শুভ মুহূর্তের সঙ্গী। মনখারাপের সঙ্গী। মন ভাল করার সঙ্গী। কিন্তু কারও কারও কাছে মিষ্টি মানেই ক্ষতিকারক। জানেন কি, এমন কিছু মিষ্টি রয়েছে, যা খেলে ক্ষতির বদলে স্বাস্থ্য ভাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে? তাই মিঠে খাবার মানেই তাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর প্রয়োজন নেই। কেবল জেনে নিতে হবে, আপনার কাছে সহজলভ্য এমন কোন কোন মিষ্টি খেলে কার্যত উপকার পাবেন?
স্বাস্থ্যের প্রশ্ন উঠলে, চিনির খুব বেশি সুনাম নেই। প্রাকৃতিক ভাবে কিন্তু চিনি সমস্ত খাবারেই উপস্থিত থাকে। কার্বোহাইড্রেট থাকে এমন খাদ্য, ফল, সব্জি, শস্য, এবং দুগ্ধজাত পণ্য অগুন্তি। প্রাকৃতিক চিনিযুক্ত খাবার খেলে বরং শরীরে শক্তিবৃদ্ধি হয়। কিন্তু মুশকিল হয় তখনই, যখন খাবার প্রস্তুতকারকেরা তার উপরে অতিরিক্ত চিনি যোগ করেন। কারও উদ্দেশ্য স্বাদ বৃদ্ধি, কারও বা মেয়াদ বৃদ্ধি।
এ বার যদি ভারতীয় মিষ্টির কথা বলা হয়, তার ১০০ গ্রামের মধ্যে প্রায় ৪৭০-৫০০ গ্রাম ক্যালোরি থাকে। কিন্তু সব ধরনের মিষ্টিই ক্ষতিকারক নয়। স্বাস্থ্যকর উপাদানে বানানো মিষ্টিতে ক্যালোরির পরিমাণ এর প্রায় অর্ধেক হয়ে যায়। সেগুলির মধ্যে বাঙালির পছন্দের একাধিক মিষ্টিও রয়েছে।
কম ক্যালোরি-যুক্ত ১০টি মিষ্টির সন্ধান
মিষ্টি দই- প্রতি ১০০ গ্রামের মিষ্টি দইতে ৭.৭ গ্রাম প্রোটিন থাকে। এ ছাড়াও এটি প্রোবায়োটিকে সমৃদ্ধ। চিনির বদলে গুড় দিয়ে বানালে মিষ্টি দই স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবেও দেখা যায়।
মুগডালের হালুয়া- এই মিষ্টি পদে মুগডাল, ঘি, দুধ দিয়ে বানানো হয় এই হালুয়া। চিনির বদলে গুড় এবং ঘিয়ের পরিমাণ কম রাখলে এই মিষ্টি আদপেই ক্ষতিকারক নয়। মুগডালে পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম থাকায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।

স্বাস্থ্যের প্রশ্ন উঠলে, চিনির খুব বেশি সুনাম নেই। ছবি: সংগৃহীত।
বেসনের লাড্ডু- শরীরে শক্তিবৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই লাড্ডুর অবদান রয়েছে। প্রচুর পরিমাণে ঘি না দিয়ে বেসনের লাড্ডু বানিয়ে নিতে পারেন বাড়িতেই। প্রোটিন ছাড়াও ফলিক অ্যাসিডের উপস্থিতির কারণে এই পদটির একাধিক উপকারিতা রয়েছে।
খেজুরের বরফি- খেজুর, আমন্ড, আখরোট দিয়ে বানানো বরফি। রেসিপিতে থাকবে না চিনি। অতিরিক্ত ঘি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তবেই এই ধরনের বরফি স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় জায়গা পাবে।
রসগোল্লা- ছানা দিয়ে তৈরি রসগোল্লার আদপেই শরীরের জন্য উপকারী। ছানায় প্রচুর পুষ্টিগুণ রয়েছে। ক্যালশিয়াম, ভিটামিন ডি এবং প্রোটিনের উৎস হতে পারে রসগোল্লা। তবে চিনির জল অথবা রস চিপে নিয়ে খেলে আরও ভাল ফল পাওয়া যাবে।

চিনি ছাড়া বানানো রসগোল্লা বা মালপোয়ায় পুষ্টিগুণ রয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
মালপোয়া- সুজি, ময়দা, চিনি, দুধ দিয়ে বানানো হয় মালপোয়া। কিন্তু চিনির বদলে গুড় দিয়ে বানালে তা খাওয়ার আগে অত বেশি চিন্তা করতে হবে না। এতে ক্যালোরির পরিমাণ কমে যায়।
ফিরনি- দুধ এবং চালের গুঁড়ো দিয়ে বানানো হয় ফিরনি। পরিবেশনের সময় জাফরান, কাজু এবং কিশমিশ যোগ করা হয়। পায়েসের তুলনায় ফিরনিতে ক্যালোরির পরিমাণ অনেকটাই কম থাকে।
সন্দেশ- বাঙালির প্রিয় সন্দেশও উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত মিষ্টি নয়। ছানার উপস্থিতির কারণে এই মিষ্টি উপকারী মিঠে খাবারের দলেই পড়ে। কিন্তু অবশ্যই চিনির বদলে ব্যবহার করতে হবে গুড়।
কাজু কাতলি- কাজুর এই মিষ্টিতে প্রোটিন-সমৃদ্ধ। তা ছাড়া চিনির বদলে অল্প গুড় দিয়ে বানানো যায়। এমনকি ঘিয়ের পরিমাণ কমালেও স্বাদে হেরফের হয় না। ফলে কাজু কাতলি কম ক্যালোরি-যুক্ত মিষ্টির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।
মিল্ক কেক- মূল উপাদান দুধ। ১০০ গ্রাম মিল্ক কেকের মধ্যে তাই ৮.৬ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। এ ছাড়া খোয়া ক্ষীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখে। এমনকি এটি চুল এবং ত্বকের জন্যেও উপকারী।