Advertisement
১৮ অক্টোবর ২০২৪
ear. ear buds

ঘন ঘন কটন বাডস দেন কানে? বড় বিপদ ডেকে আনছেন অজান্তেই

কটন বাড ব্যবহার নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষাটিও বেশ ভয় পাইয়ে দেওয়ার মতোই।

কটন বাডস ব্যবহারের অভ্যাস ক্ষতি করছে কানের। ছবি: আইস্টক।

কটন বাডস ব্যবহারের অভ্যাস ক্ষতি করছে কানের। ছবি: আইস্টক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৯ ১৩:০৬
Share: Save:

কানে কোনও অস্বস্তি না হলেও শুধু স্বভাবের দোষে প্রায়ই কটন বাড ব্যবহার করে কানে সুড়সুড়ি দিতে থাকেন অনেকেই। কানের ভিতর কটন বাডসের নড়াচড়ায় আরামও হয়। মানুষের চাহিদার কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন সংস্থা এমন বাডস তৈরিও করে। কিন্তু এই আরামের লোভই বিপদ ডেকে আনে শরীরে।

“দাম দিয়ে ক্ষণিকের আরামের জন্য যে বাডস কিনে আনছেন, তা আসলে কানের পর্দার ক্ষতির অন্যতম কারণ। বিদেশে এই নিয়ে বহু গবেষণা চলেছে। আমাদের দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও এর ক্ষতিকারক দিক নিয়ে ওয়াকিবহাল। শুধু সচেতন নন সাধারণ মানুষ। ইয়ার বা়ডসের তুলো কানে ঢুকে গিয়ে নানা দুর্ঘটনার রোগী আমরা প্রায়ই পেয়ে থাকি। তা ছাড়া এই খোঁচাখুঁচিতে কানের অভ্যন্তরে যে ক্ষতি হয়, তার মূল্যও কম নয়’’— জানালেন চোখ-কান-গলার বিশেষজ্ঞ দেবাশিস দাস।

কটন বাড ব্যবহার নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষাটিও বেশ ভয় পাইয়ে দেওয়ার মতোই। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বে এতে মারা যান প্রায় সাত হাজার মানুষ। বিপুল জনসংখ্যার তুলনায় এ অঙ্ক নগণ্য হলেও, চিকিৎসকরা ভয় পাচ্ছেন অন্য আর এক হিসেবে। সমীক্ষায় বলা হচ্ছে, ভারতের প্রায় ৩৬ শতাংশ মানুষ এই ক্ষতির বিষয়ে জানেন। তার মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ জেনেশুনেই ব্যবহার করছেন বাডস।

আরও পড়ুন: মেয়েদের বন্ধ্যাত্ব রুখতে পাতে রাখুন এই ডায়েট, সুস্থ থাকবে ভ্রূণও

কানের ময়লাকে পর্দার কাছে ঠেলে আর তরুণাস্থিকে আঘাত করে ক্ষতি করে কটন বাডস।

দেবাশিসবাবুর মতে, “কটন বাডের তুলো অসাবধানতায় কানে ঢুকে গিয়ে মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে। অনেক সময়ই অস্ত্রোপচারের সাহায্য নিতে হয় এমন বিপদে। শুধু তা-ই নয়, কটন বাডসের খোঁচানোয় প্রতি দিনই কানের অডিটরি লোবকে উত্তেজিত করে তার অভ্যন্তরীণ ক্ষতি করছি আমরা। কানের তরুণাস্থিও পড়ছে বিপদে। এরা নষ্ট হয়ে গিয়ে দুর্বল করে দিচ্ছে শ্রবণশক্তি। কানে হঠাৎই শুনতে পাচ্ছেন না এমন রোগী এলে আমরা প্রথমেই জানার চেষ্টা করি, তিনি এমন বদভ্যাসের শিকার কি না।’’

শুধু তা-ই নয়, চিকিৎসকদের মতে, কর্ণকুহরে যেটুকু ময়লা থাকে, তা আদতে কানের ভিতরের পর্দাকে রক্ষা করে। খুব জোরে আওয়াজ, খুব জোরে ফুঁ দেওয়ার জেরে ক্ষতি, বা বাইরের আঘাত— এ সব থেকে কানের পর্দাকে রক্ষা করে এই ময়লাগুলো। কানের ভিতরের আঠালো পদার্থ আমাদের কানের জন্য ভাল। তা কানের পর্দাতে বাইরের সংক্রমণ ও ধুলোবালি থেকে রক্ষা করে। ময়লা বেশি জমে যাওয়ার ধারণা ভুল। যেটুকু ময়লা অতিরিক্ত, কান তা হাঁচি-কাশি-স্নান-ঘুম ইত্যাদি নানা জৈবিক কাজের হাত ধরেই বেরিয়ে যায়। আলাদা করে খুঁচিয়ে বার করতে হয় না। কারণ শরীর একটা নির্দিষ্ট ওজনের পর আর ময়লা নিজের ভিতরে রাখে না।’’

আরও পড়ুন: ডায়াবিটিসে আক্রান্ত কি না, জানান দিতে পারে আপনার চোখ!

বাড়িতে নিয়মিত কান পরিষ্কার করার প্রচেষ্টাতেও সায় নেই বিশেষজ্ঞদের। কানে ময়লা জমেছে এমন ‘বাতিক’ থেকে না সরে আসার ফলেই অনেকে অকালে শ্রবণশক্তি হারান বলে মত তাঁদের।

কিন্তু কেন এত খারাপ কটন বাড? দেবাশিসবাবুর মতে, এটি কানের ময়লাকে আরও কানের পর্দার কাছে দূরে ঠেলে দেয়। কানের নরম টিস্যুতে আঘাত লাগে। কান যেহেতু শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করে, তাই বাডসের প্রভাবে শ্রবণশক্তি ক্ষয় হওয়ার পাশাপাশি শরীরের সাম্যও নষ্ট হয়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE