Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

কোভিডের অ্যান্টিবডি শরীরে? বোঝা যাবে এই লক্ষণগুলি থেকে

এই লক্ষণগুলি শরীরে দেখা গেলেবোঝা যাবে, শরীরে ভাল মাত্রায় অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।

কী দেখে বোঝা যাবে, কার শরীর কোভিডের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য কোন জায়গায় রয়েছে?

কী দেখে বোঝা যাবে, কার শরীর কোভিডের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য কোন জায়গায় রয়েছে?

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:৩৯
Share: Save:

কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা সকলের সমান নয়। কারও অ্যান্টিবডির পরিমাণ বেশি, কারও বা তলানিতে। কিন্তু কী দেখে বোঝা যাবে, কার শরীর কোভিডের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য কোন জায়গায় রয়েছে? আমেরিকার ভিসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদলের দেওয়া তথ্য এই বিষয়েই নতুন করে আলোকপাত করেছে। হালে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রে চারটি লক্ষণের কথা বলা হয়েছে। এই লক্ষণগুলি শরীরে দেখা গেলেবোঝা যাবে, শরীরে ভাল মাত্রায় অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।

আমেরিকার ১১৩ জন কোভিড-আক্রান্তের লক্ষণ দেখে গবেষণার সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন দলের সদস্যরা। তাঁদের কথায়, যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে কোভিডের চিকিৎসা করান, তাঁদের শরীরে অ্যান্টিবডির পরিমাণ অনেকটাই বেশি থাকে। যাঁরা বাড়িতে থেকে চিকিৎসা করান, তাঁদের শরীরে সেই অ্যান্টিবডির পরিমাণ তুলনায় কম থাকে। এ ছাড়াও বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে, যা দেখে বোঝা যাবে, শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা কেমন। যেমন, জ্বর বা পেটের গণ্ডগোল থাকলে তার অর্থ, আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর অ্যান্টিবডি তৈরি করছে। কিন্তু শ্বাসকষ্ট আর গন্ধ না পাওয়ার লক্ষণ মানেই, আক্রান্তের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরির মাত্রা খুবই কম।

শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বা অ্যান্টিবডির মাত্রা বেশি কিনা, তা বোঝার জন্য যে চারটি লক্ষণের দিকে খেয়াল রাখতে হবে বলে গবেষকরা জানাচ্ছেন, সেগুলি হল:

জ্বর: শরীরে যে কোনও ধরনের সংক্রমণ হলেই জ্বর আসে। কারণ শরীর নিজের উত্তাপ বাড়িয়ে সেই রোগের সঙ্গে লড়াই করার চেষ্টা করে। কোভিডের ক্ষেত্রেও তাই। পাশাপাশি, ভিসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, কোভিডের সময় শরীর যখন উত্তাপ বাড়িয়ে ফেলে, তখন সে দ্রুত হারে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। ‘শরীরের কোথাও প্রদাহ হলেই জ্বর আসবে। কিন্তু কোভিডের ক্ষেত্রে প্রচণ্ড দ্রুত হারে অ্যান্টিবডি তৈরির সময়ও উত্তাপ বেড়ে যায়’, বলছে এই গবেষণা। ফলে যে সব কোভিড-আক্রান্তরা জ্বরে ভুগেছেন, তাঁদের অনেকেরই শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা বেশি বলে দাবি করা হচ্ছে এই গবেষণাপত্রে।

যে সব কোভিড-আক্রান্তরা জ্বরে ভুগেছেন, তাঁদের অনেকেরই শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা বেশি বলে দাবি করা হচ্ছে একটি গবেষণাপত্রে।

খিদে কমে যাওয়া: যে কোনও ধরনের সংক্রমণেই খিদে কমে যায়। কোভিডের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। খিদে কমে যাওয়ার মানেও শরীর দ্রুত হারে অ্যান্টিবডি তৈরি করছে। তাই জ্বরের পাশাপাশি যদি কোনও কোভিড-আক্রান্ত খিদে কমে যায়, তা হলে ধরে নেওয়া যেতে পারে, তাঁর শরীর লড়াই করার জন্য বেশি পরিমাণে প্রস্তুত হচ্ছে। এমনটাই বলছে এই গবেষণাপত্র।

পেটের গন্ডগোল: ডায়েরিয়া বা পেটের গন্ডগোল কোভিডের অন্যতম লক্ষণ, এ কথা এখন অনেকেই জানেন। যদিও ভিসকনসিনের গবেষকদল বলছে, এই লক্ষণের বহু ক্ষেত্রেই অর্থ হল শরীরে বেশি পরিমাণে অ্যান্টিবডি। তাঁরা পরিসংখ্যান দিয়ে দেখিয়েছেন, যে সমস্ত কোভিড-আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি হন, তাঁদের পেটের গন্ডগোল সাধারণত বাড়ে না। কিন্তু যাঁরা বাড়িতেই চিকিৎসা করান, তাঁদের ক্ষেত্রে পেটের সমস্যা বাড়তে পারে। এর পিছনে কাজ করে বিপুল পরিমাণে অ্যান্টিবডির উৎপাদন। অর্থাৎ কোভিডের মধ্যে পেটের গন্ডগোল থাকলে ধরে নেওয়া যায়, শরীর অ্যান্টিবডি তৈরি করছে।

পেট ব্যথা: ডায়েরিয়া বা পেটের গন্ডগোলের মতোই পেট ব্যথার মানেও শরীর বিপুল পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি করছে। এমনটাই জানাচ্ছেন গবেষকরা। যদিও তাঁদের মতে, এই বিষয়ে আরও গবেষণার দরকার, তবেই একটা সুসংহত সিদ্ধান্তে পৌঁছন যাবে বলে মত তাঁদের।

চিকিৎসকের কথায়: জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী অবশ্য বলছেন, ভিসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দেওয়া তথ্য পৃথিবীর সব প্রান্তের মানুষের ক্ষেত্রেই খাটবে, এমন ধরে নেওয়ার কারণ নেই। তাঁর কথায়:‘‘এই গবেষণা এখনও পর্যন্ত চালানো হয়েছে শুধুমাত্র আমেরিকার মানুষের উপর। পৃথিবীর অন্য প্রান্তের কোভিড আক্রান্তদের ধরে যখন একই ধরনের পরিসংখ্যান নেওয়া হবে, তখনই বোঝা যাবে এই দাবিগুলিরকতটা সকলের ক্ষেত্রে সত্যি। তবে যে লক্ষণগুলির কথা আমেরিকার গবেষকরা বলেছেন, সেগুলোর অনেকগুলোই সংক্রমণের সঙ্গে শরীরের লড়াই করার প্রাথমিক লক্ষণ বলেও মত সুবর্ণ গোস্বামীর। যত গবেষণা এগোবে, ভবিষ্যতে এ বিষয়টি তত বেশি করে পরিষ্কার হবে বলেও মনে করছেন তাঁর।

আরও পড়ুন: উপকারের সঙ্গেই কি ক্ষতি করছে জীবাণুনাশক স্প্রে?

আরও পড়ুন: হঠাৎ বুকে অস্বস্তি হলে কী করবেন​

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Symptoms Fever
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE