Advertisement
১২ জানুয়ারি ২০২৫
ব্রঙ্কাইটিস নিজে থেকে সেরে যায়। তবে তিন সপ্তাহের বেশি কাশি থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করবেন। জেনে নিন রোগটির উপসর্গ
Acute Bronchitis

Acute Bronchitis: ব্রঙ্কাইটিসে আতঙ্কিত হবেন না

গলা ধরে থাকা, গলায় কিছু আটকে থাকার অস্বস্তিকর অনুভূতি, যা হয়তো কাশিতেও প্রশমিত হচ্ছে না— এমন উপসর্গ দেখা যায়।

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী
শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২২ ০৬:৫৬
Share: Save:

সকলেরই হয়তো কম-বেশি পরিচয় রয়েছে ব্রঙ্কাইটিসের সঙ্গে। ব্রঙ্কাস কথাটির অর্থ শ্বাসনালি। ব্রঙ্কাসের প্রদাহকে বলা হয় ব্রঙ্কাইটিস। এই প্রদাহের নেপথ্যে অনেক কারণ থাকতে পারে। আবার কখনও কখনও ব্রঙ্কাস অতি-সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে।

অ্যাকিউট ব্রঙ্কাইটিস কী?

পালমোনোলজিস্ট ডা. পার্থসারথি ভট্টাচার্যের মতে, ‘‘প্রশ্বাসের সঙ্গে শুধু অক্সিজেন বা নাইট্রোজেন আমাদের শরীরে প্রবেশ করে না। জীবাণু, বাতাসের নানা ধরনের দূষিত পদার্থও শরীরের ভিতরে বাসা বাঁধে। এই দূষিত পদার্থগুলি ব্রঙ্কাসের মিউকাস মেমব্রেন বা ঝিল্লিকে উত্তেজিত করে। সেই কারণে প্রদাহ তৈরি হয়।’’ ফুসফুসরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবরাজ যশ বলছেন, ‘‘ব্রঙ্কাইটিসকে এখন সাধারণত সিওপিডি (ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস) বলা হয়। তবে ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস বা অ্যাকিউট ব্রঙ্কাইটিস এক বিষয় নয়। যখন তিন সপ্তাহের মধ্যে রোগীর নানা উপসর্গ দেখা যাচ্ছে, সেটি অ্যাকিউট। তার বেশি সময় ধরে সমস্যা থাকলে, বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে এবং সেটি ক্রনিকের দিকে এগোতে পারে।’’

ভাইরাস বা ব্যাকটিরিয়ার সংক্রমণের কারণে ব্রঙ্কাইটিস হতে পারে। ধুলো-ধোঁয়া থেকেও এটি হতে পারে। পাশাপাশি কেমিক্যাল ইরিটেশন-এর কারণে প্রদাহ হতে পারে। চিকিৎসকদের কথায়, ব্রঙ্কাইটিসের কেমিক্যাল ইরিটেশনজনিত কারণের মধ্যে একটি বড় কারণ ধূমপান। কারণ সিগারেট-বিড়ির অনেক ক্ষতিকর উপাদান শ্বাসনালিতে প্রদাহ তৈরি করতে পারে।

উপসর্গ

সাধারণত কাশি-জ্বরের যে উপসর্গ দেখা যায়, তা-ই ব্রঙ্কাইটিসে খানিক বেড়ে যায়। গলা ধরে থাকা, গলায় কিছু আটকে থাকার অস্বস্তিকর অনুভূতি, যা হয়তো কাশিতেও প্রশমিত হচ্ছে না— এমন উপসর্গ দেখা যায়। কাশির সঙ্গে সাদা পদার্থ বেরোতে পারে, না-ও বেরোতে পারে। এর সঙ্গে জ্বরের মতো উপসর্গ থাকবেই। শ্বাসকষ্ট হতে পারে। ডা. যশের মতে, করোনার কারণে যে সর্দির উপসর্গগুলো দেখা যায়, তার সঙ্গে ব্রঙ্কাইটিসের পার্থক্য রয়েছে। করোনার কারণে লাংস বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইনফ্লুয়েঞ্জা জাতীয় রোগে শ্বাসনালি বেশি আক্রান্ত হয়। যার ফলে ব্রঙ্কাইটিসের সমস্যা ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগীদের বেশি দেখা যায়।

ডা. ভট্টাচার্য সতর্ক করে দিচ্ছেন, ‘‘ব্রঙ্কাইটিসের সঙ্গে যদি ডায়াবিটিস থাকে, তবে রোগীর অবস্থা আরও গুরুতর হতে পারে। কারও যদি ফুসফুসের রোগ থাকে, তার ব্রঙ্কাইটিস হলে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হতে পারে। কিন্তু কারও ফুসফুসের রোগের ইতিহাস নেই, সে ক্ষেত্রে হয়তো বিষয়টা ততটাও গুরুতর নয়।’’

ব্রঙ্কাইটিস রোগের কি পরীক্ষা হয়?

ব্রঙ্কাইটিস ডায়াগনোসিস করার পরীক্ষা হয় না। সাধারণত চিকিৎসকেরা স্টেথো লাগিয়ে রোগ হয়েছে কি না, বুঝতে পারেন। এটা ক্লিনিক্যাল ডায়াগনোসিস। তবে ক্ষেত্রবিশেষে বুকের এক্স রে করা হয়। লাংসে নিউমোনিয়া আছে কি না বা কোনও খারাপ কারণে ব্রঙ্কাইটিস হয়েছে কি না, তা বোঝার জন্য পরীক্ষা করা হয়। তবে চিকিৎসকদের মতে, রক্ত পরীক্ষা বা এক্স রে-র রিপোর্টে সাধারণত অস্বাভাবিকতা দেখা যায় না এই রোগে। রিজ় (গলার ভিতরে সাই সাই আওয়াজ) শুনে চিকিৎসকেরা রোগের গুরুত্ব বুঝতে পারেন।

ব্রঙ্কাইটিসে অ্যান্টি-বায়োটিক দরকারি?

ডা. যশের মতে, ‘‘ব্রঙ্কাইটিস সারাতে অ্যান্টি-বায়োটিকের তেমন ভূমিকা নেই।’’ যত কম অ্যান্টি-বায়োটিক ব্যবহার করা হয়, তত ভাল। ব্রঙ্কাইটিস নিজে নিজেই সেরে যায়। কিন্তু তিন সপ্তাহের পরেও যদি কাশি থেকে যায়, তবে কী করা উচিত? চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, ইনহেলার নেওয়া যেতে পারে। গরম জলে ভাপ নেওয়া যেতে পারে। তিন সপ্তাহের বেশি সময় হয়ে গেলে, তখন ফুসফুসরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখাতে হবে। কাশির সিরাপ যতটা কম খাওয়া যায়, ততই ভাল।

সিওপিডি রোগী বা অ্যাজ়মা রোগীদের এই রোগ হওয়ার প্রবণতা বেশি। রাতে বেশি কাশি হতে পারে এই রোগীদের। তার জন্য ভাপ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

ব্রঙ্কাইটিস হলে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। তবে সমস্যা সারছে না কি রয়ে যাচ্ছে, সেই বিষয়ে রোগীকে সতর্ক থাকতে হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Acute Bronchitis Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy