মালপোয়া।
দোলের দিনে কেন মালপোয়া খাওয়া হয়, তা নিয়ে নানা গল্প আছে। উত্তর ভারতে বলে শ্রীচৈতন্য বৃন্দাবনে গিয়ে প্রথম মালপোয়া খেয়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন। তার পরে বঙ্গে ফিরে এসে সকলকে দোলের দিন মালপোয়া দিয়েই মিষ্টিমুখ করতে বলতেন। কেউ আবার বলেন দোলপূর্ণিমার দিন এই মিষ্টি বানানো বাঙালি বাড়ির বহুকালের রীতি। এ প্রান্ত থেকেই মালপোয়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়েছে। সে যে যা-ই বলুন, এ বিতর্কে ইতি টানতে পারেননি কেউ। তুমি না আমি করতে করতে কেটেছে অনেক যুগ। যা রয়ে গিয়েছে, তা হল দোলের দিন বাঙালি বাড়িতে এই মিষ্টি খাওয়ার চল। তা পূর্ণিমার পুজো হোক বা না-ই হোক।
এত ক্ষণেও যদি না ভাজা হয়ে গিয়ে থাকে খান কয়েক মালপোয়া, তবে এখন কোমর বেঁধে নেমে পড়া যায়। খুব বেশি ক্ষণের তো ব্যাপার নয়। দোলের সান্ধ্য আড্ডায় ভালই জমবে নিজের হাতে ভাজা এই মিষ্টি। বাঙালি গিন্নিদের পছন্দ যেমন, মালপোয়া বানানোর সেই সাবেক প্রণালী দেওয়া রইল হেশেঁলে সঙ্গ দিতে।
মালপোয়া ভেজে রসে দেওয়াই রীতি। ফলে রসটা আগে তৈরি করে নিলে ভাল। এক কাপ ফুটন্ত জলে দু’কাপ চিনি। বেশ কিছুক্ষণ উনুনে রাখলেই তা মিশে যাবে। এর পরে চাই সামান্য এলাচ। গুঁড়ো করে দিলে আরও ভাল। চিনি আর জল ভাল ভাবে মিশে গেলেই এলাচ গুঁড়ো ছড়িয়ে দিতে হবে উপর দিয়ে।
অন্য দিকে, এক কাপ ময়দা, দেড় কাপ দুধ, কয়েক চামচ চিনি আর কয়েক দানা মৌরি আলাদা ভাবে গুছিয়ে রাখতে হবে। তা দিয়েই তৈরি হবে মালপোয়ার গোলা। একটি বড় পাত্রে ভাল ভাবে মিশিয়ে নিতে হবে ময়দা আর চিনি। এর পরে সেই পাত্রে ধীরে ধীরে দুধ ঢালতে হবে। আর এক হাতে মেশাতে থাকতে হবে সবটা। যাতে সমান ভাবে দুধ আর ময়দা মেশে। খেয়াল রাখা জরুরি, দুধ যেন বেশি ঠান্ডা বা অতিরিক্ত গরম না হয়। মালপোয়ার জন্য তৈরি দুধ-ময়দার গোলা হয় থকথকে। টলটলে নয়। ফলে মাপ বোঝা জরুরি। মিশ্রণটি থকথকে আকার নিলে উপর দিয়ে মৌরি ছড়িয়ে আবারও ঘেঁটে নিতে হবে সবটা।
এর পরে মালপোয়া ভাজার পালা। একটি কড়াইয়ে সাদা তেল ঢেলে নিতে হবে। তেল গনগনে গরম হয়ে গেলে দুধ-ময়দার মিশ্রণটা দু’ফোঁটা ফেলে দেখে নিতে হবে। যদি দেখা যায়, দেওয়া মাত্র ফুরফুরে ভাবে ফুলে উঠছে ময়দা, তবে তেল তৈরি। এ বার ছড়ানো হাতা দিয়ে মিশ্রণটি ছাড়তে হবে তেলে। আকার যাতে হয় গোল, সে খেয়াল রেখে যত্ন নিতে হবে ভাজার সময়ে। হাল্কা বাদামি রং এলে উল্টে নিয়ে মালপোয়ার অন্য পিঠটাও ভাজতে হবে। তেল খুব গরম থাকবে, ভাজতে সময় লাগে না তাই বেশি। শুধু নজর দিতে হবে যাতে, অতিরিক্ত ভাজা না হয়ে যায়। একসঙ্গে ১০-১২টি মালপোয়া ভাজা হয়ে গেলেই রসে ডুবিয়ে রাখা যায়। তাতে নরম হতেও সময় নেবে না এই মিষ্টি।
প্রস্তুতি এবং ভাজার সময় মিলিয়ে ঘণ্টা খানেকের বেশি কোনও ভাবেই লাগার কথা নয়। ফলে সন্ধ্যায় অতিথিরা আসার আগেই করে ফেলা যায় দোলের বিশেষ মিষ্টিমুখের ব্যবস্থা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy