পুজোয় সাহসী সাজেই ক্যামেরাবন্দি হলেন দেবশ্রী। —নিজস্ব চিত্র।
একটা সময় আদ্যোপান্ত কর্পোরেট চাকুরে ছিলেন, তবে এখন ছোট পর্দার পরিচিত মুখ দেবশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। ‘আবার কাঞ্চনজঙ্ঘা’ ছবি দিয়ে বড় পর্দায় কাজ শুরু করেন দেবশ্রী, তার পর নন্দিতা রায় এবং শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় প্রযোজিত এবং অরিত্র মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘ফাটাফাটি’ ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা গিয়েছে অভিনেত্রীকে। অভিনেত্রী শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের দিদি দেবশ্রী আপাতত ‘জল থই থই ভালোবাসা’ সিরিয়ালের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। অভিনেত্রী হলেই রোগা ছিপছিপে হতে হবে, এই ধারণা ভেঙে দিব্যি টলিপাড়ায় কাজ করছেন দেবশ্রী। তাঁর অভিনয় মনে ধরছে অনুরাগীদেরও।
চেহারা ভারী হলে চারপাশের নানা লোকজনের কাছ থেকেই শুনতে হয় বিভিন্ন ব্যঙ্গবিদ্রুপ। বডি শেমিং, কটাক্ষের শিকার হতে হয় মাঝেমধ্যেই। ঠাট্টার ছলেই হোক কিংবা সরাসরি, মেদবহুল চেহারা নিয়ে সুস্থ সমাজেও নানা অসুস্থ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। সে সব ব্যঙ্গের উত্তর দিতেই পারেন দেবশ্রীর ভঙ্গিতে।
চেহারা ভারী হলে অনেকের পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। পোশাক নির্বাচনের গলদের জেরেই ভারী চেহারাকে আরও ভারী লাগে অনেক সময়। কখনও কখনও দেখা যায়, জমকালো নকশা বা নকশার অবস্থানের উপরও চেহারা কেমন লাগবে, তা অনেকটা নির্ভর করে। তাই এ সব দিকে খেয়াল রাখাটাও ফ্যাশনিস্তাদের অন্যতম কাজ। অনেকের ধারণা, চেহারা ভারী হলে পশ্চিমি পোশাক মানায় না, তবে দেবশ্রী কিন্তু এমনটা মনে করেন না। অভিনেত্রী বললেন, ‘‘যে পোশাক পরে আমি স্বচ্ছন্দ বোধ করি, আমি সেই রকম পোশাকই বাছাই করি। সেটা যেমন সাবেকি হতে পারে, তেমনই আবার পশ্চিমি ধাঁচেরও হতে পারে। আমাকে সুন্দর দেখতে লাগলেই হল। কখনও মাথায় আসে না যে, এই পোশাকটি পরলে আমায় মোটা দেখাতে পারে, পোশাকটি স্বচ্ছন্দের হলে আমি তা পরতে দ্বিধা বোধ করি না।’’
শুটিংয়ের কাজ শেষ করে এখনও পুজোর কেনাকাটা করার সময় হয়নি অভিনেত্রীর। দেবীপক্ষের শুরুতে তাই দেবশ্রীকে সাজানোর দায়িত্ব নিল আনন্দবাজার অনলাইন। দুর্গাপুজোয় সাজে দেবশ্রীকে সাজিয়ে তুললেন পোশাকশিল্পী সন্দীপ জয়সওয়াল।
সকালের সাজের জন্য সন্দীপ অভিনেত্রীকে বেছে দিলেন একটি সফ্ট সিল্কের শাড়ি। অনেকের ধারণা, আড়াআড়ি স্ট্রাইপের শাড়ি পরলে চেহারা আরও ভারী দেখায়। তবে সন্দীপ এই ছক ভাঙলেন। দেবশ্রীর জন্য সন্দীপ বাছলেন সাউথ সিল্কের উপর ডিজিটাল প্রিন্টের রংচঙে শাড়ি, গোটা শাড়ি জুড়ে হ্যান্ড এমব্রয়ডারির নকশা। সন্দীপ বললেন, ‘‘দেবশ্রীর জন্য আমি বেছেছি সরু বর্ডারের সিল্কের শাড়ি। এমন শাড়ি পরাও স্বচ্ছন্দের, আর শরীরের সঙ্গে লেগে থাকে বলে দেখতেও সুন্দর লাগে। সঙ্গে রেখেছি গ্লাস হাতার ডিপনেক ব্লাউজ়। চেহারা ভারী হলে এমন ব্লাউজ় বাছাই করা জরুরি, যাতে শরীর বেশি উন্মুক্ত দেখায়। ব্যাকলেস, ডিপকাট ব্লাউজ় ভারী চেহারায় বেশি ভাল মানায়।’’
শাড়ির সঙ্গে দেবশ্রী খুব ছিমছাম মেকআপ করেছেন। কানে একটা বড় স্টেটমেন্ট দুল, হাতে আংটি আর ব্রেসলেট। শাড়ির সঙ্গে মাঝে সিঁথি করে খোঁপা বেঁধেছেন অভিনেত্রী। ন্যুড শেডের লিপস্টিক, আইশ্যাডো দিয়েই সেরেছেন সাজ। মেকআপ ছিমছাম হলেও তাতে ছিল বেশ গ্লসি লুক।
পুজোর সময় বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে পার্টি লেগেই থাকে। দেবশ্রীর রাতের সাজের জন্য সন্দীপ বাছাই করেছেন একটি ডিজ়াইনার শর্ট ড্রেস। গোলাপি ড্রেসে দেবশ্রী ক্যামেরায় ধরা দিলেন মোহময়ী রূপে। ডিপ নেক, ফুল হাতা এ লাইন ড্রেস পরেছেন অভিনেত্রী। কাঁধের দিকে একটু পাফি লুক দিয়েছেন পোশাকশিল্পী। পোশাকে কোনও রকম জমকালো কারুকাজ না থাকলেও অভিনেত্রীর সাজ ছিল বেশ মার্জিত।
গোলাপি ড্রেসের সঙ্গে খোলা চুলেই ক্যামেরাবন্দি হয়েছেন নায়িকা। চুলের সাজে ছিল কার্লি লুক। কানে স্টেটমেন্ট দুল আর হাতে বড় আংটি। মেকআপে ছিল হালকা স্মোকি আই লুক। ন্যুড শেডের লিপস্টিক আর আইশ্যাডো দিয়েই রাতের সাজ সেরেছেন অভিনেত্রী।
ভারী চেহারা বলে মনের মতো পোশাকের সঙ্গে কোনও রকম আপস করতে রাজি নন দেবশ্রী। পোশাকটি আপনি কী ভাবে বহন করছেন, সেটাই বেশি জরুরি— এমনই মত অভিনেত্রীর। দুর্গাপুজোয় সাবেকি আর পশ্চিমি, দু’রকম সাজেই সাজবেন দেবশ্রী। অভিনেত্রী বললেন, ‘‘খোলামেলা পোশাক পরে আমি যদি স্বচ্ছন্দ বোধ করি, তা হলে কেন পরব না? পোশাকটি আমার মনের মতো হলেই হল, লোকে কী বলবে, তাতে কিছুই এসে-যায় না।’’
ভাবনা,পরিকল্পনা এবং প্রয়োগ: সুদীপা দাশগুপ্ত
সহায়তায়: উৎসা হাজরা
পোশাকশিল্পী: সন্দীপ জয়সওয়াল
চিত্রগ্রাহক: পার্থসারথি পাঁজা
রূপটান শিল্পী: প্রশান্ত দে (রণি)
স্থান সৌজন্যে: সন্দীপ জয়সওয়াল স্টুডিয়ো
গহনা সৌজন্যে: সালঙ্কারা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy