গড়ে ওঠা সুঅভ্যাসে ইতিবাচক ফল মিলবে ভবিষ্যতে। ছবি: শাটারস্টক
কোভিড ঠেকানোর প্রচেষ্টায় জীবন পাল্টে গিয়েছে পুরোপুরি। কথায় কথায় হাত ধোওয়া, মাস্ক পরে থাকা, সবার সঙ্গে একটু দূরে দূরে থাকা মানে সামাজিক দূরত্ব— এ সবই এখন জীবনের অঙ্গ। উইকএন্ড পার্টি, লং ড্রাইড ভুলে যাওয়ার জোগাড় হয়েছে। বেড়াতে যাওয়ার কথা বোধহয় স্বপ্নেও আর ভাবছেন না কেউ।
বাদ পড়ছে বাইরে খেতে যাওয়াও। ঘরে কম তেল-মশলায় রান্না হচ্ছে স্বাস্থ্যকর খাবার। সোনামুখ করে তাই খেয়ে নিচ্ছেন সবাই। কোন খাবারে ভিটামিন সি আছে, কী ভাবে শরীরে ভিটামিন ডি বাড়ানো যাবে, রোগ প্রতিরোধ করা কেন জরুরি, এই সব এখন অনেকটাই ঝালিয়ে নেওয়া গিয়েছে। এ সব করে কোভিড ঠেকানো নিশ্চিত না হলেও, অন্য উপকার যে হচ্ছে বিস্তর, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
অজান্তেই নানা উপকার হয়েছে আপনার রোজের অভ্যাসে
• হাত ধোওয়ার অভ্যাস জারি থাকলে পেটের অসুখ কম হবে। সে অমাশায় হোক বা ডায়েরিয়া, কৃমি হোক বা জন্ডিস। ফি মরসুমে নিয়ম করে হাজির হয় যে ইনফ্লুয়েঞ্জা, সে আর ততটা কাবু করতে পারবে না। অন্য সংক্রমণজনিত অসুখের আশঙ্কাও কমবে।
• চেস্ট মেডিসিনের চিকিৎসক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী জানালেন, “সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখলে কমবে ড্রপলেট সংক্রমণের আশঙ্কা। এর মধ্যে সাধারণ ফ্লু থেকে যক্ষ্মার মতো জটিল অসুখও আছে।”
• নাক-কান-গলা বিভাগের চিকিৎসক কৌশিক দাশের মতে, “মাস্ক বাঁচাবে ফ্লু, যক্ষা, ধুলো বা রেণু সংক্রান্ত পোলেন অ্যালার্জির হাত থেকে। সামনে বসে কেউ ধূমপান করছেন, অথচ ভদ্রতার খাতিরে উঠে যেতে পারছেন না বা বলতে পারছেন না কিছু। বসে বসে পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। ভয় নেই, মাস্ক এ বিপদ থেকেও রক্ষা করবে কিছুটা।”
করোনা আবহে গড়ে তোলা শরীরচর্চার অভ্যাস আজীবনের জন্য বজায় থাকুক। ছবি: পিক্স্যাবে
এ ছাড়াও
• মুখ ঢাকা থাকলে পুরু করে সানস্ক্রিন মাখার আর প্রয়োজন নেই। সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাবের হাত থেকে ত্বক এমনিই বাঁচবে। মেকআপ ও পার্লারের খরচও কমবে। তার হাত ধরে ত্বকও ভাল হবে।
• ঘরের রান্না খেলে স্বাস্থ্য ভাল থাকবে। নামীদামি সাপ্লিমেন্টের পিছনে আর খরচ করতে হবে না। খরচ কমবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে বলে অসুখ-বিসুখ কম হবে। কমবে ডাক্তারের প্রয়োজন ও স্বাস্থ্য বাবদ খরচ।
• নিজের কাজ নিজে করার অভ্যাস হয়ে গেলে শরীর যেমন সচল থাকবে, কাজের লোকের উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতাও কমবে। বাইরের লোকের মারফৎ ঘরে সংক্রমণ ঢোকার আশঙ্কাও চলে যাবে তলানিতে।
• ক্লাব-পার্টি-বেড়ানো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেখবেন মাসের শেষে কিছু টাকা জমছে। বিশ্বজোড়া মন্দার বাজারে এই টাকা অনেক দরকারে লাগবে।
• শরীরচর্চার অভ্যাস আজীবন বজায় থাকলে তা সুস্থ রাখবে আপনাকে।
মনের সমস্যার সমাধান
ভাবছেন, একটু হালকা ভাবে বাঁচার সব পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে, কী হবে এর পর! মনোচিকিৎসক গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, “এই ভাবনাটাই ভুল। আড্ডা-পার্টি না করতে পারলে, লোকজনের ভিড়ে সময় কাটাতে না পারলেই জীবন ব্যর্থ হয়ে গেল, এই ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এ বার।”
তাঁর কথায়, “লকডাউনের দিনগুলিতে সময় কাটাতে অনেকে নতুন কিছু শুরু করেছিলেন, সেগুলিকে এ বার গুরুত্ব দেওয়া শুরু করতে হবে। সৃষ্টিশীল কাজের মধ্যে কোনগুলি আপনার সবচেয়ে মনের কাছাকাছি? এ বার সে সবের চর্চা শুরু করতে হবে। কোভিড আজ নয়তো কাল চলে যাবে। কিন্তু তার মাঝেই আপনি খুঁজে পেয়ে যাবেন বেঁচে থাকার রসদ। বাকি জীবনটুকু কাটিয়ে দিতে পারবেন এই রসদ নিয়েই। কোভিড না এলে যা হয়তো অধরাই থেকে যেত।”
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy