খাবারের বিলে প্রতিবাদের স্বর। ছবি: সংগৃহীত।
দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেল প্রায় ২৫ দিন। সারা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ পথে নেমেছেন আরজি কর ঘটনায় নির্যাতিতার দোষীদের ফাঁসি দেওয়ার উদ্দেশ্যে। যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে কলকাতার বুকে, তা মেনে নিতে এখনও পারছেন না কলকাতাবাসী। স্কুলের ছাত্রছাত্রী থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা, ব্যবসায়ী থেকে আইনজীবী, অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে সমাজমাধ্যম প্রভাবী— প্রত্যেক ক্ষেত্রের মানুষরাই এই প্রতিবাদে শামিল হচ্ছেন নিজের নিজের মতো করে।
এ বার আরজি কর-কাণ্ডের জন্য ‘বিচার চাই’ দাবি উঠেছে ক্লাউড কিচেনের বিলেও। এর আগে চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশনে উঠেছিল তরুণী চিকিৎসকের জন্য ‘বিচার চাই’ দাবি। এ বার সেই পথে হাঁটলেন ব্যান্ডেলের এক ক্লাউড কিচেনের কর্ণধার শুচিস্মিতা ভট্টাচার্য ও প্রবীর ভট্টাচার্য। নারায়ণপুর কলোনির বাসিন্দা শুচিস্মিতা ও প্রবীর গত তিন বছর ধরে একটি ক্লাউড কিচেন চালান। মূলত অনলাইনে খাদ্য সরবরাহকারী অ্যাপের মাধ্যমেই খাবার গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেন তাঁরা। বছর ছয়েক আগে বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করেছিলেন। গত তিন বছর ধরে অনলাইনের ফুড ডেলিভারি অ্যাপের মাধ্যমে তাঁরা ব্যবসায় পরিধি বাড়িয়েছেন।
আরজি করার ঘটনায় দেশ-বিদেশের মানুষ দোষীর শাস্তির দাবিতে রাজপথে মিছিল করেছে। শুচিস্মিতারও ইচ্ছে ছিল সেই সব মিছিলে যোগদান করার। খাবারের ব্যবসায় যে হেতু সারা দিন ধরেই কাজের ব্যস্ততা থাকে, তাই মিছিলে যেতে পারেননি। তবে অভিনব কায়দায় প্রতিবাদে শামিল হতে চেয়েছেন তিনি। নিজের কাজে প্রতিবাদের আওয়াজকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন শুচিস্মিতা। বহুজাতিক খাদ্য সরবরাহকারী অ্যাপের মাধ্যমে তিনি হোম ডেলিভারি করেন। সে ক্ষেত্রে খাবারের বিলের মাধ্যমেই বিচার চেয়েছেন তিনি। সেই বিল পৌঁছে যাচ্ছে বাড়ি বাড়ি। নিজে উপস্থিত না থেকেও প্রতিবাদের আওয়াজ পৌঁছে দিচ্ছেন আর পাঁচজনের মধ্যে। ‘ফ্লেভার হোম সার্ভিস’-এর বিলে লেখা রয়েছে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস ফর আরজি কর’। শুচিস্মিতা সমাজের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে মহিলারা কি আদৌ সুরক্ষিত? কর্মক্ষেত্রে মহিলা চিকিৎসকেরা কি সুরক্ষিত? বিলে আরও লেখা, সরব হোন আপনিও, বিচার চায় তিলোত্তমা। শুচিস্মিতা বলেন, ‘‘ক্লাউড কিচেনের ব্যবসা সামলে মিছিলগুলিতে যোগদান করতে পারিনি। তাই প্রতিবাদটা বিলে লিখে করছি। যে দিন আরজি করের ঘটনাটা ঘটল, সে দিন থেকেই প্রতিবাদের কথা মাথায় আসে। আমার ছেলে সাগ্নিক প্রথম এই ভাবনার কথা বলে। ১ সেপ্টেম্বর থেকে আমাদের সংস্থার সব বিলেই প্রতিবাদ তুলে ধরছি। চিকিৎসক তরুণীর জন্য আমরা কবে বিচার পাব আমরা জানি না, তবুও আশা ছাড়ছি না। যত দিন পারব, এ ভাবেই প্রতিবাদ চালিয়ে যাব।’’
শুচিস্মিতার এই অভিনব প্রতিবাদকে স্বাগত জানিয়েছেন খাদ্য সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত যুবকেরাও। মানুষের বাড়িতে বাড়িতে সহজেই ছড়িয়ে পড়ছে তরুণী চিকিৎসকের জন্য বিচারের আওয়াজ। সেই বিল ভাইরালও হয়েছে সমাজমাধ্যমে। ইতিমধ্যেই অনেকেই এই ধরনের প্রতিবাদকে স্বাগত জানিয়েছেন। ডেলিভারি কর্মী অভিজিৎ দাস বলেন, ‘‘সকলেই কোনও না কোনও ভাবে বিচার চাইছে আর জি করের ঘটনার। এটা ভাল পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে প্রতিবাদ আরও জোরালো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy