ক্লিনজ়ার বা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কারের পর মুখে গোলাপজল মাখেন অনেকেই। ফুলের নির্যাসে তৈরি এই জলের সুগন্ধ শুধু ক্লান্তি দূর করে না, ত্বক টান টান এবং সুন্দর রাখতেও সাহায্য করে।
শোনা যায়, আগেকার দিনে রাজপরিবারের মহিলারা গোলাপের পাপাড়ি মেশানো জলে স্নান করতেন। সেই ব্যবহার এখনও বহমান অনেক ক্ষেত্রেই। টোনার, শিট মাস্ক, সিরাম — নানা ভাবেই গোলাপজল কাজে লাগানো যায়। বাজারচলতি নানা রকম গোলাপজল পাওয়া যায় ঠিকই, জিনিসটি কতটা খাঁটি তা কিন্তু বোঝার উপায় থাকে না। আবার অনেক সময় এতে কৃত্রিম সুগন্ধি মেশানোরও অভিযোগ ওঠে। হাতের কাছে বেশ কয়েকটি গোলাপ থাকলে সেগুলির পাপড়ি দিয়ে সহজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন গোলাপজল। শিখে নিন কৌশল।
আরও পড়ুন:
প্রথমেই গোলাপের পাপড়ি খুলে সেগুলি হালকা করে ধুয়ে নিন। বৃন্ত বাদ দিয়ে দিন। এ বার কড়াইয়ে কয়েক মুঠো পাপড়ি ছড়িয়ে মাঝের অংশে স্টিলের পাত্র বসিয়ে দিন। সেটি সরাসরি কড়াইয়ে না বসিয়ে পাতলা কোনও পাত্র রেখে তার উপর বসান, যাতে কড়াই গরম হলে সেটি সরাসরি তেতে না ওঠে। এ বার বেশ খানিকটা জল দিয়ে একটি ঢাকনা চাপা দিন।
জ্বালিয়ে দিন গ্যাস অভেন। এখানেই অবশ্য কাজ শেষ হয়ে যায় না। কড়াইয়ে যে ঢাকনাটি দিয়েছেন সেটা সোজা ভাবে না রেখে উল্টে দিন, যাতে তার উপর বেশ কিছু বরফকুচি দেওয়া যায়।
গ্যাস অভেন জ্বালিয়ে দিলে গোলাপের পাপড়ির বাষ্প তৈরি হবে। সেটি কড়াইয়ের উপরে থাকা বরফ দেওয়া ঠান্ডা ঢাকার সংস্পর্শে এলে জল হয়ে বাটিতে জমা হবে। কড়াইয়ের ঢাকায় রাখা বরফ গলে গেলে আবার বরফ দিতে হবে। সেটি গরম হতে দেওয়া চলবে না। এ ভাবে অনেকটা জল ওই পাত্রে জমা হলে তা ঠান্ডা করে কাচের শিশিতে ভরে ব্যবহার করুন।
কত দিন পর্যন্ত, কী ভাবে রাখা যায়?
গরমের দিনে গোলাপজল ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখুন। শিশিতে ভরে রাখলে মোটমুটি ৬ মাস পর্যন্ত তা ব্যবহার করা যায়।
গোলাপজলের উপকারিতা
র্যাশ, ব্রণ বা প্রদাহের কারণে যে লালচে ভাব দেখা যায়, তা দূর করতে পারে গোলাপজল। স্পর্শকাতর ত্বকে রোদ লাগলেও অস্বস্তি হয় অনেকের। ঠান্ডা গোলাপজল ত্বকের জ্বালা ভাব কমাতে সাহায্য করে। ত্বক, মসৃণ সুন্দর এবং টান টান রাখতেও গোলাপজল কার্যকর।
সতর্কতা
ফুলের নির্যাস থেকে তৈরি গোলাপজল যে সকলের জন্যই উপকারী, তা নয়। কারও কারও গোলাপে অ্যালার্জি থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে ব্যবহারের আগে হাতে অল্প একটু স্প্রে করে দেখা যেতে পারে, কোনও অস্বস্তি হচ্ছে কি না।