অনেক দিন ধরে জিমে ভর্তি হওয়ার প্ল্যান অবশেষে বাস্তবায়িত হল। প্রায় বছর চারেক পরে জিমে গেল মধুশ্রী। কিন্তু প্রথম দিন জিম থেকে ফেরার পর থেকেই থাই ও কাফ মাস্লে অসম্ভব ব্যথা। অন্য দিকে অদ্রিজ প্রায় বছর দুয়েক পরে দৌড়নো শুরু করতেই পা থেকে কোমরে ব্যথা শুরু। ব্যথা না কমায় এক দিনেই সব উৎসাহে জল। কিন্তু এ রকম ব্যথা হয় কেন? কারণ ডিওএমএস বা ডমস (DOMS)।
ডমস কী?
হঠাৎ ব্যায়াম বা দৌড় শুরু করলে বা মাস্ল ট্রেনিং করলে এই ধরনের ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক। একে বলে ডিওএমএস বা ডমস, যাকে ভেঙে বলা যায় ডিলেড অনসেট মাসল সোরনেস। হঠাৎ ব্যায়াম করলে উরুর সামনে ও পিছনের পেশিতে এবং কাফ মাসলে মাইক্রো ট্রমা হয়। আসলে সেই জায়গার পেশি ধকল নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে না। তার থেকেই এই ব্যথার উৎপত্তি। হঠাৎ খুব বেশি শারীরচর্চা শুরু করলে বা দৌড়লে এই ধরনের ব্যথা হতেই পারে। তবে এই ব্যথা এড়ানোর উপায়ও আছে।
কী ভাবে এড়ানো যায়?
•ফিটনেস এক্সপার্ট চিন্ময় রায় বলছেন, ‘‘হঠাৎ খুব ভারী ব্যায়াম শুরু করবেন না। জিম হোক বা ভারী ব্যায়াম... শুরু করার আগে শরীরের পেশিকে সেই ধকল সওয়ানোর জন্য প্রস্তুত করতে হয়। ধরুন, আপনি স্কোয়াট করতে চান। প্রথম দিনেই দশ বার করে তিন সেট স্কোয়াট করতে গেলে কিন্তু এই ধরনের ব্যথা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রথম এক সপ্তাহ এক সেট স্কোয়াট করুন। পরের দু’সপ্তাহ দু’সেট করে দশ বার। চতুর্থ সপ্তাহ থেকে বরং তিন সেট করে দশ বার স্কোয়াট করতে পারেন। একই কথা প্রযোজ্য প্লাঞ্জ, পুশআপ ইত্যাদির ক্ষেত্রেও।’’
•হঠাৎ একদিন অনেক দৌড়ঝাঁপ করলে বা খেলা শুরু করলেও এই ধরনের ব্যথা হতে পারে। ধরুন, তিন বছর পরে হঠাৎ ক্রিকেট খেলতে শুরু করলেন। প্রথম দিনই খুব বেশি বোলিং করবেন না। বরং উইকেট কিপিং চলতে পারে। প্রথম দিন দশটা বল করুন। এক সপ্তাহ পরে পনেরোটা... এ ভাবে খেলার গতিও বাড়াতে হবে।
•জগিং বা দৌড়নোর সময়ে ঠিক জুতো না পরলেও কিন্তু এই ডিওএমএস-এর শিকার হতে পারেন। ধরুন, ফ্ল্যাট জুতো পরে আপনি কংক্রিটের উপরে দৌড়চ্ছেন। সে ক্ষেত্রে এই ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সেখানে যদি ঘাসের উপরে দৌড়ন, ব্যথা কম হবে। কিন্তু স্পোর্টস শু বা রানিং শু পরে যদি ঘাসের উপরে দৌড়নো যায়, তা হলে এই ব্যথা সম্পূর্ণ এড়ানো যায়।
ব্যথা কমাবেন কী ভাবে
ব্যথা হলে ব্যায়াম বন্ধ করে দেবেন না। বরং যেখানে ব্যথা হচ্ছে, সেই জায়গায় ব্যথা কমানোর চেষ্টা করতে পারেন।
স্ট্রেচিং: চিন্ময় রায়ের কথায়, ‘‘স্ট্রেচ করলে পেশিতেও টান পড়ে। ফলে ব্যথা কমতে থাকে। নিজে না করে অন্য কেউ যদি পা বা হাত ধরে স্ট্রেচ করে, সে ক্ষেত্রে ফল পাবেন বেশি।’’
ফোম রোলার: বাজারে কিনতে পেয়ে যাবেন। এর উপর দিয়ে পায়ের পেশি বা হাত রোল করলে সেই জায়গায় আরাম পাবেন।
ওয়র্ম বাথ: ব্যায়াম বা দৌড়নোর পরে ওয়র্ম বাথ নিলে উপকার পাবেন। শারীরচর্চার পরে বাড়ি ফিরে ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করে নিতে পারেন।
এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে, মাসাজ, ফোম রোলার বা ওয়র্ম বাথে রক্ত সঞ্চালন দ্রুত হয়। ফলে ব্যথা কমতে থাকে। অনেকে এই ব্যথা কমাতে আইস কমপ্রেসকেও কাজে লাগান।
অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিয়েই শারীরচর্চা শুরু করুন। নিজে থেকে অ্যাপ বা ইন্টারনেট দেখে কোনও ওয়র্কআউট শুরু করতে যাবেন না। এতে কিন্তু হিতে বিপরীত হতে পারে। ওজন কমাতে চাইলে তার জন্য জরুরি ঠিক মতো পরিকল্পনা। না হলে পেশির এই চোট থেকে পরবর্তী কালে অন্য সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
মডেল: ঐশ্বর্য সেন
ছবি: জয়দীপ মণ্ডল
মেকআপ: সৌমেন সেনগুপ্ত পোশাক: ওয়েস্টসাইড, ক্যামাক স্ট্রিট
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy