চিকেন পক্সের দাগ সারাতে প্রথম থেকেই সচেতন হোন । ছবি: শাটারস্টক।
চিকেন পক্স তো চিন্তার বটেই, সেরে গেলে তার জন্য শরীরে থেকে যাওয়া ফোস্কার দাগও খুবই ভাবায়। উপায় কী?
চিকেন পক্সের দাগ নিয়ে চিন্তা কমানোর প্রথম এবং সেরা উপায় দাগ বেশি হতেই না দেওয়া। তাতে দাগ কমানোর চিন্তাও কমবে। আজকাল চিকেন পক্সের জন্য কিছু অ্যান্টি ব্যাক্টিরিয়াল ওষুধ পাওয়া যায়। অ্যাসাইক্লোভির, ভ্যালাসাইক্লোভিরের মতো ওষুধ অসুখ ধরা পরার তিন দিন পর থেকেই খাওয়া শুরু করা উচিত। এতে ফোস্কা বেরয় কম। অতএব দাগ তাড়ানোর চিন্তাও কমে।
এ তো গেল অসুখ হলে কী ভাবে তা কমিয়ে ফেলা যায় তার একটা পদক্ষেপ। ইতিমধ্যেই যে সব ফোস্কা বেরিয়ে গেল তাদের সঙ্গে লড়ব কী ভাবে?
ত্বক খুব স্পর্শকাতর বিষয় হওয়ায় প্রথম থেকেই এর জন্য কিছু যত্ন নিতে হবে। পক্সের রোগীর ঘর আলো-বাতাস পূর্ণ হলেও তার গায়ে যাতে একেবারেই রোদ না লাগে এই দিকে সবার আগে খেয়াল রাখতে হবে। অসুখের সময় ও সেরে ওঠার পর সাত দিন পর্যন্ত এটা মেনে চলতে পারলে ভাল।
কেন?
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি এই সময় ত্বকের ক্ষতি করে, তাই আলো-হাওয়া চলাচলের ঘরে থাকুন। কিন্তু সরাসরি সূর্যের আলো গায়ে লাগাবেন না। পর্দা টেনে রাখুন ঘরের। না সেরে যাওয়া পর্যন্ত বাড়ির বাইরে না বেরনোই স্বাস্থ্যসম্মত। যে দিকের জানালা দিয়ে সূর্যালোক ঢোকে, মাঝে মাঝে পর্দা সরিয়ে তাকে আসতে দিন, কিন্তু রোগীকে রোদের জায়গা থেকে দূরে রাখুন। সেরে যাওয়ার পরেও বাইরে বেরতে গেলে অবশ্যই সানস্ক্রিন মাখতেই হবে।নইলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি দাগগুলিকে আরও কালো করে তুলবে।
আরও পড়ুন: সন্তান পর্নসাইটে আসক্ত নয় তো? বুঝবেন কী উপায়ে?
পক্সের দাগ রুখতে বাইরে বেরতে গেলে অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগান।
কেমন সানস্ক্রিন? বাজারচলতি?
না। বাজারচলতি সানস্ক্রিনগুলি কেবল এসপিএফ নির্ভর। কিন্তু আসলে সানস্ক্রিন কখনও কেবল এসপিএফ-এর মাধ্যমে নির্ণীত হয় না। এর মধ্যে তা ছাড়াও কিছু ফ্যাক্ট থাকে। আর বাজারচলতি ক্রিম বা জেলগুলিতে রাসায়নিক থাকে প্রচুর। তাই, ত্বক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে সানস্ক্রিন বাছুন।
অনেক সময় পক্স পেকে যায়। সে ক্ষেত্রে কী করব?
পক্স পেকে গেলেও একেবারেই তাতে নখ যাতে না লাগে সে দিকে সচেতন থাকতে হবে। এই সময় কিছু অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের মত নিয়ে তাঁর দেওয়া ওষুধ খাওয়া জরুরি।
পক্সের অন্যতম সমস্যা ত্বকের চুলকানি, জ্বালাপোড়া। এর জন্য কোনও সহজ সমাধান আছে কি?
চুলকানি সারাতে বা জ্বালাপোড়া রুখতে ক্যালামাইন লোশনের উপর ভরসা করতে হবে। কোনও ভাবেই নখ দেওয়া যাবে না। তাই রোগীর হাতের নখ কেটে রাখুন। কখনও কোনও ধারাল বা ভোঁতা জিনিস দিয়েও চুলকানো যাবে না। এতে রক্ত বেরিয়ে সংক্রমণ আরও ছড়াবে।
জল দেওয়া কি একেবারেই বারণ?
প্রথম সাত দিন আমরা জল ঠেকাতে বারণই করি। স্নানও না করাই উচিত। পরে র্যাশ একটু কমলে স্নান করা যেতে পারে। তবে স্নানের সময় অনেকেই নিম দেওয়া সাবান বা কোনও কোনও অ্যান্টিসেপ্টিক ব্যবহার করেন। এ সব একেবারেই চলবে না।
আরও পড়ুন: চিকেন পক্সের সময় কী ভাবে সুস্থ রাখবেন নিজেকে? রোগীর যত্নই বা নেবেন কী ভাবে?
অসুখ সারার পর যে সব দাগ থাকে, তাদের জন্য কী করণীয়?
পক্সের দাগ সহজে ওঠে না। কিছু দাগ থেকে যায়, তাই এই দাগগুলিকে সরাতে নিজে নিজে কোনও ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। বরং এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খান ও প্রয়োজনীয় মলম লাগান। এতে দাগ সারবে। নিজেরা দোকান থেকে কোনও ওষুধ কিনে খেলে তা হিতে বিপরীত হতে পারে। এই সময় শরীরের অবস্থা, ত্বকের অবস্থা অনেক কিছু বুঝে এই ধরনের ওষুধ দেওয়া হয়।
ডাবের জল ব্যবহারের একটা প্রবণতা দেখা যায়। এটি কি এই সব দাগ দূর করতে সাহায্য করে?
ডাবের জল শরীরের নানা কাজে লাগতে পারে কিন্তু পক্সের দাগ তোলা নিয়ে এর উপর চিকিৎসাবিজ্ঞানের কোনও আস্থা নেই।
(শুরু হয়েছে আমাদের নতুন বিভাগ 'HELLO DOCTOR'। এ বারের বিষয় ‘ব্রণর সমস্যা’। এ বিষয়ে আপনার প্রশ্ন পাঠান query@abpdigital.in এই মেল আইডি তে। উত্তর দেবেন ত্বক বিশেষজ্ঞ সঞ্জয় ঘোষ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy