সোনা —ফাইল চিত্র
এক জন ভারতীয় নাগরিক নিজের কাছে কতটা সোনা রাখতে পারেন? এই প্রশ্নের সহজ উত্তর নেই। কারণ, সেই নাগরিক পুরুষ না মহিলা, বিবাহিত না অবিবাহিত তার উপরে নির্ভর করছে উত্তর। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী অবিবাহিত মেয়েদের কাছে ২৫০ গ্রাম এবং বিবাহিতদের কাছে ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত সোনা থাকায় ছাড় রয়েছে। কিন্তু পুরুষের ক্ষেত্রে বিয়ে করা বা না করায় কোনও ফারাক নেই। সব ক্ষেত্রেই সীমা ১০০ গ্রাম।
এখন ভারতে অবশ্য কোনও নাগরিক কতটা সোনা নিজের কাছে রাখতে পারবেন তার কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই। তবে যতটাই সোনা থাকুক না কেন, তা কোথা থেকে এসেছে তার হিসাব থাকা চাই। কেউ সোনা কিনে বিনিয়োগ করলে সেই অর্থের উৎসও প্রয়োজনে জানানোটা নিয়ম।
তবে, ভারতে একটা সময়ে সোনা সংক্রান্ত আইন ছিল। সোনা নিয়ন্ত্রণ আইন চালু হয় ১৯৬৮ সালে। সেই আইন অকার্যকর হয়ে যায় ১৯৯০ সালে। ১৯৬২ সালে চিনের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা তৈরি হওয়ার সময়েই সোনায় নিয়ন্ত্রণের ভাবনা আসে ভারত সরকারের। সেই সময় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ছিলেন মোরারজি দেশাই। তৈরি হয় স্বর্ণ নিয়ন্ত্রণ আইন (১৯৬২)। নিষিদ্ধ হয় সব ব্যাঙ্কের স্বর্ণ ঋণ প্রকল্প। ১৪ ক্যারাটের বেশি শুদ্ধ সোনার গয়না তৈরিতেও নিয়ন্ত্রণ আসে। কোন নাগরিকের কাছে কত পরিমাণে সোনা আছে তার হিসাব পেতে কেন্দ্রীয় সরকার সেই সময়ে একটি স্বর্ণ ঋণপত্র (গোল্ড বন্ড) বাজারে আনে।
সোনার মজুতদারি বন্ধের সব রকম চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পরে ১৯৬৮ সালের ২৪ অগস্ট চালু হয় স্বর্ণ নিয়ন্ত্রণ আইন। তাতে নিয়ম হয়, কোনও নাগরিক সোনার বার বা কয়েন জমিয়ে রাখতে পারবেন না। সব গলিয়ে গয়না বানাতে হবে। তা-ও আবার সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম। লাইসেন্স রয়েছে এমন ডিলারদের ক্ষেত্রেও সর্বোচ্চ সীমা ছিল দু’কিলোগ্রাম। কিন্তু আইন করাতে উল্টো কাজই হয়েছিল। দেশে বিধি মানা সোনার বাজার বন্ধ হয়ে গিয়ে বেশিটাই হয়ে যায় অবৈধ কেনাবেচা। বাড়তে থাকে সোনা পাচার। ১৯৯০ সালে প্রধানমন্ত্রী ভিপি সিংহের আমলে এই আইন বাতিল করা হয়।
এখন সোনা জমানোর সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করা কোনও আইন না থাকলেও আয়কর বিভাগ একটি নিয়ম মেনে চলে। সর্ব শেষ ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সেই নিয়ম চালু করে আয়কর দফতর (সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডায়রেক্ট ট্যাক্সেস)। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোনও বাড়িতে আয়কর দফতর তল্লাশি চালালে বিবাহিত মহিলাদের কাছে থাকা ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত সোনা নিয়ে কোনও আপত্তি তুলবে না। অবিবাহিত মেয়েদের ক্ষেত্রে সেটা ২৫০ গ্রাম এবং সব পুরুষের ক্ষেত্রেই ১০০ গ্রাম। এর উপরেও যদি কারও কাছে সোনা থাকে তবে কি আয়কর দফতর বাজেয়াপ্ত করতে পারবে? এমন প্রশ্নের উত্তরও দেওয়া হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে। তাতে বলা হয়, কোনও মহিলা বা পুরুষের কাছে সর্বোচ্চ সীমার বেশি সোনা থাকলে তিনি যদি কী ভাবে তা পেয়েছেন তার নথি দিতে পারেন বা যে টাকায় অতিরিক্ত সোনা কেনা হয়েছে তার উৎস জানান তবে তা বৈধ হিসেবেই ধরা হবে। অনেক সময়েই সোনা উত্তরাধিকার সূত্রে বা উপহার হিসেবে পাওয়া যায়। অতিরিক্ত সোনা থাকলে উত্তরাধিকারের দলিল বা ইচ্ছাপত্র দেখতে চাইতে পারে আয়কর দফতর। উপহার বাবদ পাওয়া সোনার নথিও দেখতে চাওয়া যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy