এক কালে মহালয়া থেকেই নহবতখানায় সানাই বেজে উঠত। তার পরে ষষ্ঠীর দিন ঢাকের আওয়াজে বোধন। দেওয়ালে পড়ত নতুন রঙের প্রলেপ। নাটমন্দিরে চালচিত্রে হত রং, মাটির প্রলেপ পড়ত প্রতিমার কাঠামোয়। তার সঙ্গে সাজো সাজো রব উঠত গোটা বাড়িতে। ঝাড়লণ্ঠন ঝেড়েমুছে পরিষ্কার, রুপোর বাসন, পাথরের থালা-গ্লাস বেরোত হেঁশেলে, ফরাস পাতা হত দালান জুড়ে। ঘরের দুয়ারে বসত মঙ্গলঘট। কার্পেট দিয়ে ঢেকে দেওয়া হত ঘোরানো সিঁড়ি। এখনও কিছু কিছু বাড়িতে রেওয়াজ মতো সাজ চলে। এই সাজের কিছু স্পর্শ রাখতে পারেন আপনার অন্দরমহলেও।
মোড়কে ভোলবদল: বালিশ, বিছানা, কুশন কভার পাল্টে নতুন মোড়কে ঢেকে দিন। টেবিলে রানার পাততে পারেন। নকশাতোলা ভাল ওড়না থাকলে, তা-ও বিছিয়ে দিতে পারেন টেবিলে।
থাকুক সবুজ: বারান্দা বা ছাদের গাছগুলিকে ঘরে রাখতে পারেন ক’টা দিন। সেরামিকের সুদৃশ্য টব বা কাপ থাকলে তার মধ্যেই গাছ রেখে দিন। খেয়াল রাখবেন, এমন কোনও গাছ ঘরে এনে তুলবেন না, যা অন্দরে রাখলে ক্ষতিকর। মানিপ্ল্যান্ট বা সাকুল্যান্ট দিয়ে ঘর সাজাতে পারেন। গাছের টবের গোড়ায় ছোট পুতুল রাখলেও ভাল দেখাবে।
ফুল বলে: নিজের বাড়ির গাছে ফুল হলে তো কথাই নেই। না হলে বাজার থেকে এই ক’টা দিন একটু ফুল কিনে আনতে পারেন। অল্প কিছু শিউলি সাজিতে ভরে ড্রেসিং টেবল বা কর্নার টেবলে রেখে দিন। গোলাপ, গ্ল্যাডিওলি, অর্কিড কিনতে পারলে আরও ভাল। ফুলদানিগুলি ভরে উঠুক ফুলে। কাচ বা পাথরের পাত্রে জল ভরে তাতেও ভাসিয়ে দিতে পারেন ফুল আর পাপড়ি। সন্ধে হলে ভাসিয়ে দিন ফ্লোটিং ক্যান্ডেল।
ঘর জুড়ে রোশনাই: পুরনো কলকাতার বনেদি বাড়িগুলির মধ্যে লড়াই চলত ঝাড়লণ্ঠনের আকার নিয়ে। বাড়িতে ছোট ঝাড় লাগিয়ে সেই বনেদিয়ানা বজায় রাখতে পারেন। এ ছাড়া ঘরোয়া আলোর পাশেই ছোট স্ট্রিং লাইট বা টুনি দিয়ে সাজিয়ে ফেলতে পারেন। রঙিন মেসন জার বা কাচের বোতল থাকলে তার মধ্যে স্ট্রিং আলো ভরে দিন। জ্বালিয়ে দেখুন কী মায়াবী হয়ে উঠবে চারপাশ। আবার দেওয়ালের ফোটোফ্রেমের চারপাশ দিয়েও স্ট্রিং লাইট ঝুলিয়ে দিতে পারেন। ছোট লণ্ঠন বা প্রদীপ থাকলে সেগুলিও ব্যবহার করতে পারেন।
দেওয়াল লিখন: বাড়িতে কাপড় সেলাইয়ের ফ্রেম থাকলে তা-ও কাজে লাগাতে পারেন। অনেকের বাড়িতেই পুরনো ওড়না বা ব্লাউজ় পিস পড়ে থাকে, যা ব্যবহারও হয় না। এমন কোনও সুন্দর প্রিন্টেড কাপড় ওই ফ্রেমে আটকে কাঁচি দিয়ে গোল করে অতিরিক্ত কাপড় কেটে নিন। এ বার এই ফ্রেম টাঙিয়ে দিন দেওয়ালে। কিছু রঙিন কাচের শার্সি দিয়েও সাজিয়ে ফেলতে পারেন একটা দেওয়াল।
মোটিফ: মা দুর্গার মুখ বা ডাকের সাজ বা চালচিত্র, পটচিত্র দিয়ে ঘর সাজালেও বেশ ভাল দেখাবে। দেওয়ালে বা দরজায় এমন মোটিফও কিন্তু পুজোর আবহ তৈরি করবে।
পুজোর গন্ধ: অল্প গুগ্গুল দিয়ে ধুনোর গন্ধে পুজো ধরা দেবে সহজেই। বিকল্প হিসেবে ডিফিউজ়ারে কর্পূর রাখতে পারেন। ঘর ভরে উঠবে সুগন্ধে।
একটু সময় দিয়ে দেখুন, বাড়িটা কেমন পুজোর সাজে সেজে উঠবে। সুসজ্জিত বাড়িতে পুজোর আড্ডাও হবে জমাটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy