গলা ব্যথা, সর্দি জ্বরের উপশমের সঙ্গে গরম জলের সম্পর্কটা বহু দিনের। হালে এর সঙ্গে হাত মিলিয়েছে কোভিড-১৯ ভাইরাসও। কিন্তু ঘন ঘন গরম জল খেলে বা তা দিয়ে গার্গল করলে আদৌ কি ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব?
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. অরুণাংশু তালুকদারের মতে, ‘‘ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কয়েকটি উপসর্গ রোগীকে বেশি ভোগায়, তা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে ঈষদুষ্ণ জল। তবে ঈষদুষ্ণ জল কোভিড-১৯ বা অন্য ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করতে পারার কোনও প্রামাণ্য তথ্য নেই। তা না থাকলেও ঈষদুষ্ণ জলে গার্গল ও তা খাওয়ায় ভরসা রাখা যায়।’’
এ ব্যাপারে একমত ইএনটি বিশেষজ্ঞ ডা. দীপঙ্কর দত্তও। তিনি বললেন, ‘‘যে কোনও ভাইরাসে আক্রান্ত হলে গলা খুসখুস, গলা ব্যথা, নাক বন্ধ ইত্যাদির উপশমে ঈষদুষ্ণ জল খেলে বা কয়েকবার গার্গল করলে রোগী আরাম পাবেন, যদিও এর বৈজ্ঞানিক ভিক্তি নেই।’’
তা হলে ঈষদুষ্ণ জলকে প্রাধান্য দেওয়ার কারণ কী? ডা. তালুকদার বললেন, ‘‘যে কোনও ভাইরাস বা ব্যাকটিরিয়া, যা মুখ বা নাক দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে, সেটি প্রাথমিক অবস্থায় টনসিল বা অন্যান্য গ্ল্যান্ডের চারপাশেই দানা বাঁধে, তার পরে ছড়িয়ে পড়ে। গরম জল টনসিলের চারপাশে রক্তসঞ্চালনের পথ মসৃণ করে শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এ ভাবেই সর্দি-জ্বর, ঠান্ডা লাগা ইত্যাদির সঙ্গে ঈষদুষ্ণ জল খাওয়া ও গার্গল করার প্রবণতা চলে এসেছে।’’
করোনাভাইরাসের সঙ্গে ঈষদুষ্ণ জলের যোগ
করোনাভাইরাসের প্রবেশে শ্বাসনালিতে কফ তৈরি হয়। এ ক্ষেত্রে ডা. তালুকদার বললেন, ‘‘কফ বার করার উপায় হিসেবে ওষুধ ছাড়াও, ঈষদুষ্ণ জলের উপর ভরসা রাখছেন চিকিৎসকেরা। শ্বাসনালিতে ভাইরাসের প্রোটিন ভাঙতে সহায়ক ঈষদুষ্ণ জল।’’ এর সঙ্গেই ডা. দত্ত জুড়লেন, ‘‘নাক ও গলার সংযোগস্থলে করোনাভাইরাস বংশবৃদ্ধি শুরু করলে, গরম জলের ভাপ নিলেও ফিল গুড এফেক্ট তৈরি হয়। রোগীর ঘ্রাণশক্তি নষ্ট হলেও, ফুটন্ত গরম জলের ভাপ নিয়ে নাকের গন্ধ ফেরানোর প্রাথমিক চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিন-চার দিন পরে অবস্থার উন্নতি না হলে পুনরায় চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি।’’
ঈষদুষ্ণ জলের উপকার
কোভিড-১৯ ভাইরাস দানা বাঁধলে শরীরে জলের পরিমাণ কমে যায়। এ জন্য বিশেষ শারীরিক অসুবিধে না থাকলে জল পানের পরিমাণ বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। মাঝে-মাঝে ঈষদুষ্ণ জল খেলে দু’টি বিষয়ের সুরাহা হয়। শরীরে জলের অভাব পূরণ হয় এবং টক্সিনের মাধ্যমে শরীরের বর্জ্য বেরিয়ে যায়। এমনিতে সকলেরই রোজ তিন-চার লিটার জল পান করা দরকার। তার কিছুটা পরিমাণ ঈষদুষ্ণ জল হলে বাড়তি শারীরিক সমস্যা হয় না। তবে জলের তাপমাত্রা যেন শরীর সহ্য করতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy