প্লাস্টিকের বোতল বা পাত্রের নীচের লেখাটা পড়েন তো ! ছবি: ফ্রিপিক।
প্লাস্টিকের ব্যবহার যতই নিষিদ্ধ করা হোক না কেন, রোজের কাজে সেই প্লাস্টিকই আমাদের হাতে উঠে আসে বিভিন্ন ভাবে। এই দেখুন না, অফিসের টিফিন নেবেন বা সন্তানকে স্কুলে যাওয়ার আগে খাবার দেবেন, সেটিও প্লাস্টিকের বাক্স। যে বোতলে জল খাচ্ছেন, সেটিও প্লাস্টিকের। কাচের বোতল আমরা কমই ব্যবহার করি। ফ্রিজে সব্জি বা আগের দিনের খাবার রাখতেও সেই প্লাস্টিকের পাত্রই হয়তো ব্যবহার করছেন। মাইক্রোওয়েভ প্রুফ বাক্স হলে তো কথাই নেই। ফ্রিজ থেকে বার করেই সটান গরম করতে বসিয়ে দেবেন। প্লাস্টিক আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এত ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, যে আমরা দেখছিই না, প্লাস্টিকের কোন বোতল বা কোন পাত্র ঠিক কত দিন ব্যবহারের যোগ্য। আদৌ সব পাত্রে খাবার রাখা সুরক্ষিত কিনা!
খেয়াল করে দেখবেন, প্রতিটি প্লাস্টিকের বোতল বা পাত্রের নীচে ত্রিভুজাকৃতি ছাঁচের মধ্যে কিছু নম্বর লেখা থাকে। সেই নম্বরের নীচে প্লাস্টিকটি কী উপাদানে তৈরি তার নামও লেখা থাকে।
বোতল বা পাত্র উল্টে এটি আমরা কোনও দিনই খেয়াল করি না। অথচ এটিই হল সেই প্রমাণ, যা বলে দেয় পাত্র বা বোতলটি ঠিক কত দিন ব্যবহার করা যাবে। তা হলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, এমন পাত্রের ব্যবহারের নিয়ম।
১. বাড়িতে যে প্লাস্টিকের বোতল বা পাত্র আছে, যা ব্যবহার করছেন সেটি উল্টে নীচে দেখুন, ত্রিভুজের মধ্যে কী লেখা আছে। যদি ‘১’ লেখা থাকে আর তার নীচে লেখা থাকে ‘পিইটি’, তা হলে বুঝবেন সেটি পলিইথিলিন টেরেপথ্যালেট প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি। অর্থাৎ, এই প্লাস্টিকের পাত্রগুলি মাত্র একবারই ব্যবহারযোগ্য। একবারের বেশি ব্যবহার করা ক্ষতিকর।
২. পাত্রের নীচে ত্রিভুজের মধ্যে ‘২’ লেখা থাকলে তার অর্থ হল পাত্রটি ঘন, অস্বচ্ছ প্লাস্টিক বা এইচডিপিই (হাই ডেনসিটি পলিইথাইলিন) জাতীয় পলিথিন দিয়ে তৈরি। কাপড় কাচার সাবান, বাথরুম ক্লিনারের বোতল এই জাতীয় প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হয়। ভুলেও এমন প্লাস্টিকের তৈরি বোতলে জল রাখবেন না বা এমন প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি পাত্রে খাবার রাখবেন না।
৩. পাত্রটি উল্টে দেখুন যদি ত্রিভুজের মধ্যে লেখা থাকে ‘৩’ ও ‘পিভিসি’ তা হলে জানবেন, সেটি পলিভিনাইল ক্লোরাইড দিয়ে তৈরি। খাবারের শক্ত মোড়ক বা রান্নার তেলের পাত্র এই জাতীয় পলিথিন দিয়ে তৈরি করা হয়। আবার জলের পাইপেও এই ধরনের প্লাস্টিকের ব্যবহৃত হয়। এই প্লাস্টিক পোড়ে না। বেশি দিন ব্যবহার করলে এর থেকে ক্ষতিকর ডাই অক্সিন বার হয় যা শরীরে জন্য ক্ষতিকর। এক বারের বেশি এগুলি ব্যবহার করা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়।
৪. পাত্রের নীচে যদি ‘৪’ লেখা থাকে তা হলে এই ধরনের পাত্র এলডিপিই (লো-ডেনসিটি পলিইথাইলিন) জাতীয় প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি। জলের বোতল, প্রক্রিয়াজাত খাবার, শপিং ব্যাগ এই ধরনের প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হয়। এই ধরনের পাত্রে একাধিক বার পানীয় জল বা খাবার রাখা যেতে পারে। তবে সপ্তাহখানেকের বেশি ব্যবহার করা ঠিক নয়।
৫. বোতল বা পাত্রের নীচে ত্রিভুজের মধ্যে ‘৫’ লেখা থাকার অর্থ হল, এগুলি পলিপ্রপাইলিন (পিপি) দিয়ে তৈরি। এই ধরনের পাত্র ব্যবহার করা নিরাপদ। সসের বোতল, জলের বোতল বা সিরাপের বোতল এই জাতীয় পলিথিন দিয়ে তৈরি। গরম খাবার রাখার জন্যও এই ধরনের পাত্র ব্যবহার করা হয়।
৬. ত্রিভুজের মধ্যে ‘৬’ লেখা থাকলে বুঝবেন, এই ধরনের পাত্র পলিস্টাইরিন (পিএস) দিয়ে তৈরি। এই জাতীয় প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি পাত্রে খাবার গরম করা মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। কারণ, এই জাতীয় প্লাস্টিক থেকে স্টাইরিন অক্সাইড বেরয়, যা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই এই ধরনের বোতল বা পাত্র বেশি ব্যবহার না করাই ভাল।
৭. বোতল বা পাত্রে ‘৭’ লেখা থাকলে তার অর্থ হল, এই ধরনের পাত্র ব্যবহার করা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিকের সংমিশ্রণে এগুলি তৈরি। তিন বা পাঁচ লিটারের বড় জলের পাত্রগুলি এই ধরনের প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হয়। সানগ্লাসেও এমন প্লাস্টিক ব্যবহার হয় অনেক সময়ে। এগুলি পুনর্ব্যবহারযোগ্য নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy