রোজ ডিম খেলে কোলেস্টেরল বেড়ে যাবে না তো? সিদ্ধ ডিম না ভাজা ডিম? ব্রয়লার না দেশি? ডিম নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। সুস্বাদু এই লোভনীয় খাবারের গুণাগুণ জানলেই উত্তর পেয়ে যাবেন সব প্রশ্নের।
জলখাবারে অনেকেরই ডিম সিদ্ধ বা পোচ খাওয়ার অভ্যেস রয়েছে। অনেকে আবার কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার ভয়ে ডিমকে ব্রাত্য করে রাখেন। ওজন নিয়ন্ত্রণে রেখে পেশির গঠনে জোর দিতে কেউ-কেউ আবার ডিমের কুসুমকে বাদ দিয়েছেন খাদ্যতালিকা থেকে। কিন্তু ডিমের সাদা অংশ থেকে শুরু করে কুসুমে ভিটামিন ও মিনারেল থাকে প্রচুর পরিমাণে।
পহলে গুণবিচারি
ডিম একটি সম্পূর্ণ প্রোটিন। একটি ডিম থেকে প্রায় ৬ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। অ্যামিনো অ্যাসিড, ভিটামিন বি টুয়েলভ, ভিটামিন এ, ডি প্রচুর পরিমাণে থাকে ডিমে। আর থাকে কোলিন। লিভারের জন্য এই খনিজ খুব ভাল। তবে শারীরিক অবস্থা অনুসারে কে কী ভাবে খাচ্ছেন, তার উপরে নির্ভর করবে ডিমের উপকারিতা কতটা গ্রহণযোগ্য।
কী ভাবে খাবেন?
ক্লিনিকাল নিউট্রিশনিস্ট হিনা নাফিস বললেন, ‘‘অনেকে কাঁচা ডিমও খেয়ে থাকেন। কিন্তু ডিম সিদ্ধ করে খাওয়ার পরামর্শই দেব। কাঁচা ডিমে সালমোনেলা পয়জ়নিং হতে পারে। সালমোনেলা এক ধরনের ব্যাকটিরিয়া। এতে পেটের সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু উত্তাপের সংস্পর্শে এলেই এই সালমোনেলা ব্যাকটিরিয়া ধ্বংস হয়ে যায়। তাই তখন আর এই ধরনের ফুড পয়জ়নিংয়ের সম্ভাবনা থাকে না। ডিম পুরো সিদ্ধ বা অর্ধসিদ্ধ বা পোচ করে খেতে পারেন। তবে গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে ডিম পুরো সিদ্ধ করেই খেতে বলা হয়। ভ্রূণের মস্তিষ্কের গঠনেও ডিমের ভূমিকা অনস্বীকার্য।’’ তাই গর্ভাবস্থায় রোজ একটি করে ডিম সিদ্ধ খেতে পারেন। একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ দিনে এক থেকে দু’টি ডিম খেতে পারেন। তবে কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার সমস্যা থাকলে ডিমের পরিমাণ কমাতে হবে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলাই শ্রেয়।
শিশুদের জন্য
শিশুদের পুষ্টির জন্যও রোজকার খাদ্যতালিকায় একটি করে ডিম রাখা যায়। সন্তানের বয়স সাত মাস হলে ডিম দেওয়া শুরু করতে পারেন। খুব বেশি সিদ্ধ হয়ে গেলে ডিমের কুসুম গলায় আটকে যেতে পারে। তাই ডিম মিনিট পাঁচেক সিদ্ধ
করে নরম কুসুমের অংশ দিয়ে খাওয়ানো শুরু করার পরামর্শ দিলেন হিনা নাফিস। প্রথম দিনই পুরো কুসুম দেবেন না। একটু একটু করে দিয়ে দেখুন, শিশুটির ডিম খেলে কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না। সে যদি ডিম সহ্য করতে পারে, তা হলে ধীরে ধীরে কুসুমের পরিমাণ বাড়ান।
ডিমে কি কোলেস্টেরল বাড়ে?
হিনা নাফিস বললেন, ‘‘অনেকেরই ধারণা থাকে, ডিম খেলে কোলেস্টেরল বাড়ে। কিন্তু সেটা সত্যি নয়। রোজ একজন সুস্থ মানুষ ৩০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত কোলেস্টেরল গ্রহণ করতে পারেন। সেখানে ডিমে কোলেস্টেরলের পরিমাণ ১৮৫ মিলিগ্রাম। তাই দিনে একটা ডিম খেলে ক্ষতি নেই। তা ছাড়া কোলেস্টেরল মাত্রই কিন্তু খারাপ নয়। এইচডিএল হল বন্ধু কোলেস্টেরল। আর এলডিএল শরীরের জন্য খারাপ। পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে ডিম খেলে এলডিএল (খারাপ কোলেস্টেরল) বাড়ে না। ডিমে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে, তাই ডিমের কোলেস্টেরল ক্ষতি করে না। কিন্তু অন্য খাবারে কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’’ তবে পোলট্রি মুরগির চেয়ে দেশি মুরগির ডিম খাওয়াই ভাল।
ডিমের প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেল শরীর সুস্থ রাখতে খুব উপকারী। আর ডিমের কুসুমেই কিন্তু সবচেয়ে বেশি পুষ্টি পাওয়া যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy