শীতের পোশাক স্যানিটাইজেশন।—প্রতীকী ছবি
অতিমারি আমাদের মনে একটা ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে। যে কোনও মুহূর্তে করোনা সংক্রমিত হওয়ার ভয়। আর সেই ভয় থেকেই আমাদের রোজের জীবনে ঢুকে পড়েছে কতগুলো বাড়তি কাজ। মাস্ক পরে স্যানিটাইজার নিয়ে বেরনোর মতোই বাড়ি ফিরে আগাপাশতলা সাফসুতরো করার কাজ।
জীবিকার প্রয়োজনে নিয়ম করে বাড়ি থেকে বেরতে হচ্ছে প্রায় সবাইকেই। বাড়ি থেকে কাজের পাট চুকিয়ে উঠতে হচ্ছে বাস-ট্রাম-ট্রেনে। স্পর্শ বাঁচাতে চাওয়া আর শত চেষ্টাতেও সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বাড়ি ফিরে রোজই জমছে কাজের পাহাড়। দীর্ঘ স্যানিটাইজেশন প্রক্রিয়া। প্রথমে নিজের। পরে জামা কাপড়ের। সময়টা শীতকাল বলে শরীরে পোশাকের পরতও বেশি। সে সব পরিষ্কার করতে গিয়ে আর মুঠোয় ধরা যাচ্ছে না সময়কে। ঘরের থেকে স্নানঘর বা লন্ড্রি রুমেই ঢুকে যাচ্ছে দিনের কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ ঘণ্টা।
উপায় কী? ঝুঁকি নিয়ে বাইরের জামা কাপড় স্যানিটাইজ না করে ফেলে রাখবেন যে, তার ভরসা কীসে! জামাকাপড়ে এই ভাইরাস কতক্ষণ লুকিয়ে বসে থাকবে সে তথ্য কোথায় জানা যাবে। জবাব দিলেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী।
আরও পড়ুন : শীতে চিন্তামুক্ত হয়েই খান কফি, এড়িয়ে চলুন সাপ্লিমেন্ট
১। যে কোনও অতিছিদ্রসম্পন্ন তলে বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারে না এই ভাইরাস। মসৃন তলেই এর স্বাচ্ছন্দ বেশি। কেন?
তার কারণ, ভাইরাস কাশি বা হাঁচি থেকে নিসৃত ড্রপলেটের সাহায্যেই আটকে থাকে যে কোনও তলে। আর এই ড্রপলেট বা মিউকাস অতিছিদ্রসম্পন্ন তলে বেশিক্ষণ থাকতে পারে না। কারণ, ড্রপলেট বা মিউকাস থেকে অতিছিদ্রসম্পন্ন তল টেনে নেয় সমস্ত জলীয় পদার্থ। আর ড্রপলেটের জল ছাড়া এই ভাইরাস বেশিক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে না
যে কোনও ধরনের কাপড় তা শীতের পোশাক হোক বা সাধারণ কাপড়ের রয়েছে অতিচ্ছিদ্র সম্পন্ন তল। তাই যেকোনও কাপড়েই বেশিক্ষণ থাকতে পারে না ভাইরাস।
২। বিশিষ্ট ভাইরোলজিস্ট সুবর্ণ গোস্বামী জানাচ্ছেন, কাপড়ে বড়জোর ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকতে পারে ভাইরাস। গরম জামায় রোঁয়া বেশি বলে অনেকেই মনে করতে পারেন, যে ভাইরাসের জড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু, তা হলেও ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টার বেশি ড্রপলেট থাকতে পারবে না। তাই ভাইরাসও থাকবে না।
তবে বেশি নিশ্চিত হতে চাইলে শীতকালে দু’সেট গরম জামাই যথেষ্ট। একটা পরার ২৪ ঘণ্টা পর সেটা আবার পরা যেতে পারে ভাইরাসের ভয় ছাড়াই।
তবে যদি কারও দু’সেট জামা কাপড়েও সমস্যা থাকে তবে তিনি ওই জামাটিই ইস্ত্রি করে নিতে পারেন। গরম কিছুর সংস্পর্শে এলে শুকিয়ে যাবে ড্রপলেট। নষ্ট হবে ভাইরাস। অথবা রোদে ঘণ্টাখানেক রাখলেও চলবে। তাতেও ড্রপলেট শুকিয়ে শেষ হবে ভাইরাস।
আরও পড়ুন : কোভিডের নতুন স্ট্রেন ধরা পড়ার মতো কিট কি এ দেশে আছে?
৩। সে ক্ষেত্রে এই ধরনের জামাকাপড় বাড়িতে রাখবেন কী ভাবে? ১২-১৩ ঘণ্টা ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া রুখবেন কী ভাবে? ‘‘বা়ড়িতেই একটা আলাদা জায়গা বানান। যেখানে বাইরের জামা কাপড় আলাদা করে কারও স্পর্শ থেকে দূরে সরিয়ে রাখা যায়। ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা পর সরিয়ে নিতে পারেন সেখান থেকে।’’ পরামর্শ, সুবর্ণর।
তবে প্লাস্টিক বা ধাতব জিনিস সম্পর্কে সতর্ক হতে হবে। আমাদের জামাকাপড়ে অনেক সময়ই এ ধরনের জিনিসও ব্যবহার করা হয়। সে ক্ষেত্রে আলাদা করে নির্দিষ্ট জায়গাটি স্যানিটাইজ করে নিলে সুরক্ষা নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। কারণ প্লাস্টিক বা ধাতব তলে অন্তত ৫ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে এই ভাইরাস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy