— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কয়েক দিন ধরে খেতে গেলেই বমি পাচ্ছে মঞ্জরীর। পাল্লা দিয়ে খাবারে অরুচি। পেটটাও কেমন ফুলে রয়েছে। সাত-পাঁচ না ভেবে ডাক্তারের কাছেই যাওয়া স্থির করল সে। রক্তপরীক্ষায় জানা গেল হেপাটিক স্টেটোসিস, অর্থাৎ ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভুগছে। লিভার তথা যকৃতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি চর্বি জমে গিয়েছে।
অনিয়মিত জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাসে অনিয়ম, শারীরচর্চার অভাবে বেশ কয়েকটি অসুখ শরীরে বাসা বাঁধে, যার মধ্যে অন্যতম ফ্যাটি লিভার। উদ্বেগের বিষয় হল, সহজে এই অসুখের লক্ষণও বোঝা যায় না। সময়মতো সতর্ক না হলে ফ্যাটি লিভারের হাত ধরেই শরীরে বাসা বাঁধে লিভার সিরোসিস।
ফ্যাটি লিভার মূলত দু’ধরনের হয়— অ্যালকোহলিক ও নন-অ্যালকোহলিক। বেলাগাম মদ্যপান থেকে লিভারে ফ্যাট জমলে সেটি অ্যালকোহলিকের পর্যায়ে পড়ে। তবে জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসের অনিয়ম থেকে হয় দ্বিতীয় ধরনটি, যেটি বেশি উদ্বেগের। কখনও কখনও নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার বংশগতও হতে পারে।
অসুখ ধরা পড়ল, ওষুধ শুরু হল আর চিকিৎসক প্রেসক্রিপশনে লিখে দিলেন খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন প্রয়োজন। কিন্তু ঠিক কী ভাবে কী ধরনের পরিবর্তন করা হবে? ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট ও ওয়েলনেস কনসালট্যান্ট অনন্যা ভৌমিক বললেন, “অসুখ সারাতে প্রয়োজনীয় শারীরচর্চা যেমন দরকার, তেমন ডায়েটে পরিবর্তনও ভীষণ জরুরি। তবে তার মানে এই নয় যে, যিনি মোটা তিনি রোগা হয়ে গেলেই ফ্যাটি লিভার ঠিক হয়ে যাবে। ওজন কমানোর ডায়েট আর ফ্যাটি লিভার সারানোর ডায়েট সম্পূর্ণ আলাদা। তার কারণ, দ্বিতীয়টিতে চর্বি কমানোর সঙ্গে সঙ্গে যকৃতের উৎসেচক বা এনজ়াইমগুলোর ক্ষরণ স্বাভাবিক করে তোলা হয়।” সুতরাং অসুখটিতে আক্রান্ত হলে খাদ্যাভ্যাসের ব্যাপারে যথাযথ পরামর্শ জরুরি।
কী কী বাদ দেবেন?
প্রত্যেক মানুষের জীবনযাত্রার ধরন অনুসারে তাঁদের খাদ্যতালিকা বা ডায়েট চার্ট ভিন্ন হয়। তবে প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই খাদ্যে নিষেধাজ্ঞাগুলির মধ্যে মিল থাকে। সুতরাং ফ্যাটি লিভারের ক্ষেত্রে কোন খাবারগুলো বিষ, তা সহজেই বলা যায়।
তা হলে কী খাব?
শুধু কি খাদ্যাভ্যাস বদলালেই হবে?
অসুখ সারাতে প্রয়োজন সত্তর শতাংশ ডায়েট আর তিরিশ শতাংশ শারীরিক কসরত। তবে তার মানেই এই নয় যে, রোজ জিমে যেতেই হবে। দৈনন্দিন জীবনে এলিভেটরের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করলে, একটা বাসস্টপ হেঁটে গেলে অর্থাৎ একটু সচল হওয়ার অভ্যেস থাকলেই যথেষ্ট। নিয়মিত হাঁটা তো খুব ভাল অভ্যেস। যাঁরা দৌড়তে পারেন তাঁরা নিয়মিত দৌড়নো বা জগিংও করতে পারেন। এর পাশাপাশি রয়েছে যোগাসন। প্রশিক্ষকের কাছে পরমর্শ নিয়ে যোগাসনও করা যেতে পারে। অ্যাপ দেখে নিজে নিজে না করাই বাঞ্ছনীয়, কারণ তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
অসুখ যেমন আছে, তাকে সারানোর উপায়ও আছে। নিজের শরীরের ইঙ্গিত বুঝতে হবে, যত্ন করতে হবে। তা হলেই হাতে পাওয়া যাবে সুস্থতার চাবিকাঠি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy