পটাস জলে পরিষ্কার করে নিতে পারেন ফল বা সব্জি। ছবি: শাটারস্টক
‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ মিলেছে কারও। অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবায় যুক্ত হওয়ায় কারও বা অফিস যেতে হচ্ছে রোজই। কাজের রুটিন যা-ই থাক, করোনা আবহে সবথেকে বড় চিন্তা স্যানিটাইজেশন। সাবান বা জীবাণুনাশক হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে কচলে হাত ধুলে হাতের তালুর প্রায় ৯০-৯৫ শতাংশ জীবাণুকে তো মেরে ফেলছেন, কিন্তু বাইরে থেকে আসা ফল বা সব্জি ধোওয়ার ক্ষেত্রে কী করবেন? তা থেকে সংক্রমণ হতে পারে কি?
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, ফল বা সব্জি ধোওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করাই ভাল। তবে আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। সংক্রমণ এড়াতে বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে চললেই হবে।
১. যে সমস্ত ফল বা সব্জি কয়েক দিন রেখে ব্যবহার করা যায়, যেমন আলু, পেঁয়াজ, আদা, নারকেল, ন্যাসপাতি ইত্যাদি, এ জাতীয় জিনিসগুলি বাজার থেকে এনে বাইরে কোনও খোলা জায়গায় দিন চারেক রেখে দিতে পারলে ভাল।
আরও পড়ুন: কোভিডে সহায়ক চিকিৎসাতেই সুস্থতা, জেনে নিন কোনটা প্রয়োজন কোনটা নয়
২. কোনও কোনও ক্ষেত্রে সব্জি সাবান জলে ধুয়ে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে শুকনো করে মুছে রেখে দিতে হবে।
৩. অনেক সব্জির ক্ষেত্রে আবার সাবান জলে অন্যরকম প্রতিক্রিয়া হয়। সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে সুবিধাজনক হল পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দ্রবণ বা পটাস জলে সব্জি ধুয়ে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে রেখে দেওয়া।
৪. সব্জি ধোওয়ার আগে নিজের হাত ভাল করে সাবান দিয়ে কচলে ধুয়ে নিতে হবে। সাবান বা জীবাণুনাশক হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে কচলে হাত ধুলে হাতের তালুর প্রায় ৯০-৯৫ শতাংশ জীবাণু মরে যায়। তার পর সব্জি ধুতে হবে।
৫. পেঁয়াজ, আলু, আপেল, কমলালেবু, আদা, আম, গাজর, মুলো, বিট জাতীয় ফল-সব্জির ক্ষেত্রে খোসা ছাড়ানো খুবই সহজ। এই ধরনের খাবার ভাল করে ধুয়ে নেওয়ার পর খোসা ছাড়িয়ে আবার জলে ধুয়ে নিন।
আরও পড়ুন: জ্বরের মধ্যে দাঁত মাজতে গিয়ে রক্ত? ডেঙ্গি হেমারহেজিক ফিভার নয় তো
আর কী মনে রাখতে হবে
বাজার থেকে সব্জি নিয়ে এলে
• বাড়ির বারান্দায় বা ফ্ল্যাট হলে দরজার মুখেই দু’টি বালতি রেখে দিন। একটি ফাঁকা বালতি থাকবে। একটি মগে সাবান জল থাকবে। সাবান জল বা পটাস জল থাকবে একটি বালতিতেও। মগের সাবান জল দিয়ে হাত ধুয়ে নিয়ে ফাঁকা বালতিতে ফেলুন। মগটি যেখানে ধরেছেন সেটিও সাবান জলে পরিষ্কার করে নিন। অন্য বালতিতে থাকা পটাস জল বা সাবান জল দিয়ে সব্জি পরিষ্কার করে কাপড় দিয়ে মুছে নিন।
• বাজারে কাপড়ে ব্যাগ ব্যবহার করুন, যাতে সেটি সাবান দিয়ে সম্পূর্ণ কেচে নেওয়া যায়।
বাজার থেকে এনে পরিষ্কার করলেও ব্যবহারের আগে আবারও রানিং ওয়াটারে ধুয়ে নিতে হবে শাকসব্জি। ছবি: শাটারস্টক
অনলাইন সব্জি বা ফল এলে
যে বাক্সে আসছে সেটি স্যানিটাইজ করে তার পর বাক্সটি খুলুন। বাক্সটি ফেলে দিন। ফল বা সব্জি তার পর পটাস জল বা সাবান জলে ধুয়ে পরিষ্কার কাপড়ে মুছে রেখে দিন। প্রয়োজনে দু’দিন বা তিন দিন রেখেও বাক্সটি খোলা যেতে পারে, কিন্তু সে ক্ষেত্রে সব্জি নষ্ট হয়ে যেতে পারে, জানান সুবর্ণবাবু।
বাজার চলতি ভেজিটেবল ক্লিনার বা ফ্রুট ক্লিনারে কাজ হবে?
মেডিসিনের চিকিত্সক কল্লোল সেনগুপ্ত বলেন, সাবান জল বা বেকিং সোডা ব্যবহার করা যেতে পারে ফল বা সব্জি ধোওয়ার ক্ষেত্রে। ক্লিনারও ব্যবহার করা যায়। তবে বেকিং সোডা বা সাবান ব্যবহার করাই ভাল। জল দিয়ে ধোওয়ার পর গরম জলে পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে ফল, সব্জির গা ভাল করে মুছে নিন। এতে যদি ধোওয়ার পরও কিছু লেগে থাকে তা উঠে যাবে।
আর কী মনে রাখতে হবে
পেঁয়াজ, আলু, আপেল, কমলালেবু, আদা, আম, গাজর, মুলো, বিট জাতীয় ফল-সব্জির ক্ষেত্রে খোসা ছাড়ানো খুবই সহজ। এই ধরনের খাবার ভাল করে ধুয়ে নেওয়ার পর খোসা ছাড়িয়ে আবার জলে ধুয়ে নিন।
হোমমেড ক্লিনিং স্প্রে
এক টেবল চামচ লেবুর রস ও দুই টেবল চামচ বেকিং সোডা ভাল করে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ এক কাপ জলে মিশিয়ে পাতলা করে নিন। বোতলে ভরে ঠান্ডা কোনও জায়গায় রেখে দিন। ফল, সব্জির গায়ে স্প্রে করে নিন।
সব্জি পরিষ্কারের সময়ও হাত পরিষ্কার রাখা বাধ্যতামূলক। ছবি:শাটারস্টক
যদিও এ ক্ষেত্রে খানিকটা ভিন্নমত পোষণ করেন মেডিসিনের চিকিত্সক অরিন্দম বিশ্বাস। তাঁর কথায়, হাত সাবান জলে কচলে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তার পর সব্জি ঠান্ডা রানিং ওয়াটারে পরিষ্কার করলেই হবে। অযথা আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। তবে সব্জির মধ্যে কেউ হাঁচলে-কাশলে সেই ড্রপলেট থেকে সংক্রমণ হতে পারে, তবে সেই আশঙ্কা খুবই কম। সব্জি ভাল করে পরিষ্কার করে আবারও হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে সাবান জলে।
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯ থেকে সম্পূর্ণ সুরক্ষা দেবে এই মাল্টি-মাস্ক, দাবি গোয়ার ডিজাইনারের
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy