নাকের পাশে, গালে, কপালে কালো ছোপ ছোপ মেচেতা বা মেলাসমার দাগ অনেকের মুখেই দেখা যায়। সূর্যের অতিবেগনি রশ্মির প্রকোপে পিগমেন্টেশনের সমস্যা বাড়ে। এ ছাড়া হরমোনের সমস্যা, অনিয়ন্ত্রিত থাইরয়েডও মেচেতার কারণ। যে কারণেই মুখে কালো দাগ হোক না কেন বহু মহিলা দাগ লুকোতে ব্যবহার করেন কনসিলার, ফাউনডেশনের মতো প্রসাধনী। রাসায়নিকে ঠাসা অনেক প্রসাধনীই আছে যা দাগ ঢাকতে পারলেও, ত্বকের সমস্যা বহুগুণে বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই ঘরোয়া উপায়েই সামধানের চেষ্টা করা উচিত।
পিগমেন্টেশন কেন হয়?
মেচেতার কারণ হল ত্বকে মেলানিন রঞ্জকের আধিক্য। সূর্যের অতিবেগনি রশ্মি মেলানিনের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। তখন ত্বকে কালচে দাগছোপ হয়। যাঁরা নিয়মিত জন্মনিয়ন্ত্রণ বা ইনফার্টিলিটির চিকিৎসার জন্য ওষুধ খাচ্ছেন, তাঁদেরও ত্বকে মেচেতার দাগ বেশি দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে মুখে বা শরীরের কোনও একটি জায়গায় ত্বকের রঙে বদল হতে থাকে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই সেই বদলে যাওয়া রঙের বিশেষ অংশটি আলাদা করে নজরে পড়ে। ছিটছিট দাগের মতো দেখা যায় ত্বকে। ত্বকের রং বদলে যাওয়ার পোশাকি নামই হল পিগমেন্টেশন। এটি সারা শরীরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। সানট্যানের সঙ্গে কিন্তু পিগমেন্টেশনের পার্থক্য রয়েছে। অনেকক্ষণ সূর্যের প্রখর রোদে থেকে গোটা শরীরে কালচে ভাব দেখা দিলে, তাকে সানবার্ন বা সানট্যান বলে। আর পিগমেন্টেশনের ফলে ত্বকের নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় কালো কালো বিন্দুর মতো ফুটে ওঠে।
চর্মরোগ চিকিৎসকেরা বলেন, মেচেতার দাগ তুলতে লেজ়ার থেরাপি সবচেয়ে বেশি কার্যকরী। তবে লেজ়ার সকলের ত্বকের জন্য ভাল না-ও হতে পারে। তা ছাড়া এই থেরাপি যথেষ্টই খরচসাপেক্ষ। পিআরপি, কেমিক্যাল পিলিং এই থেরাপিগুলিও রয়েছে। তা ছাড়া বেশ কিছু ক্রিম ও খাওয়ার ওষুধও দেওয়া হয় মেচেতার চিকিৎসায়। তবে সবচেয়ে বেশি নিরাপদ উপায় হল ঘরোয়া টোটকা। এতে ত্বকের স্বাস্থ্যও ভাল থাকে, আবার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়ও থাকে না।
আরও পড়ুন:
মুখের কালো দাগ তুলতে কী করবেন?
পিগমেন্টেশন থেকে রেহাই পাওয়ার প্রাথমিক উপায় হল সানস্ক্রিন ব্যবহার। শরীরের যে সব অংশ সরাসরি সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসে, সেখানে সানস্ক্রিন লাগানো জরুরি। সানস্ক্রিন অন্তত এসপিএফ (সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর) ৫০ বা তার বেশি হতেই হবে।
ভিনিগারে অ্যাসেটিক অ্যাসিড থাকার কারণে ত্বকের পিগমেন্টেশন হালকা করতে সাহায্য করে। সম পরিমাণে অ্যাপল সিডার ভিনিগার এবং জল মিশিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশে তুলো দিয়ে লাগিয়ে নিতে হবে। এতে উপকার পেতে পারেন।
মধুর সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে তা দাগছোপের জায়গায় মাখতে পারেন। লেবুর ভিটামিন সি ও মধুর অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট পিগমেন্টেশনের সমস্যার সমাধান করতে পারে।
দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে মুখে মাখলেও দাগছোপ কমতে পারে। ‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ ডার্মাটোলজি’ জার্নালে বলা হয়েছে, পিগমেন্টেশনের সমস্যার সমাধান করতে হলুদই সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হতে পারে।
দইয়ের সঙ্গে ওট্মিল মিশিয়ে মুখে মাখতে পারলেও লাভ হবে। সমপরিমাণে দুই উপকরণ মিশিয়ে মুখে মেখে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলতে হবে।