গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ গতিতে বাড়ছে সংক্রমণ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
এক বছর আগে কোভিড নিয়ে যে আতঙ্ক এবং সাবধানতা ছিল, আজ তা নেই। এই কারণেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। এমনটাই বলেছেন চিকিৎসকরা।
গত বছর রাজ্যে ১২৭ জন থেকে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ৪১৫৭ জনে পৌঁছতে সময় লেগেছিল ১৭২ দিন। আর এ বছরে ১১৯ জন থেকে সংখ্যাটা ৪০৪৩ জনে পৌঁছে গিয়েছে ৬১ দিনেই। গত বছর দেশে ৮৩৮০ থেকে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৯৭, ৮৯৪ জনে পৌঁছেছিল ১০৯ দিনে। সেখানে চলতি বছরে ৮ ফেব্রুয়ারি দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮৬৩৫। মাত্র ৬৯ দিনে যা হয়ে পৌঁছে গিয়েছে ১, ৫২, ৮৭৯ জনে।
চিকিৎসক এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামীর দাবি, এই পরিসংখ্যান আসলে হিমশৈলের চূড়ামাত্র। কারণ অনেক আক্রান্তই কোভিড পরীক্ষা করাচ্ছেন না। তা হলে সংক্রামিতের সংখ্যা আরও বাড়ত। তাঁর মতে, উপসর্গহীন বা অল্প উপসর্গ দেখা যাচ্ছে এমন বহু মানুষই কোভিড পরীক্ষা করাচ্ছেন না। আর নিজেদের অজান্তে আরও বেশি রোগ ছড়াচ্ছেন।
সুবর্ণর মতে, ‘‘গত বছর সাধারণ মানুষের মনে কোভিড নিয়ে ভয় ছিল। বেশিরভাগ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেন। কিন্তু গৃহবন্দি থেকে কাজ হারানো মানুষ এখন বেপরোয়া। কেউই আর কোভিড বিধি মেনে চলার ব্যপারে সতর্ক নন। পাশাপাশি ভোটের হাওয়ায় রাজনৈতিক সমাবেশও বেড়েছে। তাতেও বাড়ছে সংক্রমণ।’’
বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ যোগীরাজ রায়ের মতে, রাজ্য তথা দেশের কোভিড পরিস্থিতি ক্রমশ অত্যন্ত উদ্বেগজনক হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে। প্রতিদিনই অজস্র রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এ রকম চলতে থাকলে রোগীদের ভর্তি করার জায়গা থাকবে না।’’
চিকিৎসকদের অনেকেরই দাবি, কোভিডের এই দ্বিতীয় ঢেউয়ে ৪০ বছরের কম বয়সী রোগীদের মধ্যেও শ্বাসকষ্ট-সহ ফুসফুসের নানা জটিলতা দেখা যাচ্ছে। টিকাকরণ শুরু হলেও কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না কেন? যোগীরাজ বলছেন, কোনও টিকা সম্পর্কে এমনটা বলা মুশকিল, যে সেটি রোগের বিরুদ্ধে ১০০ শতাংশ কাজ করবে। আর কোভিডের মতো অল্প চেনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে টিকার কার্যকারিতা বুঝতে আরও সময় লাগবে। অন্যদিকে, সুবর্ণর মতে, ‘‘দেশে মাত্র ৫.৫ শতাংশ মানুষ টিকা নিয়েছেন। দ্বিতীয় ঢেউ আটকাতে অন্তত ৫০ শতাংশ মানুষের টিকাকরণ জরুরি। কিন্তু এখনও সেই পরিকাঠামো তৈরি হয়নি। টিকা সম্পর্কে অনেকের মনেই নানা ভয় রয়েছে। তাই যে কেন্দ্রে ২৫০ জনের টিকাকারণ হওয়ার কথা, সেখানে মেরেকেটে ১০০ জন টিকা নিতে আসছেন।’’
শুধু টিকা দিয়েও হবে না। পরিস্থিতি সামলাতে দূরত্ববিধি মেনে চলা ও মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার দরকার আছে বলে মত চিকিৎসকদের। বাড়ি থেকে বেরোলে ত্রিস্তরীয় মাস্ক পরা উচিত বলেও মনে করছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy