Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in Kolkata

যা খুশি ওরা বলে বলুক...

মুখে নয়, সার্জিক্যাল মাস্ক রয়েছে হাতে।

সদলবলে: পুজোর আগের শেষ রবিবারে কেনাকাটা করার ঢল। রবিবার, হাতিবাগানে। ছবি: সুমন বল্লভ

সদলবলে: পুজোর আগের শেষ রবিবারে কেনাকাটা করার ঢল। রবিবার, হাতিবাগানে। ছবি: সুমন বল্লভ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২০ ০৩:২১
Share: Save:

অলোকেশ রায়, হাতিবাগান

ভিড়ের মধ্যেই মাস্ক নামিয়ে বিড়ি টানতে টানতে প্রবল কাশতে শুরু করলেন। কাশছেন, অথচ মাস্ক নেই? অলোকেশ বললেন, ‘‘বিড়ি টানছি দেখছেন না? আর আমাদের না বলে দিদির পাড়ায় গিয়ে বলুন।’’ কোন দিদি? প্রবল উত্তেজিত প্রৌঢ়ের উত্তর, ‘‘দিদি করোনাভাইরাসকে লকডাউন করে দিয়ে বেরিয়ে পড়তে বলেছেন। সে বেলায় কিছু না, আমরা মাস্ক খুললেই দোষ?’’

মহম্মদ আয়ান, বাইপাসের একটি শপিং মল

মুখে নয়, সার্জিক্যাল মাস্ক রয়েছে হাতে। বললেন, ‘‘করোনায় কেউ আর মারা যাচ্ছে না। তাই অকারণ ভয় পেয়ে কী হবে?’’ সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘এই তো গত পরশু থেকে আমার জ্বর ছিল। এখনও সর্দি আর কাশিটা রয়ে গিয়েছে। তাই বলে কি পুজোর সময়ে বাড়ি বসে থাকব নাকি? তাই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে চলে এসেছি। যা হবে এর পরে দেখা যাবে।’’

সমীরণ দাস, গড়িয়াহাট

প্রবল ভিড়ের মধ্যেও গলার কাছে মাস্ক নামিয়ে সিগারেট টানতে টানতে যাচ্ছিলেন তিনি। প্রশ্ন করতেই বললেন, ‘‘যত দূর জানি ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস গরমে করোনা কেন, কোনও ভাইরাসই বাঁচতে পারে না। সিগারেটের আগুন তো নিশ্চয়ই ১০০ ডিগ্রির বেশিই গরম হবে। তাই মুখ থেকে মাস্ক খুললে শুধুমাত্র সিগারেট খাওয়ার সময়েই খুলে থাকি। তা ছাড়া আমি খুবই সচেতন।’’

নীতি সাউ, নিউ মার্কেট

পরিবারের কয়েক জন মিলে আইসক্রিম খাচ্ছেন। কেউই মাস্ক পরেননি। নীতি বললেন, ‘‘আমরা কি বয়স্ক? করোনা প্রবীণদের জন্য। আমাদের মতো কমবয়সিদের করোনা ধরে না। আর যদি ধরেও, আইসক্রিমে প্রচুর ভিটামিন থাকে। কিছু হবে না।’’ কয়েক পা হেঁটে গিয়ে পিছনে ফিরে বললেন, ‘‘পাঁচ মাস বাড়ি বসে পুজোর জন্যই ইমিউনিটি বাড়িয়েছি কি এমনি এমনি!’’

পুজোর মাদকতা যে অদ্ভূত পরিস্থিতির জন্ম দেবে, তাতে নিশ্চিত ভাবে করোনার সুনামি দেখতে চলেছি আমরা। যদি এখনও সতর্ক না হই, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়তে পারে। সকলের কাছে অনুরোধ, এ উৎসব নিজেকে ও অন্যকে বাঁচিয়ে রাখার উৎসব হোক। করোনাকে রুখতে বিশ্ব জুড়ে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, আমরা তার উল্টো পথে হাঁটছি কেন?

চিকিৎসক অনির্বাণ নিয়োগী

ডাক্তারেরা কেউ বেরসিক নন যে আনন্দে বাধা দেবেন। আমরা চাইছি, আর এক-দু’মাসের মধ্যে যে ব্যাপারটা নিয়ন্ত্রণে আসার মতো জায়গায় পৌঁছেছিল, পুজোর উৎসবে যেন তা মাটি না হয়ে যায়। যাঁরা আনন্দ করতে বেরিয়েছেন তাঁরা ভাবুন, কয়েক মাসের লকডাউনে জীবন-জীবিকার যা অবস্থা হয়েছিল, আরও একটা লকডাউন নিতে পারব তো?

চিকিৎসক কুণাল সরকার

উৎসব মানে যে ভিড় করে বেরিয়ে পড়া নয়, এটাই সকলকে বুঝিয়ে ওঠা যাচ্ছে না। বেরোলেও মাস্ক খোলা যাবে না। আশপাশে যিনি মাস্ক পরেননি, তিনি আপনার অস্তিত্বকেই সম্মান করেন না মনে করুন। তাঁর থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন। সরকারের কাছে অনুরোধ, অবিলম্বে মাস্ক না পরা দণ্ডনীয় অপরাধের তালিকায় ফেলা হোক।

চিকিৎসক অর্জুন দাশগুপ্ত

উৎসব আবারও আসবে। এই মুহূর্তে নিজের এবং নিজের পরিবারের নিরাপত্তাই যে সবার আগে বিবেচ্য হওয়া উচিত, সেটা সকলে মনে রাখুন। একটাই মন্ত্র, মাস্ক পরুন, বার বার হাত ধুয়ে ফেলুন আর শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন। যে কোনও মূল্যে সামাজিক সুরক্ষা বজায় রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলেরই।

অনুজ শর্মা, কলকাতার পুলিশ কমিশনার

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy