চুল ঠিক এই কারণে সাদা হয়ে যায়। ছবি: ফ্রিপিক।
বয়সের চাকা বার্ধক্যের দিকে ছুটবেই। বুড়িয়ে যাওয়া প্রথম ধরা পড়বে চুলের পাকে আর গলার কুঁচকে যাওয়া চামড়ার ভাঁজে। কিন্তু আধুনিক জীবনের গতি এতটাই বেশি যে, বয়স না হলেও ‘বার্ধক্য’ আগাম কড়া নাড়ে। বছর ত্রিশের যুবক-যুবতীর সিঁথির পাশেও উঁকি দেয় সাদা চুল। একটি-দু’টি থেকে নিমেষেই গোটা মাথায় ঢেউখেলানো কালো চুল সাদা হয়ে যেতে শুরু করে। বাজারচলতি দামি প্রসাধনী লাগিয়ে, সময়ান্তরে রং করেও লাভ হয় না। কেবল সাদা চুলকে আড়াল করা যায় মাত্র। মাথা ভরা কাঁচা-পাকা চুল মনে যতই কষ্ট দিক না কেন, চুল পাকার আসল কারণ কী, তা জেনে রাখা ভাল। চুল কেন পাকে, তার কয়েকটি কারণ জানিয়েছেন নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রসম্যান স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীরা।
চুলের রং ধরে রাখে মেলানোসাইট কোষ। এই কোষ আবার জন্মায় স্টেম কোষ থেকে। স্টেম কোষ সারা শরীরেই থাকে। এই স্টেম কোষ থেকেই বিভিন্ন রকম কোষের জন্ম হয়। তার মধ্যে মেলানোসাইট কোষও আছে। ত্বক, চুলের রঙের জন্য দায়ী এই কোষ। মেলানোসাইট কোষ থেকে যে রঞ্জক তৈরি হয়, তার নাম মেলানিন। এই মেলানিনের কারণেই একমাথা কুচকুচে কালো চুল হয়। কিন্তু সমস্যাটা তৈরি হয় অন্য জায়গায়। এই মেলানোসাইট কোষ চুলের গোড়ায় তৈরি হয় এবং সেখানেই মেলানিন তৈরি করে। প্রতিটি চুলের গোড়াতেই মেলানোসাইট থাকে। এখন এই কোষের যদি কম বা বেশি হয়, অথবা মেলানোসাইট নষ্ট হয়ে গিয়ে মেলানিন তৈরি করতে না পারে, তখন চুলের স্বাভাবিক রং ফিকে হতে থাকে। একসময়ে সমস্ত রং উঠে গিয়ে সাদা হয়ে যায়।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, বয়সকালে এই মেলানোসাইট কোষের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়। কোষগুলি পূর্ণাঙ্গ রূপ পায় না। চুলের গোড়ায় এমন ভাবে আটকে যায় যে, তা আর মেলানিন রঞ্জক তৈরি করতে পারে না। তখন চুলের রং বদলে যেতে থাকে। যদি কম বয়সেই যদি মেলানোসাইট কোষ নষ্ট হতে শুরু করে, তা হলেও একই দশা হয়।
কম বয়সে মেলানোসাইট নষ্ট হতে পারে অনেক কারণে। জীবনযাত্রায় অসংযম, অতিরিক্ত ভাজাভুজি খাওয়ার অভ্যাস, লাগামছাড়া মদ্যপান এবং মাত্রাতিরিক্ত দুশ্চিন্তা-উদ্বেগের কারণে মেলানোসাইট কোষ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ধূমপান-মদ্যপান বেশি করলে চুলের গোড়ায় রক্তনালিগুলি শুকিয়ে যায়, তখন মেলানোসাইট তৈরিই হয় না। এর থেকেও অকালপক্বতা আসে। তা ছাড়া এখন বাজারচলতি প্রসাধনীই চুলে বেশি লাগন কমবয়সিরা। এগুলির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক থাকে যা মেলানিন রঞ্জক উৎপাদনের প্রক্রিয়াটাই থামিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। খাওয়াদাওয়ার উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করে। প্রক্রিয়াজাত খাবার, বেশি তেলমশলা দেওয়া খাবার খেলে শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি হয়। গ্যাস-অম্বলের সমস্যা বাড়ে। সেটিও মেলানোসাইটের কাজে বাধা দেয়। তখন অকালেই চুলে পাক ধরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy