Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
coronavirus

স্যানিটাইজার না সাবান? এই মুহূর্তে কোনটা বেশি প্রয়োজনীয়

ঘন ঘন স্যানিটাইজার কী রকম বিপদ ডেকে আনছে?

স্যানিটাইজার ও সাবান ব্যবহারের সময় খেয়াল রাখুন ত্বকের। ছবি: শাটারস্টক।

স্যানিটাইজার ও সাবান ব্যবহারের সময় খেয়াল রাখুন ত্বকের। ছবি: শাটারস্টক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২০ ১৫:০১
Share: Save:

করোনা-আতঙ্কে স্যানিটাইজার নিয়ে বাড়াবাড়ি কোনও কোনও ক্ষেত্রে মাত্রাছাড়া হয়ে উঠেছে। অনেকেরই ধারণা, ঘন ঘন হাত স্যানিটাইজ করলেই বোধহয় করোনা থেকে মুক্তি মিলবে। তাই বার বার বেসিনে উঠে গিয়ে হাত ধোওয়ায় তৈরি হচ্ছে অনীহা। বরং এক জায়গায় বসে মাঝে মাঝেই স্যানিটাইজারে হাত ঘষে নেওয়াটা অনেক বেশি কার্যকর বলে মন করছেন অনেকেই।

কিন্তু এটুকু করে কি আদৌ কোনও কাজ হয়?

বিশেষজ্ঞদের মতে, দু’-ফোটা স্যানিটাইজারে হাত ঘষে নেওয়ার চেয়ে যে সাবান-জলে হাত ধোয়া শত গুণে ভাল। এমনিতেই স্যানিটাইজারের বিপুল চাহিদায় স্যানিটাইজার বাড়ন্ত। ফলে অনেকেই বাড়িতে বানানো স্যানিটাইজার বিক্রি করছেন খোলা বাজারে। তাতে ইথাইল অ্যালকোহল আদপে আছে কি না, থাকলে নির্দিষ্ট মাত্রায় আছে কি না— সে সবের কোনও হিসেব থাকছে না। ফলে মনের শান্তি হলেও কাজের কাজ হচ্ছে না।

অনেকে আবার বাইরের যে কোনও জিনিস ঘরে ঢোকানোর আগে তাতে স্যানিটাইজার স্প্রে করে দিচ্ছেন। খবরের কাগজ, দুধের প্যাকেট, সবেতেই। কাগজ যাঁরা দেন, সবার হাতেই গ্লাভস থাকে। তার চেয়েও বড় কথা সারা পৃথিবীতে এমন কোনও নজির নেই যে কাগজ থেকে রোগ ছড়িয়েছে। আর দুধের প্যাকেটে স্প্রে ঢালারও কোনও মানে নেই বলেই মত গবেষকদের। প্যাকেট তো কেউ খাবেন না, খাবেন দুধ। সে তো স্টেরিলাইজড করাই। তার পর তাকে ফোটানো হয়। ফলে জীবাণু তাতে থাকতে পারে না।

আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরেই চলে আসছে করোনাভাইরাসের টিকা! দাবি অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীর

ত্বক বিশেষজ্ঞ সৌম্য চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘সাবান না ব্যবহার করে ঘন ঘন স্যানিটাইজার ব্যবহারে ত্বকেরও ক্ষতি হয়। স্যানিটাইজারের অ্যালকোহল সম্বলিত অণু ত্বককে শুকনো করে দেয় খুব। তা থেকে চুলকানি, খসখসে ত্বক বিভিন্ন সমস্যা আসে। স্যানিটাইজারের অণুর চেয়ে সাবানের অণুর সঙ্গে হাতের ত্বকের বন্ধুত্ব বেশি। স্যানিটাইজারের তুলনায় সাবান হাত পরিষ্কার করার ক্ষমতাও রাখে অনেক বেশি। তার উপর ভেজাল স্যানিটাইজার কিনলে তো আরও জটিল সমস্যা। অ্যালকোহল মেশানো স্যানিটাইজারে অ্যালকোহলের মাত্রা বেশি হয়ে গেলে ত্বকে অ্যালার্জি হতে পারে, ফোস্কা পড়ে ত্বক লাল হয়ে বাড়তি বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই দোকান থেকে কেনা স্যানিটাইজারই ব্যবহার করুন, তবে তা সাবানের পরিবর্তে নয়।’’

সাবানের অণুর সঙ্গে হাতের ত্বকের বন্ধুত্ব বেশি।

এই স্যানিটাইজারের প্রতি মানুষের ঘন ঘন নির্ভরতা কি অসুখ নিয়ে ভয় ও আতঙ্কেরই প্রকাশ? মনোচিকিৎসক গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, “এখন এ রকম একটু হবে। কারণ, এক কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি। মানসিক চাপ এত বেড়েছে যে নিতান্ত যুক্তিবান মানুষও কখনও কখনও যুক্তি হারিয়ে ফেলছেন। তার উপর এই হাত ধোওয়া, স্যনিটাইজ করা, এ সব তো অনেকের কাছেই নতুন কনসেপ্ট। ভাল বুঝতে পারছেন না কী থেকে কী হচ্ছে আর কী করলেই বা বাঁচা যাবে। এই মারাত্মক চাপের ফলে যাঁরা এমনিতেই একটু উদ্বেগপ্রবণ বা বাতিকগ্রস্ত ছিলেন, তাঁদের সমস্যা বাড়ছে। ভাল করে বোঝানো ছাড়া এই মুহূর্তে এর হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার আর কোনও রাস্তা আছে বলে আমার মনে হয় না।”

আরও পড়ুন: হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন কী? করোনা-রোধে আদৌ তার উপর ভরসা করা যাবে?

তা হলে কখন স্যানিটাজার?

কোনও জরুরি কাজে বাইরে বেরতে হল। হয়তো কিছু ক্ষণ থাকতে হবে কোথাও। তখন সাবান ব্যবহারের অসুবিধা আছে। সে সময় ব্যবহার করুন স্যানিটাইজার। অনেককেই অফিসে বেরতে হচ্ছে। অফিসের ডেস্কে বসে কাজ করতে করতে ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোওয়ার অবস্থা থাকে না। তখন কাছে রাখুন স্যানিটাইজার।

বাড়িতে থাকার সময় ১০ বার সাবানের মাঝে এক-দু’বার স্যানিটাইজার চলতেই পারে, কিন্তু সাবান ছাড়া এটাই যেন অভ্যাস হয়ে না দাঁড়ায়।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

অন্য বিষয়গুলি:

Novel Coronavirus Coronavirus Soap Hand Sanitizer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE