পৃথিবীর প্রতি চার জনের এক জন চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যায় ভোগেন। ছবি: শাটারস্টক।
বিদিশার নিশার মত চুল এখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শুধু জীবনানন্দের কবিতাতেই পাওয়া যায়। আজকের যুগের ব্যস্ততায় চুলের যত্নের সময় না থাকায় চুল কেটে ছোট করে ফেলাতেই বেশি স্বচ্ছন্দ। অল্পবিস্তর চুল রোজ ঝরে যায়, তাই তাই নিয়ে মাথা না ঘামানোই ভাল।
আসলে প্রত্যেক কোষের মত চুলেরও নির্দিষ্ট আয়ু আছে। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিদিনই কিছু পুরনো চুল ঝরে যায়, একই সঙ্গে নতুন চুল গজায়। কিন্তু মাঝে মাঝে আঁচড়ালেই রাশি রাশি চুল উঠে আসে, শ্যাম্পু করলেও তাই। অবশ্য এই সমস্যা শুধু আমার আপনাদের একার নয়, পৃথিবীর প্রতি চার জনের এক জন চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যায় ভোগেন। বিভিন্ন কসমেটিক্সের ব্যবহার করে সমস্যা আরও বাড়িয়েও তোলেন। কিছু বড় অসুখের পর হু হু করে চুল পড়ে যায়।
সমস্যাটা হয় তখনই যখন যে অনুপাতে চুল ঝরে তার থেকে কম চুল গজালে। একজন মানুষের দিনে ১০০ টা পর্যন্ত চুল ঝরে যেতে পারে। তবে নাগাড়ে চুল ঝরতে থাকলে এক জন ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চুল গজানো থেকে ঝরে যাবার মধ্যে তিনটি পর্যায়ে আছে। অ্যানাজেন, ক্যাটাজেন ও টেলোজেন। চুল গজানোর পর বেড়ে ওঠে অ্যানাজেন ফেজে। ক্যাটাজেন অবস্থায় চুল আর বাড়ে না। টেলোজেন দশায় চুল ঝরে যায়। চুল ঝরা আটকাতে কী কী করা প্রয়োজন, জানালেন চিকিৎসক।
আরও পড়ুন: ডায়াবেটিক? এ সব নিয়ম মেনে পুজোর ক’দিনের অনিয়মেও থাকুন সুস্থ
চুল পড়ার এক অন্যতম কারণ খুসকি। অনেক সময় সোরিয়াসিস নামক ত্বকের অসুখে খুস্কির মতই মাথায় চাবড়া উঠে যায়। এ ক্ষেত্রে ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শে ওষুধ ব্যবহারে করা উচিৎ। একসঙ্গে অনেক চুল ঝরে যেতে শুরু করলে কয়েকটা টেস্ট করাতে হয়। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা, থাইরয়েড ফাংশন টেস্ট করানো দরকার। অ্যানিমিয়া থাকলে চুল পড়া বেড়ে যায়। আবার থাইরয়েড হরমোনের তারতম্য হলেও চুল ওঠে।
নাগাড়ে চুল ঝরতে থাকলে এক জন ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট করানো দরকার। আবার অনেক মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস ও ভিটামিনের অভাবেও চুল পড়ে যায়। তাই ডিম, মাছ, দুধের সঙ্গে সঙ্গে স্ময়ের ফল ও সবজি খেতে হবে। নিয়মিত শ্যম্পুর পাশাপাশি তেল দিয়ে চুলের গোড়া ম্যাসাজ করতে হয়। ম্যাসাজের ফলে স্ক্যাল্পে রক্ত চলাচল বেড়ে গিয়ে চুলের স্বাস্থ্য ভাল হয়।
আরও পড়ুন: পুজোর অনিয়মের সঙ্গে যুঝতে এখন থেকেই ডায়েটে রাখুন এই খাবার
স্ট্রেস চুল পড়া বাড়িয়ে দেয়। তাই দূরে রাখুন মানসিক সমস্যা। চেষ্টা করুন প্রয়োজনে চিকিৎসকের সাহায্য নিতে। আবার সেবোরিক ডার্মাটাইটিস, অ্যালার্জি ইত্যাদির কারণে খুব মাথা চুলকোয়, এর ফলেও চুল পড়ে যায়। ওষুধ ব্যবহারে এই সমস্যার সমাধান হয়। মেয়েদের অন্য কয়েকটি কারণে চুল পড়ে যায়। মা হওয়ার পরে ও মেনোপজ হলে হরমোনের তারতম্যের চুল ঝরে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও চুল ঝরে যায়। তবে যে কারণেই চুল পড়ুক না কেন পার্লারে যাওয়ার আগে এক বার চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে ভাল হয়। নিয়মিত মৃদু শ্যাম্পু ব্যবহার করে ও পুষ্টিকর খাবার খেয়ে পুজোর আগেই হয়ে উঠুক স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy