চোখের সামনে প্রায়ই ঘটে। তাতে কখনও সখনও যে অসুবিধা তৈরি হয় না, তা-ও নয়। অথচ কেন ঘটে, তা নিয়ে ভাবা হয় না। ফলে অসুবিধা থেকে যায় সেই তিমিরেই।
সন্ধ্যায় বাড়ির খোলা বারান্দায় ঝোলানো আলোর চারপাশে কেন রাজ্যের পোকা এসে ভিড় করে, কেনই বা সকালে বারান্দা জুড়ে পড়ে থাকে পোকাদের স্তূপ, তার কারণ খোঁজা হয় না। যদিও ঘর নোংরা হচ্ছে বলে বিরক্তি প্রকাশ করা হয়। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয় না।
ইলেকট্রিকাল এবং ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার শৈলেন্দ্র কুমার সিংহ মনে করেন পোকাদের আলোর চারপাশে ঘোরার নেপথ্যে রয়েছে বিজ্ঞান সম্মত কারণ। সেই কারণ কী? এক সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শৈলেন্দ্র জানাচ্ছেন, পোকাদের আলোর দিকে ছুটে যাওয়ার কারণ হল তারা রাতে যেকোনও আলোকেই চাঁদ বা নক্ষত্রের আলো বলে ভুল করে!

ছবি: সংগৃহীত।
আসলে পোকারা রাতে ওড়ার সময় তাদের দিক নির্ণয়ের জন্য চাঁদ বা তারার আলোর উপরে নির্ভর করে। কারণ চাঁদের আলো স্থির। তার উপর ভরসা করেই সরলরেখায় উড়তে পারে পোকারা। স্ট্রিটল্যাম্প বা বাড়ির বাইরে লাগানো জোরালো আলো তাদের পথ ভুলিয়ে দেয়। তখন সেই আলোর চারপাশেই ঘুরতে থাকে তারা। আরও একটি তত্ত্ব বলছে, কিছু কিছু পোকা আবার রাতেই কর্মোদ্যমী হয়। রাতের আলোয় তারা খাবার খুঁজতে বেরোয়। কৃত্রিম আলো তাদেরও বিভ্রান্ত করে।
পোকারা কি সব ধরনের আলোতেই একই রকম আকর্ষিত হয়?
না, সব আলো পোকাদের একইরকম আকর্ষণ করে না। শৈলেন্দ্রের মতে, কোন আলোর কেমন রং, তা থেকে কতটা অতিবেগনি রশ্মি নির্গত হচ্ছে, তার উপরও নির্ভর করে পোকারা সেই আলোর দিকে ছুটবে কি না। সাধারণ মানুষের চোখে সেই অতিবেগনি রশ্মি ধরা না পড়লেও মথ, মশা, পোকামাকড় সেই আলো দেখতে পায়।
পোকাদের দূরে রাখতে কী ধরনের আলো ব্যবহার করবেন?
সাধারণত ফ্লুরোসেন্ট আলোয় অতি বেগনি আলো থাকে বেশি। তুলনায় উষ্ণ রঙের এলইডি আলোয় তা থাকে কম। তাই বাড়ি থেকে পোকা দূরে রাখতে হলে উষ্ণ রঙের অর্থাৎ লালচে হলুদ বা অনুজ্জ্বল হলুদ রঙের আলো ব্যবহার করতে পারেন বলে জানাচ্ছেন শৈলেন্দ্র।