Advertisement
E-Paper

Covid Hero: অক্সিজেনের সঙ্কট হোক বা হাসপাতালের সন্ধান, প্রয়োজনে পাশে আছে পলতার প্রিন্সি

কোন করোনা রোগীর অক্সিজেন প্রয়োজন, কার হাসপাতালে শয্যা দরকার— খেয়াল রাখছেন কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী প্রিন্সি দে। ফোনে ফোনেই ব্যবস্থা করছেন সে সবের।

ফোনে ভর্তি হাসপাতাল-অ্যাম্বুল্যান্স থেকে চিকিৎসকের নম্বর। তা নিয়েই করোনা আক্রান্তদের পাশে থাকছেন প্রিন্সি দে।

ফোনে ভর্তি হাসপাতাল-অ্যাম্বুল্যান্স থেকে চিকিৎসকের নম্বর। তা নিয়েই করোনা আক্রান্তদের পাশে থাকছেন প্রিন্সি দে। ফাইল চিত্র

সুচন্দ্রা ঘটক

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২১ ০৯:০২
Share
Save

এখন তাঁর একুশ বছর। বন্ধুদের কেউ কেউ তাঁর থেকেও ছোট। সেই তাঁদেরও সঙ্গে নিয়ে, দিনরাত এক করে কোভিডের সঙ্গে লড়ে চলেছেন প্রিন্সি দে। কখন কার অক্সিজেনের প্রয়োজন, কার হাসপাতালে শয্যা দরকার— খেয়াল রাখছেন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের এই ছাত্রী। গত একমাস ধরে অক্লান্ত এই ব্যবস্থাপনায় তাঁর হাতিয়ার একটি মুঠোফোন। পলতার বাড়িতে বসে, এর মাধ্যমেই রোজ বাংলার নানা প্রান্তের কোভিড রোগী ও তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এই মেয়ে।

মুম্বইয়ে কলেজ। অতিমারির কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ। বাড়ি থেকে চলছে অনলাইন ক্লাস। আর তার মধ্যেই রোজ খবরের কাগজ, টেলিভিশনের পর্দায় করোনায় আক্রান্তদের দুর্দশার কথা জেনে নিচ্ছেন।

মাস খানেক আগে মনে হয়, নিজের সাধ্যমতো মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। যৌথ পরিবারে থাকেন প্রিন্সি। ঠাকুরমা-ঠাকুরদাদার বয়স হয়েছে যথেষ্ট। এমন সঙ্কটের সময়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে বেশি কাজ করার ঝুঁকি নিতে চান না। তবে ইচ্ছা থাকলে উপায় বেরিয়ে আসে। নেটমাধ্যমে কারও সঙ্কটের কথা জানতে পারলে একাই সাহায্য করার চেষ্টা শুরু করেন। কখনও কোভিড আক্রান্তের বাড়িতে খাবার-ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। কখনও অক্সিজেন সিলিন্ডারের জোগান আছে কি না, তার খোঁজ দেন রোগীর পরিবারকে। সাহায্যের হাত বাড়াতেই, পাশে পেয়েছেন অনেককে। এগিয়ে এসেছেন তাঁর বন্ধুরাও। এখন বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে এই কাজ করছেন। পশ্চিমবঙ্গের নানা প্রান্তের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছেন। ওঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন অঞ্চলের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও। কোনও করোনা রোগীর যদি মাঝরাতে হাসপাতালে শয্যা প্রয়োজন হয় বা তাঁকে নিয়ে যাওয়ার অ্যাম্বুল্যান্স দরকার হয়, প্রিন্সির কাছে ফোন আসে। প্রিন্সি ও তাঁর বন্ধুরা নেটমাধ্যমেও জানিয়ে দেন কোথায়, কী দরকার। এ ভাবেই বহু রোগীকে ওঁরা হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছেন। অক্সিজেনের আকালের মধ্যেও যতটা পেরেছেন, সাহায্য করেছেন করোনা রোগীদের।

এখনও দিনে ৩০-৪০টা করে ফোন আসে প্রিন্সির কাছে। কারও ওষুধ প্রয়োজন, কারও বাড়িতে বাজার করার মতোও কেউ সুস্থ নেই। একে একে সেই এলাকার অন্যদের খুঁজে বার করেন এই কলেজপড়ুয়া। একটি যোগাযোগের তালিকা তৈরি করেছেন তিনি। তাতে রয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ ফোন নম্বর। সেই তালিকা দেখেই যোগাযোগ করেন সংশ্লিষ্ট এলাকায় সাহায্য করার মতো যিনি আছেন, তাঁর সঙ্গে। এখন পরিচিতি বেড়ে গিয়েছে প্রিন্সির। আরও লম্বা হয়েছে তালিকাটি। ফলে বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছতে পারছেন।

এই কাজ করতে পেরে কি ভাল লাগছে প্রিন্সির? বলছেন, ‘‘কারও প্রয়োজনের সময়ে পাশে দাঁড়াতে পারলে ভাল লাগে। যখন অনেক চেষ্টা করেও হাসপাতালে শয্যার ব্যবস্থা হয় না বা হাসপাতালে পাঠিয়েও বাঁচানো যায় না রোগীকে, তখন আবার মন খারাপ হয়। তবে এখন তো মন খারাপ করলে চলবে না। ঘরে ঘরে সঙ্কট। যত সম্ভব কাজ করে যেতে হবে।’’ সে কারণেই সারা রাত ফোন চালু রাখেন প্রিন্সি।

এমন কাজে নেমে দ্বিতীয় ঢেউয়ের ভয়াবহতার কথা ভালই টের পেয়েছেন এই কলেজপড়ুয়া। তাঁর বয়সের অনেকেই যখন শুধু লেখাপড়ায় ডুবে, তখন এক প্রাক্তন সেনা অফিসারের এই মেয়ে ফোনে ফোনেই জেনে নিচ্ছেন কত কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করছে বহু পরিবার। এখন সেই পরিস্থিতি কেমন? সঙ্কট কি ধীরে ধীরে কাটছে বলে মনে হচ্ছে তাঁর? প্রিন্সি জানান, আগের সপ্তাহ পর্যন্ত ফোনের বন্যা বয়ে যেত। নাওয়া-খাওয়ার সময় পর্যন্ত পেতেন না। এখন সেই সংখ্যাটা যেন সামান্য কমেছে।

এমন ছোট বয়সে এই গুরু দায়িত্ব পালন! বাবা-মা লেখাপড়ায় মন দিতে বলছেন না? প্রিন্সির উত্তর, ‘‘এই প্রথম সারা দিন ফোনে কথা বললেও বকুনি দিচ্ছেন না বাড়ির বড়রা। এমনকি, বাবা নিজেই জানতে চাইছেন ফোনে আবার টাকা ভরে দেবে কি না।’’

crisis management seek help Coronavirus in West Bengal COVID-19 Volunteers

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।