ঘর আমাদের প্রশান্তির জায়গা। ঘরের পরিপাটি ও গোছানো আবহ এক নিমেষে মুছে দিতে পারে সারা দিনের ক্লান্তি। আর এই পারিপাট্যে অন্য আঙ্গিক নিয়ে আসে টাটকা ফুল। ঘরের মূল দরজা থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে, এমনকি বাথরুমেও সযত্ন সাজিয়ে রাখতে পারেন ফুল। সৌরভে ও সৌন্দর্যে স্নিগ্ধ থাকবে আপনার সুখী গৃহকোণ।
বাড়ির মূল দরজা তথা প্রবেশপথের পাশে মাঝারি থেকে একটু বড় মাপের মাটির ফুলদানিতে রাখতে পারেন লম্বা ডাঁটির ফুল। বিশেষ করে উজ্জ্বল রঙের ফুল এ ক্ষেত্রে খুবই আকর্ষক। এ ছাড়া, দরজার পাশে হ্যাঙ্গিং ফুলদানিতে রাখতে পারেন গোলাপ, লিলি বা গ্ল্যাডিওলাস। জারবেরাও মন্দ নয়। এমনকি রাখতে পারেন কলাবতীও। মনে রাখবেন, বাড়ির প্রবেশপথে উজ্জ্বল ফুলের সমাহার আপনার বাড়ির আনন্দোজ্জ্বল পরিবেশের দিকে ইঙ্গিত করবে।
বসার ঘরের পুষ্পসজ্জা
লিভিং রুমের এক কোণে, জানালার পাশে লম্বা ফুলদানিতে রাখতে পারেন লম্বা ডাঁটির উজ্জ্বল রঙা ফুল। ফক্সগ্লাভ, সূর্যমুখী, হলিহক জাতীয় ফুল রাখতে পারেন এই তালিকায়। তবে খেয়াল রাখবেন, বাড়ির আসবাবের সঙ্গে যেন ফুলদানি ও ফুল মানানসই হয়। হালকা, অল্প আসবাব দিয়ে সাজানো ঘরে কাঠ বা বেতের ফুলদানি দিব্যি মানাবে। খুব সৌখিন ঘরের জন্য বেছে নেবেন ক্রিস্টাল, সেরামিক বা কাচ। সোফার সামনের সেন্টার টেবলে একটি কাচের পাত্রে ভাসিয়ে দিতে পারেন গোলাপের পাঁপড়ি, গরমকালে বেল বা জুঁই ফুল। আবার ঘরের এক কোণে লম্বা উঁচু টুলে রাখতে পারেন উজ্জ্বল জারবেরা। ঘরে বেশি জায়গা থাকলে মাটিতে বড় পাত্রে জলে ফুল ভাসিয়ে রাখতে পারেন।
শোয়ার ঘরের প্রশান্তি
শোয়ার ঘরে ফুলের সাজটি বেশি জমকালো না হলেই ভাল। ঘরে ওয়ার্ড্রোব বা জানালার পাশে যদি একটু জায়গা থাকে, তা হলে তিনটি বিভিন্ন মাপের ফুলদানিতে ফুল সাজিয়ে একটি সেট বানান। প্রথমটিতে রাখুন লম্বা ডাঁটির সাদা রজনীগন্ধা, দ্বিতীয়টিতে রঙিন গোলাপ আর তৃতীয়টিতে উজ্জ্বল সবুজ ফার্ন। আপনার পছন্দ মতোও সাজাতে পারেন। দেওয়ালে হ্যাঙ্গিং ফুলদানিতে রাখুন সাদা লিলি। সঙ্গে একটা বা দুটো ফার্ন। বসন্তে রাখতে পারেন উজ্জ্বল লাল পলাশও। সে সবও যদি করতে না চান, তা হলে বেডসাইড টেবলে একটি থালায় সাজিয়ে রাখুন কেয়া বা কামিনী ফুল। কাচের বাটিতে অল্প জল দিয়ে রাখুন রজনীগন্ধা বা বেল ফুল। ঘর ভরে থাকবে সুগন্ধে। এই বিষয়েই একটা জিনিস মাথায় রাখবেন, দু’জনের শয়নকক্ষের ফুলের সাজ সঙ্গীর সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়াই ভাল। নয়তো আপনার অবস্থা হতে পারে সেই গৃহিণীর মতো, যিনি রজনীগন্ধা ভালবাসতেন বলে রোজ একটি পাত্রে ভিজিয়ে রাখতেন কয়েকটি ফুল। এ দিকে, তাঁর পরোপকারী স্বামীর শ্মশানবন্ধু হওয়ার অভিজ্ঞতা থাকায় ওই সাজ ও গন্ধ কিছুতেই হজম হত না। তাই সাধু সাবধান! ফুলদানির পাশাপাশি শোয়ার ঘরের সঙ্গে বারান্দা থাকলে রাখতে পারেন রঙিন ফুলগাছের টব।
খাবার ঘরের আঙ্গিকে
খাবার ঘরে ফুল সাজানোর কেন্দ্রবিন্দু দু’টি জায়গা। এক, খাবার টেবল, দুই খাবার ঘরের লক্ষণীয় একটা কোণ। ছোট, ঈষৎ গোলাকার ফুলদানিতে অল্প রঙিন গ্লাডিওলাস বা জারবেরা সাজিয়ে খাবার টেবিলের মাঝে রাখতে পারেন। আর ঘরের কোণে লম্বা সরু ফুলদানিতে রাখা যায় দোলনচাঁপা। হ্যাঙ্গিং ফুলদানিতে মাধবীলতা বা বুগেনভিলিয়াও যদি মাপমতো রাখা যায়, ঘর ভরে যায় সৌন্দর্যে।
রান্নাঘরের সজ্জায়
রান্নাঘরেও রাখতে পারেন ফুল। এ ক্ষেত্রে ফুলদানি হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন রান্নার পুরনো বাসন। তা হতে পারে পুরনো সুগার পট, মিল্ক পট বা ছোট কেটলি। রান্নাঘরের জানালার তাকে এই ধরনের ফুলদানিতে রাখতে পারেন গন্ধরাজ, কাঞ্চন বা পারুল ফুল। ফ্রিজ ম্যাগনেট ফুলদানিরও এখন খুব চল। ফ্রিজের গায়ে ছোট্ট লতানে গাছ সঙ্গে ফুল রাখলে কিন্তু দিব্যি দেখাবে।
স্নানঘরে রকমফের
বাথরুমে সাদা ফুল রাখলেই ভাল। সঙ্গতে মানিপ্লান্ট বা পাতা। আয়নার সামনেও রাখতে পারেন ছোট্ট ফুলের তোড়া। অল্প আয়াসে ফুল দিয়ে ঘর সাজানোর পালায় ঘরের সঙ্গে মনও সেজে উঠবে। একটু যত্ন আর অল্প ভাবনায় নিরালা গৃহকোণ ভরে উঠবে অফুরান আনন্দে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy