সুস্থ থাকতে ডায়েট মেনে চলা, নিয়ম করে জিম, প্রয়োজনীয় অ্যারোবিক্স, কত কিছুই না করি আমরা! ওবেসিটি, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়তে এ ছাড়া আর উপায়ই বা কী? তবে অনেকেই কর্মব্যস্ততার পর এত নিয়ম মেনে চলতে পারেন না। কারও বা জিমে যাওয়ার ক্ষমতা বা উপায়ও নেই। অনেকেরই বাড়ির কাছে জিম নেই, বা থাকলেও সেখানে যাওয়ার সময়ও পান না। খুব একটা শরীরচর্চার সময়ও অনেকেরই থাকে না।
তা বলে তাঁরা শরীর সুস্থ রাখার দৌড়ে পিছিয়ে যাচ্ছেন, এ কথা কিন্তু ঠিক নয়। বরং পুষ্টিবিদ ও ডায়েটেশিয়ানদের মতে,যন্ত্রনির্ভর শরীরচর্চায় সমস্যা সব সময় কমে না, বরং কায়িক শ্রমে সমস্যা কাটানো যায় সহজে। পুষ্টিবিদ ও ডায়েটেশিয়ানরেশমী মিত্রের কথায়, ‘‘জিম বা অ্যারোবিক্সের সে ভাবে প্রয়োজনই পড়ে না যদি প্রতি দিন ঘরের কিছু কাজ আমরা নিজেরা করে ফেলতে পারি। বরং জিম হঠাৎ বন্ধ করে দিলে শরীরে তার প্রভাব পড়ে। যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চর্বি ঝরানো তাই খুব একটা দীর্ঘস্থায়ী নয়।”
সুমেধার সুরে সুর মেলাচ্ছে সম্প্রতি এক সমীক্ষাও। ‘গুড হাউজকিপিং’ নামের একই আন্তর্জাতিক পত্রিকায় প্রকাশিত একটি রিপোর্ট জানাচ্ছে,প্রতিদিন ঘরগৃহস্থালীর কাজে প্রায় ১২০০ থেকে ১৫০০ ক্যালোরি খরচ হতে পারে। কোন কাজ কত ক্ষণ করলে কতটা ক্যালোরি খরচ হয়, এ বিষয়েও এক হিসাব তাঁরা দিয়েছেন। নানা পুষ্টিবিদ ও ডায়াটেশিয়ানরাও এই সময় অনুপাতে ক্যালোরি খরচের অঙ্কে বিশ্বাসী। জানেন, কোন কাজ কত ক্ষণ করলে কতটা ক্যালোরি খরচ হয়ে শরীরকে সুস্থ রাখা যাবে?
আরও পড়ুন: জালিয়াতি রুখতে চেকে টাকা দেওয়ার সময় মেনে চলুন এই সব নিয়ম
কাচাকুচি:যন্ত্রের মাধ্যমে কাচাকুচি করলেও ক্যালোরি ঝরবে। ওয়াশিং মেশিনে কয়েকটা কাপড় ভরা, জল ঢালা, সাবান মেশানো, তার পর তা বার করে ঝেড়ে, টানটান করে মেলে দেওয়া— মিনিট কুড়ি ধরেও যদি এই কাজ করা যায়, তবে ৭৮ ক্যালোরি খরচ হয়।
ঝাড়ু: প্রতি দিন এক বার মোটামুটি তিন-চারটে ঘর খুব ভাল করে ঝাড়ু দিলে নিমেষে খরচ হয়ে যায় ১২৫ ক্যালোরি।
ঘর মোছা: নিয়ম করলে মিনিট ১৫ ঘর মুছলে কোমর, ঘাড়, হাত ও পায়ের যে পেশী সঞ্চালন হয়, তাতে প্রায় ১৫০-১৮০ ক্যালোরি খরচ হয়।
বাসন মাজা: সকালের জলখাবার থেকে রাতের খাওয়া, বাসন নেহাত কম খরচ হয় না।সারা দিনে মিনিট ১৫ সময় ব্যয় করে বাসন মাজলেও ১০৫ ক্যালোরি ঝরে।
বাথরুম পরিষ্কার: ৩০ বার লাফানোর সমান ক্যালোরি ঝরতে পারে যদি মিনিট পনেরো বাথরুম পরিষ্কার করতে পারেন।
আরও পড়ুন: শিশু মিথ্যা বলে? এ সব উপায়ে তাড়ান সমস্যা
বাগান: গাছের নেশা থাকলে দিনে ৩০ মিনিট সময় দিন বাগান পরিচর্যায়। সার দেওয়া, মাটি কোপানো, বীজ বপন, গাছের যত্ন, সব মিলিয়ে ২০ মিনিটে ঝরে যায় প্রায় ২১৩ ক্যালোরি।
রুটি করা: কেনা রুটি না খেয়ে একটু কষ্ট করে বাড়িতে বানিয়ে নিলে শরীরের মেদ ঝরে অনেকটাই। প্রায় ২৫০ গ্রাম আটা মাখতে হাত ও কাঁধের পেশী যতটা সঞ্চালিত হয়, তাতে ৬০-৭০ ক্যালোরি খরচ হয়।
ঘরের টুকটাক এমন নানা কাজেই ক্যালোরি ঝরে অনেকটাই। সমীক্ষায় দাবি, এক জন সাধারণ মানুষ দিনে ঘণ্টা দুয়েক ঘর-গৃহস্থালীর কাজ সামলালে প্রায় ১২০০ থেকে ১৫০০ ক্যালোরি খরচ হয়। সঙ্গে অবশ্যই রাখুন স্বাস্থ্যকর ডায়েট। সুতরাং ঘরের কাজে পরিশ্রম হয় না কিংবা তা কেবল মহিলাদের জন্যই নির্ধারিত এমন ধারণা থেকে বেরোন। বরং হাতে হাতে কাজ সারলে নিজের শরীরের যত্ন ও গৃহস্থালীর কাজ সারাও অনেক সহজ হয়। আজকাল বেশির ভাগ মেয়েরাও কর্মব্যস্ত। তাই যৌথ ভাবে কাজ সারলে শরীর ও সংসার দুই-ই অনেক সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকে।
ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy