Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

কয়েক মাসেই চলে যেতে পারে করোনা প্রতিরোধের ক্ষমতা, বলছে নয়া গবেষণা

০ জন করোনা রোগীর উপরে একটি ধারাবাহিক পরীক্ষা চালান লন্ডনের কিংস কলেজের গবেষকরা।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

সংবাদ সংস্থা
প্যারিস শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২০ ১৭:২৬
Share: Save:

হার্ড ইমিউনিটি গড়ে উঠলে নাকি রুখে দেওয়া যাবে করোনাকে। বিপুল সংক্রমণ ঘটিয়ে এক সময় নিজের ক্ষমতা হারিয়ে দুর্বল হয়ে পড়বে ভাইরাস। কিন্তু সেই আশার আলোয় যেন পর্দা টেনে দিলেন লন্ডনের কিংস কলেজের এক দল গবেষক। তাঁদের দাবি, করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠলেও, কয়েক মাসেই কমে যেতে পারে তাঁদের প্রতিরোধ ক্ষমতা। তার ফলে, ফের তাঁদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। সোমবার কিংস কলেজের ওই গবেষণা পত্র প্রকাশিত হয়েছে। আর তাতেই উঠে এসেছে নতুন এই আশঙ্কার কথা।গবেষকরা বলছেন, সরকার কী ভাবে এই অতিমারিকে দমন করছে তাই এখন ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বিষয়।

কী ভাবে এমন একটি সিদ্ধান্তে এলেন কিংস কলেজের গবেষকরা? তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল, মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কী ভাবে সাড়া দিচ্ছে এবং কী ভাবে সময়ের সঙ্গে তা পরিবর্তিত হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা। এ জন্য ৯০ জন করোনা রোগীর উপরে একটি ধারাবাহিক পরীক্ষা চালান তাঁরা। রক্তপরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সংক্রমিত হওয়ার প্রথম কয়েক সপ্তাহ পর ৬০ শতাংশ রোগীর দেহে প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশ কার্যকর থাকে। কিন্তু এর পরেই প্রতিরোধ ক্ষমতার অবক্ষয় শুরু হয়। ৩ মাস পর দেখা যায়, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরে বিপুল পরিমাণ অ্যান্টিবডির ওই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পেরেছেন মাত্র ১৬.৭ শতাংশ রোগী। অর্থাৎ ৯০ দিন পর বহু রোগীর শরীরেই অ্যান্টিবডির আর হদিস মেলেনি।

মানুষের দেহে ভাইরাসের মতো কোনও ‘শত্রু’ প্রবেশ করলে তাকে দ্রুত খুঁজে বের করে খতম করে ফেলে শরীর। এই প্রক্রিয়ায় যে প্রোটিন তৈরি হয় তাকেই বলা হয় অ্যান্টিবডি। ওই আন্টিবডিই ‘অনুপ্রবেশকারী’দের বিরুদ্ধে ‘সেনাবাহিনী’র মতো লড়াই করে। শরীরে যত ক্ষণ বিপুল অ্যান্টিবডি থাকে তত ক্ষণ সংক্রমণ এড়ানোও সম্ভব হয়। ওই গবেষণা বলছে, করোনার হামলা থেকে সুস্থ হয়ে উঠলেও, মানুষের শরীরে তার প্রতিরোধ ক্ষমতার স্থায়িত্ব কয়েক মাসের বেশি নয়।

আরও পড়ুন: প্রদেশ সভাপতি ও উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সচিন পাইলটকে সরিয়ে দিল কংগ্রেস

তবে কি করোনা নিয়ে আশঙ্কা এবং আতঙ্কের এই প্রহর কখনই কাটবে না? গবেষকরা বলছেন, ওই অতিমারির পরের ধাপকে আটকে দেওয়ার জন্য সরকার কী কী পদক্ষেপ করছে তা গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রসঙ্গে তাঁরা করোনার টিকা নিয়ে গবেষণার বিষয়টিও তুলে ধরেছেন। ব্রিটেনেরই ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের মলিকিউলার অঙ্কোলজির অধ্যাপক লরেন্স ইয়ংয়ের মতে, ‘‘এটা একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা যেটা সার্স কোভ ২-র বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডির ভূমিকা বোঝাতে শুরু করেছে।’’ করোনার বিরুদ্ধে কার্যকর টিকা তৈরি করতে এই গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করেন তিনি।

আরও পড়ুন: বিধায়ক আত্মঘাতী, ইঙ্গিত পোস্টমর্টেমে, জানালেন স্বরাষ্ট্রসচিব​

একই সুর শোনা গিয়েছে এ রাজ্যের মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাসের কথাতেও। তিনি বলছেন, ‘‘করোনা ভাইরাসকে ঘিরে ঘিরে প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে। সে জন্য এই ৬ মাস সময়ই যথেষ্ট নয়। গত কালকের তথ্য আজ বদলে যেতে পারে। এক জন সুস্থ হয়েও ফেরা মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এমন উদাহরণও আছে।’’ কিংস কলেজের এই গবেষণা কি হার্ড ইমিউনিটির তত্ত্বকে ধাক্কা দিল না?এর উত্তরে অরিন্দম বিশ্বাস জানাচ্ছেন, ‘‘প্রতিষেধক ছাড়া হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তোলা সম্ভব নয়।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE