কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন।
কোভিশিল্ড নিলে কোভ্যাক্সিনের তুলনায় বেশি সংখ্যায় অ্যান্টিবডি তৈরি হতে পারে, সাম্প্রতিক গবেষণার তাই দাবি। অপ্রকাশিত এক গবেষণার তথ্য অনুযায়ী চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের পরীক্ষা করে এই ফল পাওয়া গিয়েছে। তাঁরা প্রত্যেকেই দুই প্রতিষেধকের কোনও একটা নিয়েছিলেন। চিকিৎসক এ কে সিংহ এবং তাঁর সহকর্মীদের করা এই পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, দুই প্রতিষেধকই করোনাভাইরাস আটকাতে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়াতে যথেষ্ট সক্ষম।
এর আগেও অপ্রকাশিত তথ্য থেকে জানা গিয়েছিল প্রথম ডোজ নেওয়ার পর কোভিশিল্ডের এফিকেসি ৭০ শতাংশ। কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় পর্যায় পরীক্ষার ফল থেকে জানা গিয়েছিল, তার এফিকেসি ৮১ শতাংশ।
‘৫১৫ জন স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে ৯৫ শতাংশের শরীরে দ্বিতীয় ডোজের পর বেশি সংখ্যায় অ্যান্টিবডি পাওয়া গিয়েছে। ৪২৫ জন কোভিশিল্ড নেওয়া স্বাস্থ্যকর্মীর শরীরে মিলেছে ৯৮.১ শতাংশ অ্যান্টিবডি। ৯০ জন কোভ্যাক্সিন নেওয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের ক্ষেত্রে সেটা ৮০ শতাংশ’, বলছে গবেষণা।
গবেষণা অনুযায়ী, কোভ্যাক্সিন নেওয়া হাতের তুলনায় কোভিশিল্ড নেওয়া হাতে বেশি সংখ্যক অ্যান্টিবডির প্রমাণ মিলেছে। তবে দুই প্রতিষেধকের ক্ষেত্রেই রোগ-প্রতিরোধক ক্ষমতা যথেষ্ট বেশি। গবেষণা অনুযায়ী, ‘অ্যান্টি স্পাইক অ্যান্টিবডির সংখ্যার যাঁরা কোভিশিল্ড নিয়েছিলেন, তাঁদের ক্ষেত্রে বেশি (কোভ্যাক্সিনের তুলনায়)।
তবে অ্যান্টি-স্পাইক অ্যান্টিবডি এবং নিউট্রালাইজিং অ্যান্টিবডি টাইটার (এনএবি) দু’টো এক নয়। এনএবি আদপে অ্যান্টিবডি স্পাইকের একটি অংশমাত্র। এই প্রসঙ্গে আইএমএ কোচির প্রাক্তন প্রধান, চিকিৎসক রাজীব জয়দেবন বলেছেন, ‘‘একজন কতটা সুরক্ষিত, সেটা কত শতাংশ অ্যান্টি-স্পাইক অ্যান্টিবডি তাঁর মধ্যে রয়েছে, তা নির্ধারণ করার একমাত্র মাপকাঠি নয়।’’
এই পরীক্ষা অনুযায়ী, দু’টি ডোজ নেওয়ার পর ২৭ (৮.৯ শতাংশ) জন কোভিড আক্রান্ত হন। তাঁদের মধ্যে ২৫ জনের মৃদু এবং ২ জনের মাঝারি উপসর্গ দেখা গিয়েছিল। তবে কোনও মৃত্যুর কথা জানা যায়নি। টিকাকরণ সম্পূর্ণ হওয়ার পরও কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন, এমন সংখ্যা কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রে ৫.৫ শতাংশ এবং কোভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে ২.২ শতাংশ।
এই পরীক্ষায় লিঙ্গ, ব্লাড গ্রুপ, দেহের ওজন বা কো-মর্বিডিটি কোনও রকম ফারাক দেখা যায়নি। তবে যাঁদের বয়স ৬০এর বেশি তাঁদের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবডির সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে কম পাওয়া গিয়েছে।
দেশজুড়ে চিকিৎসকদের মতে, দুই প্রতিষেধকই যথেষ্ট কার্যকরী প্রমাণিত হয়েছে। এবং কার কতটা অ্যান্টবডি তৈরি হচ্ছে, সেটা বুঝতে গেলে প্রত্যেকের আলাদা করে পরীক্ষা করতে হবে। এই গবেষণাও তাই বলছে। প্রতিষেধক নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি করে প্রমাণ করে এই পরীক্ষা। সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউ আটকানোর আপাতত উপায় প্রতিষেধকই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy