিন্তু আসলে তা নয়৷ ভিটামিন ডি এবং ই হল ফ্যাট সলিউবল ভিটামিন৷ অর্থাৎ শরীরে কিছুটা ফ্যাটের যোগান না থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর এই দুই কারিগর ঢুকতেই পারে না শরীরে৷ শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিকঠাক রাখতেও দিনে ছোট এক চামচ ঘিয়ের বিরাট অবদান আছে৷ সে জন্য চিকিৎসকরা হৃদরোগীদেরও অল্প ঘি খাওয়ার পরামর্শ দেন৷ মাত্রা রেখে খেলে ওজনও কমে৷
• মধু এনার্জি দেয়৷ সকালে যা একান্ত প্রয়োজন৷ তার উপর চিনির অপকার নেই এতে৷ উল্টে মাত্রা রেখে খেলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণের জন্য খারাপ কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ ঠিক রাখতে সাহায্য করে৷
অতএব
করোনা ঠেকাতে যেমন নিয়ম মানছেন, মানুন৷ সুষম খাবার খান৷ ও একটু বেশি উপকার পেতে হাত বাড়ান আমাদের চিরাচরিত বনৌষধির দিকে৷
আরও পড়ুন: করোনা থেকে বাঁচাতে বাচ্চাদের মাস্ক পরা ও হাত ধোওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন
আরও পড়ুন: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চান? ভরসা রাখুন এই বিশেষ ভেষজ খাবারে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy