মুশকিল আসানের আর এক নাম যে এসেনশিয়াল অয়েল, তা আমরা এত দিনে জেনে গিয়েছি। স্ট্রেস দূর করা, মন ভাল রাখা এবং বিউটি থেরাপির বাইরেও এমন অনেক সমস্যা আছে, যার সমাধান করতে পারে ভেষজ তেলগুলি। ত্বকের উপরের দাগছোপ, ব্রণ, ক্ষতের দাগ, সানবার্ন— এসেনশিয়াল অয়েলের মাধ্যমে দূর করা সম্ভব।
হেলিক্রাইসাম
ব্রণ-সহ যে কোনও দাগ দূর করতে, সানবার্ন, ক্ষতের দাগ সারাতে হেলিক্রাইসাম অয়েলের জবাব নেই। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল উপাদান। এর অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট ত্বকের নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে। নানাবিধ উপকারিতার জন্য এই এসেনশিয়াল অয়েল বেশ দামি। তবে এটি সরাসরি ত্বকে লাগানো উচিত নয়। নারকেল, সুইট আমন্ড বা হোহোবা অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে লাগাবেন। এক চামচ সুইট আমন্ডের সঙ্গে তিন-চার ফোঁটা হেলিক্রাইসাম মিশিয়ে ব্যবহার করুন।
ফ্র্যাঙ্কিনসেন্স
ত্বক মোলায়েম করতে বা ত্বকের রঙে সমতা আনতে এই ভেষজ তেলের জুড়ি নেই। ব্যাকটিরিয়া দূর করতেও সহায়ক। এসেনশিয়াল অয়েলের মধ্যে ফ্র্যাঙ্কিনসেন্সের সুনাম সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে অ্যান্টি-এজিং উপাদানের পাশাপাশি সর্দি, কাশি, অ্যাজ়মা সারানোর উপাদানও রয়েছে। নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে এই তেল চুলেও লাগানো যায়। অয়েল মিডিয়াম অয়েলের সঙ্গে মিশিয়েই এই ধরনের এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করা উচিত। যাঁরা ব্লাড থিনার জাতীয় ওষুধ খান, তাঁদের এই তেল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
জেরেনিয়াম
স্কিনটোনের ব্যালান্স করতে সহায়ক এই তেল। দাগ দূর করতে এর ভূমিকা এতটাই কার্যকর যে, এগজ়িমার মতো অসুখের দাগও সারিয়ে তোলে। এর অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল গুণ ক্ষত সারিয়ে, নতুন কোষের জন্ম দেয়। রোদে পোড়া ভাব কাটাতেও সহায়ক।
ল্যাভেন্ডার
এই অয়েলের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টিসেপটিক উপাদান। মৃত কোষ সরিয়ে নতুন কোষের জন্ম দিতে পারে এই তেল। গভীর ক্ষতের দাগ সারানোর জন্য ল্যাভেন্ডার বিশেষ কার্যকর বলা হয়। সানবার্ন সারাতেও এই তেল সহায়ক।
ক্যারট সিড
ত্বকের কালো ছোপ দূর করার কাজে এই তেল সহায়ক। এর অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান, অ্যালার্জিজনিত দাগ দূর করতেও সাহায্য করে। অনেক পুরনো ক্ষতের দাগও এই তেলের সাহায্যে সারিয়ে ফেলা যায়।
সিডারউড
ব্রণর দাগ, এগজ়িমার দাগ সারাতে সিডারউড এসেনশিয়াল অয়েল বিশেষ উপকারী। ত্বক পুনরুজ্জীবিত করে তুলতেও অব্যর্থ।
টি ট্রি অয়েল
অনেক বিউটি প্রডাক্টেই টি ট্রি অয়েল ব্যবহার করা হয়। ত্বককে সজীব করতে যেমন এই তেলের জুড়ি নেই, তেমনই অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টি সেপটিক উপাদান রয়েছে। ব্রণ, ক্ষতের দাগ সারাতে এবং রোদে পোড়া ভাব দূর করতে এই তেল সাহায্য করে।
নেরোলি
ত্বক পুনরুজ্জীবিত করার পাশাপাশি অনেক পুরনো দাগ দূর করতে এই তেলের ভূমিকা রয়েছে। অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল উপাদান এই কাজগুলি ত্বরান্বিত করে।
এই তেলগুলি ছাড়াও ব্রণ, ক্ষত, ত্বকের অন্যান্য দাগ ছোপ দূর করতে রোজ়মেরি, লেমন অয়েল, ক্যামোমাইল, এসেনশিয়াল অয়েলও কার্যকর। রোদে পোড়া ভাব সারাতে চাইলে ভিটামিন সি, ই, পেপারমিন্ট, ইউক্যালিপ্টাস, ক্যামোমাইল, মেন্থল এসেনশিয়াল অয়েল... ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিটি তেলই অনলাইনে পাবেন। এসেনশিয়াল অয়েলের নির্যাস আসে গাছ এবং বীজ থেকে, কিন্তু সরাসরি ত্বকে লাগানোর বদলে তাকে হাল্কা করার জন্য মেশাতে হবে মিডিয়াম বা ক্যারিয়ার অয়েল। আমন্ড, অলিভ, কোকোনাট, হোহোবা, আর্গন, রোজ়হিপ এবং সানফ্লাওয়ার অয়েল খুব ভাল মিডিয়াম। ধরুন ১০ ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল নিচ্ছেন, সেখানে ৩ টেবিলচামচ মিডিয়াম অয়েল মেশাতে হবে।
কারও গন্ধে অ্যালার্জি থাকলে এসেনশিয়াল অয়েল লাগানোর আগে পরীক্ষা করে দেখে নিন। চর্মরোগ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই তেল লাগাবেন। কোনও এসেনশিয়াল অয়েল মুখে বা ক্ষতের উপরে লাগানোর আগে, এক ফোঁটা হাতের কোনও অংশে লাগিয়ে দেখে নিন জ্বালা করছে বা র্যাশ বেরোচ্ছে কি না। হার্টের সমস্যা এবং গর্ভবতী মায়েরাও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে এসেনশিয়াল অয়েল লাগাবেন।
মডেল: সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়; ছবি: শুভদীপ সামন্ত; মেকআপ: সৈকত নন্দী
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy