অনলাইন ডেটিং অ্যাপ ব্যবহারের সময় কী কী সাবধানতা নেবেন? প্রতীকী ছবি।
কর্মব্যস্ত জীবনে জীবনসঙ্গী বাছাইয়ের বিষয়ে অ্যাপ ও অনলাইনে ভরসা করছেন অনেকেই। অনলাইনে বিভিন্ন ডেটিং অ্যাপগুলির জনপ্রিয়তা এখন বিপুল। ডেটিং অ্যাপে গিয়ে পরিচয়, তার পর দেখাসাক্ষাৎ। কিন্তু, ধীরে ধীরে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে গিয়ে পরবর্তী সময়ে প্রতারণার শিকারও হতে হয়েছে অনেককে। শুধু জীবনসঙ্গীই নয়, একাকিত্ব ঘোচাতে বন্ধু খুঁজে পেতেও অনেকেই দ্বারস্থ হন এমন অ্যাপগুলির। তার মধ্যে সকলেই যে প্রতারিত হন, তা নয়। তবে সতর্ক না থাকলে ও কিছু নিয়ম মেনে না চললে, পদে পদে বিপদে পড়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়।
এই বিষয়ে সাইবার আইন বিশেষজ্ঞ রাজর্ষি রায়চৌধুরী বলেছেন, “অনলাইন ডেটিং অ্যাপে এখন বিপদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। সাঙ্ঘাতিক সব অপরাধের ঘটনা ঘটছে। বিন্দুমাত্র অসতর্কতায় আইনি জটিলতাতেও ফেঁসে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।”
অনলাইন ডেটিং অ্যাপে কী কী বিপদ হতে পারে?
১) প্রথমত ‘ক্যাটফিশিং’। রাজর্ষির কথায়, সাইবার অপরাধীরা ভুয়ো প্রোফাইল তৈরি করে নিজেদের ভুয়ো ছবি ও পরিচয় লিখে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে। তার পর আলাপ জমিয়ে বিশ্বাস জিতে মানসিক ভাবে হেনস্থা তো করেই, পাশাপাশি, আর্থিক প্রতারণাও করে।
২) সাইবার আইনের ভাষায় ‘রোম্যান্স স্ক্যাম’। প্রেমের জালে জড়িয়ে ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিয়ো তুলে তা দিয়ে ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা হয়। একই সঙ্গে বিভিন্ন কৌশলে প্রতারণার চেষ্টা করা হয়। যেমন, সঙ্গী হয়ত বলবেন, তাঁর বাড়িতে কেউ গুরুতর অসুস্থ, আপনি যদি কিছু টাকা দেন। অথবা একসঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করে আপনার থেকেই সব খরচ চেয়ে নেবেন।
৩) ডেটিং অ্যাপকে কাজে লাগিয়ে ভুয়ো লিঙ্ক পাঠিয়ে আপনার ডিভাইসে ম্যালওয়্যার ইনস্টল করে দিতে পারে অপরাধী। আপনাকে হয়তো ভালবাসার বিভিন্ন মেসেজ বা ছবি পাঠিয়ে তাতে ক্লিক করতে বলা হবে। আপনি ক্লিক করা মাত্রই আপনার ডিভাইসে এমন ‘স্পাইওয়্যার’ ইনস্টল হয়ে যাবে, যা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, ই-ব্যাঙ্কিং বা আপনার ডিভাইসে থাকা বিভিন্ন অ্যাপের তথ্য চুরি করে নেবে। এটিও এক রকমের ‘ফিশিং’।
৪) আপনার পরিচয়ও চুরি হয়ে যেতে পারে। কী ভাবে? রাজর্ষির কথায়, “আপনার প্রোফাইল থেকে তথ্য নিয়ে সেটা সম্ভব। সেই সঙ্গে আপনি যদি ব্যক্তিগত কথা উজার করে বলে দেন, তা হলে অপরাধী সেই সব তথ্য নিয়ে আলাদা ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি করে ফেলতে পারে। আপনার নাম ও পরিচয় ব্যবহার করে সেই অ্যাকাউন্ট থেকে অপরাধমূলক নানা কাজ করবে।”
৫) ডেটিং অ্যাপে আপনার সঙ্গে আলাপ জমিয়ে সম্পর্ক ধীরে ধীরে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তার পর আপনাকে উপহার দেওয়ার লোভ দেখিয়ে গিফট কার্ড দেবে। সেই কার্ডের কোড যদি এক বার স্ক্যান করেন, তা হলেই বিপদে পড়তে পারেন।
৬) আপনি যদি বিশ্বাস করে এক বার ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যাঙ্কের খুঁটিনাটি, ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের যাবতীয় তথ্য দিয়ে ফেলেন, তা হলে আপনার অ্যাকাউন্ট ফাঁকা হতে দেরি হবে না। পাশাপাশি, আপনার সমস্ত গোপন তথ্য চালান হয়ে যাবে 'ডার্ক ওয়েব'-এ। হ্যাকাররা তাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করবে।
৭) আরও বড় অপরাধের ছকও থাকতে পারে। রাজর্ষির মতে, এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে, যেখানে অনলাইন ডেটিং অ্যাপে প্রেমের জাল বিছিয়ে কোনও নির্দিষ্ট এলাকা বা ব্যক্তির গোপন তথ্য সংগ্রহ করেছে অপরাধী। সে ক্ষেত্রে খুব বড় ষড়যন্ত্রের চক্র থাকে। এক বার সেখানে ফেঁসে গেলে বড় বিপদ হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy