ইংরেজি ‘নিউ ইয়ার’-এর সঙ্গে বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের ফারাক অনেকটাই। আবহাওয়ার পার্থক্য থাকেই। বাংলার বর্ষবরণ হয় তপ্ত বৈশাখে। ফারাক হয় আনন্দ, উচ্ছ্বাসের ধরনেও।
মন্দিরে গিয়ে পুজো দিয়ে পরিবারের মঙ্গলকামনা, বাড়ির সকলের জন্য মিষ্টি, নতুন পোশাক কেনা, দুপুরে কব্জি জমিয়ে মাছ, মাংস খাওয়া আর সন্ধ্যায় হালখাতা করতে যাওয়া— এ ভাবেই বাংলা বর্ষবরণের দিন উদ্যাপনের ছবি দেখে সকলে অভ্যস্ত।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদল ঘটছে ভাবনাচিন্তারও। ঠিক চিরাচরিত প্রথায় সকলেই যে বর্ষবরণ করতে চাইবেন, তা কিন্তু না-ও হতে পারে। আপনি কি দ্বিতীয় দলেই পড়েন? ছুটির দিনটা অন্য ভাবে কাটাতে চান? নববর্ষ উদ্যাপনের পরিকল্পনা কী কী ভাবে করতে পারেন?
সিনেমাও দেখা যায়
বৈশাখে গরম যথেষ্ট। এই সময় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো খানিক কষ্টকরই। তাই বাড়িতে যদি ভূরিভোজের পরিকল্পনা থাকে, বিকেলটায় সপরিবার বা প্রিয় মানুষটির সঙ্গে বেরিয়ে পড়তেই পারেন পছন্দের কোনও সিনেমা দেখতে। হিন্দি, বাংলা, ইংরেজি— পছন্দের যে কোনও ছবি বেছে নিন।
গঙ্গাবক্ষ থেকে কেমন দেখায় শহর?

পড়ন্ত বেলায় গঙ্গাবক্ষে নৌকাবিহার করতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত।
শহর থেকে নদী দেখেছেন। তবে বিকেলবেলায় গঙ্গার বুকে নৌকোয় ভেসে পড়েছেন কি? পুরনো স্মৃতি ঝালিয়ে নিতে কিংবা নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে প্রিন্সেপ ঘাট থেকে ভেসে পড়তে পারেন গঙ্গার বুকে। ঠিক সন্ধ্যা নামার মুখে যখন তিলোত্তমা আলোকোজ্জ্বল হয়ে ওঠে, সে রূপও দেখার মতোই বটে।
লাইট অ্যান্ড সাউন্ড
ইচ্ছে হলে বিকেলবেলা যেতে পারেন আলিপুর জেল মিউজ়িয়াম বা ভিক্টোরিয়ায়। আলিপুর জেল মিউজ়িয়ামে সন্ধ্যায় লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো হয়। আলিপুর জেল মিউজ়িয়ামের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, মঙ্গলবার সাড়ে ৬টা থেকে তা শুরু হয়। শব্দ এবং আলো, ভাষ্যের সাহায্যে ফুটিয়ে তোলা হয় ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস। সান্ধ্য লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের আয়োজন থাকে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলেও। তাদের ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, সেটি দেখতে হলে পূর্ব গেটে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় গিয়ে টিকিট কাটতে হয়। শো শুরু হয় আরও কিছুটা পরে।
বিকেলে বেরিয়ে পড়ুন

নিউ টাউনের ওয়াকিং স্ট্রিটে এখনও না ঘোরা হলে, পয়লা বৈশাখের সন্ধ্যা সেখানে কাটাতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত।
নিউ টাউনের ওয়াকিং স্ট্রিট, সেক্টর ফাইভে কলকাতার ‘টাইম স্কোয়্যার’ ঘোরা হয়েছে? হাঁটাহাটি, ঘোরা, আড্ডা মারার সব আয়োজনই রয়েছে সেখানে। ওয়াকিং স্ট্রিটে বিদেশি ফুড-ট্রাকের মতোই ট্রাকে মিলবে রকমারি খাবার। সেক্টর ফাইভে কলকাতার ‘টাইম স্কোয়্যার’ বলে পরিচিত জায়গাটিতে সন্ধ্যা হলেই আলো জ্বলে ওঠে। রয়েছে দারুণ বসার জায়গা। তার আশপাশে অসংখ্য রেস্তরাঁ, পানশালা।
এমন পরিবেশ উপভোগ্য হতে পারে পাটুলির কাছেও। পাটুলি মোড়ে জলাশয়ের পাশের রাস্তার এক পাশে রয়েছে নানা রকম খাবারের আয়োজন। রয়েছে বসার জায়গাও। সন্ধ্যায় জমজমাট হয়ে ওঠে এই স্থান।
বেরিয়ে পড়তে পারেন গাড়ি নিয়েও
ছুটির দিনে অনেকেই চান ঘুরে আসতে। ‘লং ড্রাইভ’ পছন্দের তালিকায় থাকলে বেরিয়ে পড়তে পারেন শহর ছাড়িয়ে। দিনভর ব্যস্ততা থাকলে সন্ধ্যায় বেরিয়ে কোলাঘাটের দিকে গিয়ে পছন্দের কোনও রেস্তরাঁয় খাওয়াদাওয়া করতে পারেন। আবার ডানকুনি হয়ে দিল্লি রোড ধরে ব্যান্ডেল, আদিসপ্তগ্রামের দিক থেকেও ঘুরে আসা যায়। দিল্লি রোডের ধারে উন্মুক্ত পরিবেশে দারুণ সব ধাবা রয়েছে। সন্ধ্যায় আলো জ্বলে উঠলে দেখতে বেশ লাগে। সেখানে খাওয়াদাওয়া সারতে পারেন। চা নিয়ে খাটিয়ায় বসে আড্ডাও দিতে পারেন। আবার দিল্লি রোড থেকে চলে যেতে পারেন শহরতলির কোনও প্রান্তে। মন চাইলে ঘুরে আসতে পারেন চন্দননগর স্ট্র্যান্ডেও।
- পয়লা বৈশাখ মানেই বাঙালির বাঙালিত্বের উদ্যাপন। সাদা-লাল শাড়ির ফ্যাশন, বাঙালি খাওয়া-দাওয়া, হালখাতা— এই সবই জাগিয়ে তোলে বাঙালির স্মৃতিমেদুরতাকে।
- বছর ঘুরে আবার আসছে বাংলার নববর্ষ। ১৪৩২ আরও অনেক নতুন কিছু নিয়ে আসবে। নববর্ষকে কী ভাবে স্বাগত জানাবে বাঙালি? তারই হাল হদিস।
-
মননে সাহিত্য-শিল্পের বাঙালিয়ানা, বল্লভপুরের রূপকথা শুনবে ক্যাম্পাস শহর
-
কেউ শাড়ি, কেউ সালোয়ার, সাবেক ও সাম্প্রতিকের যুগলবন্দি নববর্ষে, কেমন সাজলেন টলিসুন্দরীরা
-
কাঁধে এক কাঁদি কলা, চুলে হলুদ-বেগনি ফুল, সমুদ্রতটে আঁচল উড়িয়ে নতুন বছরকে স্বাগত স্বস্তিকার
-
বিশেষ দিনে ভিড় করে স্মৃতিমেদুরতা, বর্তমান প্রজন্মও অতীতে চোখ রাখে, নববর্ষে মনে করালেন সোহম
-
দিনের শেষে মেকআপ তুলে ফেলাও জরুরি, ফেসওয়াশ ফুরিয়ে গেলে কী করবেন?