বর্ষাকালে এক সমস্যা, গরমে আর এক। বৃষ্টির সময়ে স্যাঁতসেতে আবহাওয়ায় কৌটোর মুখ একটু আলগা হলেই তাতে রাখা রান্নার জিনিসপত্র চট করে নষ্ট হয়ে যায়। মিইয়ে যায়। আর গরমের দিনে দোসর হয় বাড়তি তাপমাত্রা।
যে সমস্ত জায়গায় গরমের মরসুমে বাতাসে আর্দ্রতাও বেশি থাকে, সেখানে দ্রুত খাবার এবং হেঁশেলের জিনিসপত্র নষ্টের ভয় থাকে বেশি। গরম এবং একই সঙ্গে আর্দ্রতার জোড়া ফলায় খাবারে ছত্রাক সংক্রমণ হতে পারে, খাবার মিইয়ে যেতে পারে, পচেও যেতে পারে। জিনিসটি কী এবং কী ভাবে সেটি রাখা হচ্ছে, তার উপর বিষয়টি নির্ভর করে।
কোনও কোনও বাড়িতে যেমন আলাদা করে ভাঁড়ার ঘর থাকে, সব বাড়িতে কিন্তু তা থাকে না। বিশেষত দুই বা তিন কামরার আধুনিক ফ্ল্যাটে হেঁশেলের জিনিসপত্র কিচেন ক্যাবিনেটের আড়ালে রেখে দেওয়া হয়। বাইরের তাপমাত্রার পাশাপাশি গ্যাস অভেন জ্বালিয়ে রান্নার ফলে রান্নাঘরের উষ্ণতা এমনিতেই বেশি থাকে।
ঘর ঠান্ডা রাখার এবং খাদ্রদ্রব্য ভাল রাখার কৌশল
১। চাল, ডাল, মশলাপাতি, বাদাম হোক বা নুডল্স— সব কিছু বায়ুনিরোধী কৌটোয় রাখুন। মুখ শক্ত করে এঁটে দিন। বাইরের হাওয়া কৌটোর আলগা মুখ দিয়ে ঢুকতে না পারলে খাবার নষ্ট হওয়ার সমস্যা কমবে।
২। হেঁশেলের তপ্ত বাতাস দ্রুত বার করার জন্য চিমনি রান্নার পরেও চালিয়ে রাখুন। রান্নাঘরের গরম হাওয়া বার করে দেওয়ার জন্য এক্সজ়স্ট ফ্যান চালু রাখুন। এতেও রান্নার সময়ে গরম ভাপ বেরিয়ে যাবে।
আরও পড়ুন:
৩। হেঁশেলের জানলা, দরজা খুলে রাখুন। অনেকেই হেঁশেলের জানলা সব সময়ে খুলতে চান না। কখনও কখনও বেড়াল ঢুকে পড়ার ভয়ে দরজা এবং জানলা বন্ধ রাখতে হয়। এতে হেঁশেলের ভিতরের বদ্ধ বাতাস গুমোট ভাব তৈরি করে। তার প্রভাবে রান্না করা খাবার দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আলো-হাওয়া খেললে পোকা-মাকড়ের উৎপাতও কমবে।
৪। অনেকেই স্যান্ডউইচ মেশিন, টোস্টার, মাইক্রোওয়েভ অভেনের পাশেই কৌটো বা শিশিতে মশলাপাতি, জ্যাম, জেলি, আচার, সিরিয়াল ইত্যাদি রেখে দেন। এই যন্ত্রগুলি চালানো হলে তা থেকেও তাপ উৎপন্ন হয়। তার প্রভাবে খাবার নষ্ট হতে পারে। ফলে চেষ্টা করা দরকার এই যন্ত্রের আশপাশে এমন কোনও খাবার না রাখার, যা গরমে নষ্ট হতে পারে।
৫। অনেক বাড়িতে রান্নার জিনিসপত্র রাখার ক্যাবিনেটের উচ্চতা প্রায় ছাদের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। ছাদে সরাসরি সূর্যালোক পড়লে ছাদ তেতে থাকে। সেই তাপ ক্যাবিনেটের উপরের অংশে রাখা খাবার দ্রুত নষ্ট করে দিতে পারে। ফলে গরমের দিনে এ রকম জায়গায় হেঁশেলের উপকরণ না রাখাই ভাল। তা ছাড়া খাবারের শিশি, কৌটো বেশি গা ঘেঁষাঘষি করে না রাখাও ভাল।