প্রতীকী ছবি।
লকডাউনের সময় এখন আমাদের গৃহবন্দি হয়ে থাকতে হচ্ছে। অনেককে অফিসের কাজও করতে হচ্ছে বাড়ি থেকে। যাঁদের অফিসের কাজ বাড়ি থেকে করতে হচ্ছে না, তাঁরা দিনের পর দিন গৃহবন্দি হয়ে থাকতে থাকতে ‘বোরড’ হয়ে পড়ছেন। আর যাঁদের বাড়ি থেকে অফিসের কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে, তাঁরা এই অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে বাড়ি, পোশাকআশাক, নিজেদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার সঙ্গে সঙ্গে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ করতে গিয়ে সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছেন না। একটা কাজ করতে গিয়ে তাঁদের অন্য কাজটা করা হচ্ছে না নিয়মিত ভাবে। অথচ এই সব কাজই এখন বাধ্যতামূলক।
সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে, বাড়ি ও অফিসের কাজ একই সঙ্গে করতে গিয়ে আমরা ‘টাইম ম্যানেজমেন্ট’ করব কী ভাবে? এখন এটা জেনে নেওয়াই সবচেয়ে জরুরি।
এই ‘টাইম ম্যানেজমেন্ট’ শুরু হওয়া উচিত সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকেই। আর তা চালিয়ে যাওয়া উচিত রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত।
সকাল ৬টা থেকে ৭টা
ঘুম ভাঙার পরেই চোখ, মুখ ধুয়ে বাড়ির ছাদ বা উঠোন অথবা বাগানে বেশ কিছুক্ষণের জন্য নানা ধরনের ব্যায়াম করে নিন। করুন স্কিপিং, জগিং। পারলে বেশ কয়েক বার সিঁড়ি ধরে ওঠা নামা করুন। যতক্ষণ না হাঁফিয়ে পড়ছেন। পিঠ, কোমর, হাত ও পায়ের পেশিকে যথেষ্ট কর্মক্ষম রাখার ব্যায়াম ও যোগাভ্যাসগুলি খুব জরুরি। সঙ্গে প্রয়োজনীয় শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখার ব্যায়াম ও যোগাভ্যাসগুলি। খেয়াল রাখা দরকার, যাতে এই সময় বদহজম বা পেটের কোনও গণ্ডগোল না হয়। ব্যায়াম ও যোগাভ্যাস অন্তত এক ঘণ্টা করা উচিত। তবে লকডাউনের সময় হাঁটতে, ব্যায়াম করতে কখনওই মাঠে বা পার্কে যাবেন না। তাতে সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে যাবে।
সকাল ৭টা থেকে ৯টা
ব্যায়াম বা যোগাভ্যাস শেষ করেই এক কাপ চা খেয়ে নিন। সঙ্গে বিস্কুট। তবে খালি পেটে চা না খাওয়াই ভাল। তার আগে এক গ্লাস জল খেয়ে নিন। বাড়ির ঘরগুলি ভাল ভাবে ঝাড়ু দিয়ে দিন। তার পর ঘরগুলির মেঝে ভাল ভাবে ভিজে কাপড় দিয়ে মুছে নিন। এই সবের মধ্যেই বাড়িতে হকার কাগজ দিয়ে গেলে, তার উপর ভাল করে নজর বুলিয়ে নিন। বা ইন্টারনেটে দেখে নিন বিভিন্ন খবরের সাইট। দেখে নিন টেলিভিশনের সকালের নিউজ। তাতে নিজেকে আপডেটেড রাখতে পারবেন। এই সব করতে করতেই ঘুম থেকে উঠিয়ে দিন সন্তানদের। তাদের সকালের খাবারদাবার দিন। নিজেও সেরে নিন ব্রেকফাস্ট।
সকাল ৯টা থেকে ১০টা
তার পর রান্নাবান্নার প্রস্তুতি নিন। কারণ, এখন তো আর বাড়িতে পরিচারিকা বা রান্নার লোক আসছেন না। ছেলেমেয়েদের পড়তে বসিয়ে দিন। কিছুটা রান্নার পরেই চলে যান বাথরুমে। স্নান সারতে। তার আগে জামাকাপড় পরিষ্কার করুন অনেকটা সময় নিয়ে। সকাল ১০টা থেকেই তো শুরু করে দিতে হবে অফিসের কাজ। ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’।
সকালে করতেই হবে ব্যায়াম। -প্রতীকী ছবি।
সকাল ১০টা থেকে ১২টা
অফিসের কাজ শুরু করে দিন। তারই মধ্যে খোঁজখবর নিন, ছেলেমেয়েরা পড়ছে না কি পড়ার ফাঁকে ফাঁকে অন্য কিছুতে মন বসিয়েছে।
বেলা ১২টা থেকে ১টা
অফিসের বসের অনুমতি নিন একটা ঘণ্টা সময় দেওয়ার জন্য। এরই মধ্যে নিজে খেয়ে নিন, সন্তানদের ও বাড়ির লোকজনকে খেতে দিন।
আরও পড়ুন- এখনও ধূমপান না ছাড়লে করোনার ঝুঁকি কিন্তু বাড়ছেই! কেন জানেন?
আরও পড়ুন- করোনা থাবা বসাতে পারে শিশুর শরীরেও, কী কী সাবধানতা নেবেন
বেলা ১টা থেকে ৪টা
সন্তান, বাড়ির অন্যদের ঘুমোতে বলুন। মন দিয়ে অফিসের কাজ করুন।
৪টা থেকে সাড়ে ৪টা
এর পর একটু ব্রেক নিয়ে চা খান। বাড়ির লোকজনদের ঘুম থেকে উঠিয়ে চা, বিস্কুট দিন। সন্তান, প্রবীণদের বলুন বাড়ির বারান্দায় খানিকক্ষণ বসতে।
দুপুরেও এই ভাবে সামলানো যায় সব দিক। -প্রতীকী ছবি।
সাড়ে ৪টা থেকে ৬টা
ফের ডুব দিন অফিসের কাজে।
সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টা
অফিসের কাজ শেষ। এ বার বাড়ির লোকজনের সঙ্গে গল্প করুন একটু।
সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৮টা
রাতের রান্নাবান্না শুরু করে দিন। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সময় কাটান। ছেলেমেয়েদের পড়তে বসিয়ে দিন। বা, আপনি তাদের পড়ান।
রাতের রুটিনেও নজর রাখতে হবে সব দিকে। -প্রতীকী ছবি।
রাত ৮টা থেকে ৯টা
ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার দিকে নজর রাখুন। ঘর গুছিয়ে নিতে পারেন। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে গল্প করুন। টিভিতে সিরিয়াল দেখুন। ইন্টারনেটে বিভিন্ন খবরের সাইট ঘেঁটে দেখতে পারেন।
রাত ৯টা থেকে ১০টা
ছেলেমেয়ে ও বাড়ির প্রবীণদের ডিনার সার্ভ করুন। নিজেরাও খেয়ে নিন।
রাত ১০টা থেকে ১১টা
ঘুমোনোর প্রস্তুতি নিন। ঘর ঘুছনোর কিছু কাজ বাকি থাকলে সেরে নিতে পারেন। এই সময়ে অফিসের পরের দিনের কাজের প্ল্যানিংটাও সেরে ফেলতে পারেন।
যে দিন অফিসের কাজ বাড়ি থেকে করবেন না
সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠে ব্যায়াম, যোগাভ্যাস করুন এক ঘণ্টা ধরে। অফিসের কাজ বাড়ি থেকে করার দিনগুলিতে যা যা করেন, সকাল ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে সেই সব কাজ করে নিন। সকাল ৯টা থেকে ১০/১১টা পর্যন্ত একটু বেশি সময় নিয়ে জামাকাপড় পরিষ্কার করুন। ঘর ঝাড়ু দিন। ঘরের যাবতীয় আসবাবপত্র পরিষ্কার করুন। ছেলেমেয়েদের পড়ান। স্নান সেরে নিন। বেলা ১১টার পর ছেলেমেয়েদের স্নান করান। অফিসের কাজ নেই বলে একটু বেশি সময় দিন পরিবারের লোকজন ও ছেলেমেয়েদের। বাড়ির প্রবীণদের। বেলা ১টার মধ্যে খাওয়াদাওয়া সেরে ফেলুন। তার পর বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটু ঘুমিয়ে নিন। ঘুম থেকে উঠে চা খান। গল্পগুজব করুন বাড়ির লোকজনের সঙ্গে। টেলিফোনে কথা বলুন অন্য আত্মীয় ও বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে। ঘর গোছান। তার পর একটু টিভির সামনে বসুন। ইন্টারনেটও সার্চ করতে পারেন। সন্ধ্যা ৭টা বাজলেই ছেলেমেয়েদের পড়াতে বসান। নিজেই পড়ান। হোমওয়ার্ক করান। তারই মধ্যে রান্নাবান্না করুন। টিভিতে সিরিয়াল দেখুন। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সময় কাটান। রাত ১০টার মধ্যে ছেলেমেয়ে ও বাড়ির প্রবীণদের ডিনার সার্ভ করুন। নিজেও খেয়ে নিন। রাত ১১টার মধ্যে ঘুমোতে যান। পরের দিন থেকে তো আবার শুরু করতে হবে অফিসের কাজ, বাড়ি থেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy