Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Corona

Coronavirus: কোভিড হয়নি, তা-ও রিপোর্ট বলছে পজিটিভ? কেন এমন ঘটতে পারে

করোনাকালে প্রায় সকলেই আরটি-পিসিআর পরীক্ষার নাম শুনেছেন। কিন্তু কী ভাবে কাজ করে এই পরীক্ষা, তা অনেকেরই অজানা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহিত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২১ ১২:২৭
Share: Save:

কোভিড পরীক্ষার ক্ষেত্রে আরটি-পিসিআর পরীক্ষাই সবচেয়ে কার্যকরী বলে ধরে নেওয়া হয়। মানে যদি আপনি সংক্রমিত হয়ে থাকেন, তা হলে এই পরীক্ষা করালে সেটা ধরা পড়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। আর যদি না হয়ে থাকে, তা হলে রিপোর্ট নেগেটিভ আসার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তাই এই পরীক্ষা বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, পরীক্ষার ভুল ফল আসা আসম্ভব।

সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে দু’জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর সেগুলো ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে। করোনা না হলেও কি ভুল রিপোর্ট আসা সম্ভব? উত্তর— হ্যাঁ। কিন্তু কেন এমন হয়, সেটা বুঝতে গেলে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা কী ভাবে করা হয়, জানতে হবে। করোনাকালে বেশির ভাগ মানুষ এই পরীক্ষার নাম শুনেছেন। কিন্তু কী ভাবে সেটা হচ্ছে, তার ধারণা স্পষ্ট নয়।

গলা ও নাকের লালারস সংগ্রহ করার পর সেটা থেকে কিছু রসায়নের সাহায্যে আরএনএ বার করা হয়। এটায় সাধারণত একজনের নিজস্ব আরএনএ এবং সার্স-সিওভি-টু ভাইরাসের আরএনএ’ও মজুত থাকবে (যদি শরীরে ভাইরাস থেকে থাকে)। তারপর এই আরএনএ কে ডিএনএ’তে রূপান্তরিত করা হয়। ভাইরাস রয়েছে কি না বোঝার জন্য এই ডিএনএ’র ক্ষুদ্র অংশগুলি আরও বাড়ানো হয়। ৩৫ কিংবা তারও বেশি বার এই নমুনা বাড়ানোর পর বোঝা যায় একজন পজিটিভ কিনা। একটি ফ্লুরোসেন্ট রঙের ডাইয়ের সাহায্যে সেটা বোঝা সম্ভব হয়। ফ্লুরোসেন্ট রংটা কতটা গাঢ়, তার উপর নির্ভর করে পরীক্ষার রিপোর্ট।

এই রিপোর্ট ভুল আসার মূল কারণ দু’টি। এক ল্যাবে পরীক্ষা করার সময় কিছু ভুল-ত্রুটি, দুই যদি নমুনা সার্স-সিওভি-টু ছাড়া অন্য কোনও কিছুর সঙ্গে মিশে একটি প্রক্রিয়া তৈরি হয়ে যায়। ল্যাবে ভুল ত্রুটির মধ্যে পড়ে ভুল নমুনা পরীক্ষা করা, অন্য কারুর পজিটিভ নমুনা সঙ্গে এই নমুনা মিশে যাওয়া, কিংবা যে রসায়ন অথবা ডাইয়ের সাহায্যে পরীক্ষা করা হচ্ছে, সেগুলোয় কোনও রকম সমস্যা হওয়া।

কত ঘন ঘন এই ভুল হওয়া সম্ভব? একটি অপ্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, ভুল পজিটিভ রিপোর্টের সংখ্যা বিশ্বজুড়ে ০.৮ থেকে ৪ শতাংশর মধ্যে। ল্যাবরেটরির মান পরীক্ষা করার সময়ে এই ধরনের ভুল রিপোর্টের কথা জানা যায় বিভিন্ন জায়গায়। তবে সমস্যা হল, অনেক ক্ষেত্রেই জানা সম্ভব হয় না। তবে কোনও পরীক্ষার ফলই যে ১০০ শতাংশ ঠিক নয়, তা ধরে নেওয়া উচিত।

অস্ট্রেলিয়ায় এক সমীক্ষা বলছে ভিক্টোরিয়া অঞ্চলে যতগুলো ভুল পজিটিভ রিপোর্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, আদপে ততগুলো রিপোর্ট ভুল নয়। এটাকে বলা হয় ‘ফল্‌স পজিটিভ প্যারাডক্স’। একটা রিপোর্ট ভুল মানে সেই নমুনা ফের পরীক্ষা করা হয়েছে নাকি সেই ব্যক্তির ফের পরীক্ষা করা হয়েছে, তা কখনওই পরিষ্কার হয় না। একজন সুস্থ মানুষকে ভুল রিপোর্ট দেওয়াটা কখনওই বাঞ্ছনীয় নয়। বিনা কারণে তাঁকে নিভৃতবাসে থাকতে হবে এবং অহেতুক মানসিক চাপও বাড়বে। তবে যে কোনও জায়গায় অনেক সংখ্যায় পরীক্ষা করলে এই ধরনের ভুল রিপোর্ট পাওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।

তথ্যসূত্র: অ্যাড্রিয়ান এস্টেরম্যান, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োস্ট্যাটিস্টিক্‌স এবং এপিডেমোলজির অধ্যাপকের লেখা ‘হোয়াই আর সাম কোভিড টেস্ট রেজাল্ট ফল্‌স পজিটিভ, অ্যান্ড হাউ কমন আর দে’। (‘দ্য করভার্সেশন’, ৬ জুন)

অন্য বিষয়গুলি:

Corona COVID-19 coronavirus RTPCR
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy