ছবি: পিক্সাবে।
করোনার উগ্রতা বাড়ছে দিনে দিনে। কিন্তু তা বলে তো আর দিনের পর দিন ঘরে বসে থাকা যাবে না! অফিস খুলছে, অন্য কাজকর্মও আছে। বাস-ট্রাম-অটোয় উঠতে হবে। সব সময় ৬ ফুট দূরত্ব যে থাকবে না, তা বাস্তব। কাজেই মাস্ক, স্যানিটাইজার ইত্যাদির পাশাপাশি এমন কিছু চাই যা ভিতর থেকে সুরক্ষা দেবে।
সুষম খাবারে সে গুণ আছে অবশ্যই। তাও আজকের পরিপ্রেক্ষিতে চাই আরও একটু বেশি। সে রসদ লুকিয়ে আছে আমাদের সুপ্রাচীন ভেষজ উপাদানের মাঝেই।
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন 'ওজো' অর্থাৎ চেহারার উজ্জ্বলতা থেকেই বোঝা যায় মানুষটি শরীরে-মনে কতটা ভাল আছেন। তাঁর রোগ প্রতিরোধ শক্তি কতটা কার্যকর। ওজো বাড়ানোর অঢেল উপাদান আছে তাঁদের ভাঁড়ারে, যা নিয়মিত খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি হয়ে জীবাণুর সঙ্গে লড়াইয়ের ক্ষমতা বাড়ে। কোষের ভাঙচুর কমে, কমতে থাকে বিভিন্ন ক্রনিক অসুখ। ডায়াবিটিস-হাই প্রেশার, কোলেস্টেরল, হৃদরোগ, মেদবাহুল্য, মানসিক অশান্তি-উদ্বেগ-অবসাদ ইত্যাদির প্রবণতাও কমে। এরা প্রত্যেকেই কোভিড-১৯-এর জটিলতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। উপরি পাওনা উজ্জ্বল ত্বক-চুল এবং চেহারায় বয়সের ছাপ কম পড়া।
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ দেবাশিস ঘোষ জানিয়েছেন, “ঘরে কম তেলে বানানো সুষম খাবার খাবেন চার বেলা। তার সঙ্গে খাবেন একটি বিশেষ পানীয়, সকালে খালি পেটে। তবে আগে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জেনে নেবেন, এই সব উপাদানে আপনার কোনও ক্ষতি হবে কি না। যদিও তার আশঙ্কা নেই বললেই চলে। এর পাশাপাশি হালকা ব্যায়াম করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে দিনে দিনে। বাড়বে জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা।”
আরও পড়ুন: করোনার ভয়ে হাসপাতাল এড়িয়ে অন্য রোগকে আশকারা দেবেন না
কী ভাবে বানাবেন এই পানীয়
সারা রাত ভিজিয়ে রাখা ১০টা আমন্ড ও ৫টা খেজুরের সঙ্গে মেশান আধ চামচ কাঁচা হলুদ বাটা, এক চিমটে এলাচ গুঁড়ো, এক চা-চামচ ভাল ঘি ও এক কাপ দুধ। ভাল করে মিক্সিতে ফেটিয়ে এক চামচ মধু মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেয়ে নিন।
উপকার
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে, চেহারা উজ্জ্বল হবে, তার পাশাপাশি হবে আরও অনেক উপকার।
১) আমন্ডে আছে প্রচুর পরিমাণে উপকারি ফ্যাট, প্রোটিন, ভিটামিন ই, ভিটামিন বি২ এবং ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, ফসফরাসের মতো উপকারী খনিজ। নিয়মিত খেলে কোষের ক্ষতির হার কমে যায়। ফলে ডায়াবিটিস-হাই প্রেশার ও কোলেস্টেরল, হৃদরোগ, মেদবাহুল্য, মানসিক উদ্বেগ-অবসাদ ইত্যাদির মতো ক্রণিক অসুখের প্রবণতা কমে।
২) খেজুরে আছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি৬, প্রোটিন, ফাইবার, আয়রন ও আরও নানা রকম খনিজ। আছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা কোষের ক্ষতির হার কমিয়ে কমায় সব ধরনের ক্রনিক অসুখের প্রবণতা। মস্তিস্ক সজাগ রাখে। ভাল থাকে হাড়ও।
৩) হলুদ জীবাণুনাশক। প্রদাহের প্রবণতা কম রাখে।
৪) এলাচও তাই। সঙ্গে আছে শ্বাসপ্রশ্বাসে সহায়তা করার গুণ।
৫) ঘি-কে সাধারণ ভাবে আমরা ভিলেন ভেবে থাকি, কিন্তু আসলে তা নয়। ভিটামিন ডি ও ই হল ফ্যাট সলিউবল ভিটামিন। অর্থাৎ শরীরে কিছুটা ফ্যাটের জোগান না থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর এই দুই কারিগর ঢুকতেই পারে না শরীরে। শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিকঠাক রাখতেও দিনে ছোট এক চামচ ঘি-এর বিরাট অবদান আছে। সে জন্য চিকিৎসকরা হৃদরোগীদেরও অল্প ঘি খাওয়ার পরামর্শ দেন। মাত্রা রেখে খেলে ওজনও কমে।
৬) মধু এনার্জি দেয়। সকালে যা একান্ত প্রয়োজন। তার উপর চিনির অপকার নেই এতে। উল্টে মাত্রা রেখে খেলে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট গুণের জন্য খারাপ কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করতে পারে হোমিয়োপ্যাথি ওষুধ
করোনা ঠেকাতে যেমন নিয়ম মানছেন, তা মানতে হবে। সুষম খাবারও খেতে হবে।একটু বেশি উপকার পেতে হাত বাড়ান আমাদের চিরাচরিত বনৌষধীর দিকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy