Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Oil

অতিরিক্ত ঘামের ফলে ত্বকে দেখা দেয় নানা সমস্যা, সমাধান জেনে নিন

ঘামের ফলে ত্বকে যে অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দেখা দেয়, তা দূর করার জন্য কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন...

মডেল: ঐশ্বর্য সেন

মডেল: ঐশ্বর্য সেন ছবি: জয়দীপ মণ্ডল

 ঈপ্সিতা বসু
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২১ ০৭:৩৭
Share: Save:

রান্নাঘরে খানিকটা সময় কাটাতেই ঘামে ভিজে যাচ্ছে পুরো শরীর! দুপুরে অফিসের কাজে ল্যাপটপ নিয়ে বসলেও মুখ ও কপালে জমছে বিন্দু-বিন্দু ঘাম। ফুল স্পিডের ফ্যান হার মানছে ঘামের কাছে। গরমে ঘাম হওয়াটা স্বাভাবিক। ঘাম শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। বরং ঘাম না হওয়াই অস্বাভাবিক। কিন্তু অতিরিক্ত ঘামের কারণে ময়লা জমে তৈলাক্ত ভাব আসে মুখে। ফলে ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডসের সমস্যায় ভুগতে হয় অনেককেই। তা ছাড়া রোজকার কাজের চাপ, বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ার কারণেও ঘাম হয়। এ ছাড়া মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, স্থূলতা, শরীরে পুষ্টির অভাবসহ নানা কারণে শরীর অতিরিক্ত ঘামতে পারে। পাশাপাশি ডায়াবিটিস, জ্বর, হার্টের অসুখ, মেনোপজ়ের কারণেও শরীরে বেশি ঘাম হতে পারে। অতিরিক্ত ঘাম শরীরের বিভিন্ন জায়গা যেমন হাতের তালু, পায়ের নীচে, আর্মপিট, গলা, কপাল এমনকি স্ক্যাল্পেও নানা সমস্যা তৈরি করে। অতিরিক্ত ঘামে গায়ে দুর্গন্ধ হতে পারে। ঘরোয়া উপায়ে প্রতিকার মিলতে পারে। তবে ঘামের পরিমাণ অস্বাভাবিক ভাবে বাড়লে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরি। কারণ কিছু মেডিক্যাল কন্ডিশনও দায়ী অতিরিক্ত ঘাম নিঃসরণের জন্য। ঘামের ফলে ত্বকে যে অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দেখা দেয়, তা দূর করার জন্য কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন...

ঘরোয়া পদ্ধতিতে মুক্তি

• ফেসিয়াল স্ক্রাব: মুখে অতিরিক্ত ঘামের প্রভাবে তৈলাক্ত ভাব দূর করতে চালের গুঁড়োর সঙ্গে টক দই ভাল করে মিশিয়ে নিন। এটা মুখে লাগিয়ে পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করুন। ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু’বার ব্যবহার করলেই অনেক উপকার পাবেন।

• শসার রস: এ ধরনের সমস্যায় শসার রস ব্যবহার করলে ভাল ফল পাওয়া যেতে পারে। শসা কুরিয়ে নিয়ে চেপে রস বার করে তুলার সাহায্যে মুখে লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি মুখ ঠান্ডা রাখে, ফলে ঘাম বেশি হয় না। ত্বকের দাগছোপও দূর করে।

• অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার: ঘাম নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার নিয়মিত খেলে ত্বকের পিএইচ লেভেলের ভারসাম্য বজায় থাকে। অতিরিক্ত ঘাম হওয়া স্থানগুলো পরিষ্কার করে নিন আগে। তুলোর বলে অ্যাপল সাইডার ভিনিগার নিয়ে ওই স্থানে লাগিয়ে সারা রাত রেখে দিন। পর দিন স্নানের পরে পাউডার লাগান। বেশ তরতাজা লাগবে। এর সঙ্গেই এক গ্লাস জলে দুই টেবিল-চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার ও সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে রোজ খালি পেটে খেলেও উপকার

পাওয়া যায়।

• বেকিং সোডা: শরীরকে অতিরিক্ত ঘামের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এটি প্রাকৃতিক ভাবে শরীরের ঘাম শোষণ করে ও দুর্গন্ধ কমায়। এ ছাড়া শরীরের যে অংশ বেশি ঘামে, সেখানের পিএইচ লেভেলের মাত্রা কমাতেও বেকিং সোডার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। পরিমাণমতো জলের সঙ্গে এক টেবিল চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। পছন্দমতো তিন থেকে চার ফোঁটা সুগন্ধি তেল মিশিয়ে নিন পেস্টে। এ বার মুখ, আর্মপিটে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে কয়েকবার ব্যবহার করলেই ঘামের হাত থেকে মুক্তি মিলবে।

• পাতিলেবু: ঘাম নিয়ন্ত্রণ করা যায় লেবু দিয়েও। সমপরিমাণ লেবুর রস ও বেকিং সোডা মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মিশ্রণে তুলোর বল ডুবিয়ে, বেশি ঘাম হয় এমন জায়গায় লাগিয়ে রেখে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এক দিন অন্তর পদ্ধতিটি অনুসরণ করলে উপকার পাবেন। এ ছাড়া লেবু প্রাকৃতিক সুগন্ধি হিসেবেও কাজ করে, যা ঘামের কারণে হওয়া দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। এক মগ জলে পরিমাণমতো পাতিলেবুর রস মিশিয়ে, তাতে তোয়ালে ভিজিয়ে সারা শরীর ভাল ভাবে চেপে চেপে মুছে নিন। ২০ থেকে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এ বার ঠান্ডা জলে স্নান করুন। রোজ এই ভাবে স্নান করলে উপকার পাবেন।

• নারকেল তেল: এই তেলে আছে লরিক অ্যাসিড, যা দুর্গন্ধের জন্য দায়ী জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করে। খানিকটা নারকেল তেল এবং শিয়া বাটার একসঙ্গে নিয়ে মাইক্রোওয়েভে এক মিনিট গরম করুন। এর মধ্যে তিন টেবিল চামচ বেকিং সোডা, দুই টেবিল চামচ অ্যারারুট পাউডার ও কয়েক ফোঁটা সুগন্ধি তেল মিশিয়ে সংরক্ষণ করুন। এই মিশ্রণ সুগন্ধি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।

কিছু বিষয় খেয়াল রাখুন

• মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করতে হবে। কারণ মানসিক চাপ কিন্তু অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার অন্যতম কারণ।

• গরমে বেশি তেল-মশলাযুক্ত খাবার ঘামের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দেয়। তাই এই ধরনের খাবার এড়িয়ে শরীর ঠান্ডা রাখে এমন খাবার রাখুন রোজকার খাদ্যতালিকায়। আম-ডাল, পান্তা, আনাজের ঝোল জাতীয় খাবার খান। তার সঙ্গে রোজ পর্যাপ্ত পরিমাণে জল ও ফলের রস খান।

• অতিরিক্ত কাজ বা রান্না করার পর অ্যান্টি-ব্যাকটিরিয়াল সাবান ব্যবহার করে স্নান করে নিন।

গরমে ঘাম হবেই। তাই তা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যেমন ব্যবস্থা নিতে হবে, তেমনই ঘামের ফলে যাতে ত্বকে সমস্যা দেখা না দেয়, সে দিকেও নজর রাখতে হবে। তবেই সুন্দর থাকবে ত্বক আর তরতাজা থাকবেন আপনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Skin Care Tips Oil
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy