Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

পরপর শিশুমৃত্যু নিয়ে তদন্ত দাবি

শিশুমৃত্যুর ঘটনার তদন্তের দাবি জানাতে গিয়ে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে সুপারকে না পেয়ে তাঁর ঘরের দরজার বাইরে স্মারকলিপি সেঁটে প্রতিবাদ জানাল কংগ্রেস। সোমবার এই ঘটনাকে ঘিরে হাসপাতাল চত্বরে সাময়িক উত্তেজনাও ছড়ায়। তবে হাসপাতালের সহকারী সুপার তাঁদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। শিশুমৃত্যু অবশ্য অব্যাহত রয়েছে হাসপাতালে। সূত্রের খবর, শনিবার বেলা ১২টা থেকে রবিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত সাত নবজাতকের মৃত্যু হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৫ ০১:১৬
Share: Save:

শিশুমৃত্যুর ঘটনার তদন্তের দাবি জানাতে গিয়ে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে সুপারকে না পেয়ে তাঁর ঘরের দরজার বাইরে স্মারকলিপি সেঁটে প্রতিবাদ জানাল কংগ্রেস। সোমবার এই ঘটনাকে ঘিরে হাসপাতাল চত্বরে সাময়িক উত্তেজনাও ছড়ায়। তবে হাসপাতালের সহকারী সুপার তাঁদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।

শিশুমৃত্যু অবশ্য অব্যাহত রয়েছে হাসপাতালে। সূত্রের খবর, শনিবার বেলা ১২টা থেকে রবিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত সাত নবজাতকের মৃত্যু হয়েছিল। রবিবার বেলা ১২টা থেকে সোমবার বেলা ১২টা অবধি হাসপাতালে আরও তিন সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়েছে। এ দিন যে তিনটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে দু’টি হাসপাতালে ও একটি বাইরে জন্মেছিল। তবে প্রত্যেকেরই ওজন অত্যন্ত কম ছিল বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপার নীলাঞ্জনা সেন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত ৫ জুন থেকে ১৪ জুন—এই দশ দিনে ৩১ সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। এদের বেশির ভাগেরই ওজন খুব ছিল (অর্থাৎ প্রিম্যাচিওর বা এক্সট্রিম প্রিম্যাচিওর বেবি)। তা ছাড়া, সংক্রমণ, জন্মগত শ্বাসকষ্ট, জন্ডিস ইত্যাদি সমস্যার শিকার ছিল এই নবজাতকেরা। পাশাপাশি হাসপাতালে নবজাত শিশুর পরিচর্যা কেন্দ্রে শয্যা খালি না থাকার কারণে এদের অনেককে চেষ্টা করেও সেখানে ভর্তি নেওয়া যায়নি বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে।

কেন পরপর শিশুমৃত্যু হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে এ দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস। জেলা কংগ্রেসের এক প্রতিনিধি দল এবং দলের বেশ কিছু কর্মী-সমর্থক এ দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ হাসপাতালের সুপারের কাছে এই দাবি জানাতে যান। ছিলেন পুরুলিয়ার কাউন্সিলর বিভাসরঞ্জন দাস, রবিশঙ্কর দাস প্রমুখ। তাঁরা সুপারের ঘরে গিয়ে দেখেন সুপার ঘরে নেই। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকও কলকাতায় বৈঠকে রয়েছেন। সুপারের ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বিভাসবাবু বলতে থাকেন, ‘‘আমরা তদন্ত চাইছি পুরুলিয়ার স্বার্থেই। কিন্তু সেই দাবি কে নেবেন।’’ কংগ্রেসের এই কর্মসূচিকে ঘিরে কড়া পুলিশি নিরাপত্তা ছিল হাসপাতালে। সুপারকে না পেয়ে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা যান সহকারী সুপার শান্তনু মুখোপাধ্যায়ের ঘরে। সুপার অবশ্য হাসপাতালেই অন্য কাজে ছিলেন। শান্তনুবাবু কংগ্রেস নেতাদের হাত থেকে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। কর্মীরা এর পর সরাসরি সুপারের ঘরের দরজায় গিয়ে স্মারকলিপি সেঁটে দেন।

বিভাসবাবু বলেন, ‘‘সুপারের কাছেই আমরা শিশুমৃত্যুর তদন্তের দাবি নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের স্মারকলিপি নিলেন না। এই দাবি যাতে তাঁর নজর না এড়িয়ে যায়, তাই আমরা তাঁর ঘরের দরজায় এই স্মারকলিপির কপি সেঁটে দিলাম।’’ তিনি জানান, পুরুলিয়ার নবজাত শিশুর পরিচর্যা কেন্দ্রটি রাজ্যের মডেল। সেখানে পরপর এত শিশুমৃত্যু ঘটছে কেন, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। কংগ্রেসের দাবি, প্রয়োজনে রাজ্যে স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা এখানে এসে সরজমিন তদন্ত করুন। স্মারকলিপির কপি তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও পাঠাচ্ছেন। সহকারী সুপার বলেন, ‘‘স্মারকলিপি সুপারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’’ তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি প্রসঙ্গে সুপার নীলাঞ্জনা সেন পরে বলেন, ‘‘কাল শিশু বিভাগের চিকিৎসকদের নিয়ে বৈঠকে বসছি। সেখানেই বিষয়টি ঠিক হবে।’’ এ দিন বিকেলে সিপিএমের পুরুলিয়া শহর জোনাল কমিটির পক্ষ থেকেও শিশুমৃত্যুর ঘটনার তদন্তের দাবিতে সুপারকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। জোনাল সম্পাদক কৌশিক মজুমদার বলেন, ‘‘আমরা সুপারের কাছে পরপর শিশুমৃত্যুর তদন্ত দাবি করেছি।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy