প্রদর্শনীতে আফগানি স্টল। নিজস্ব চিত্র
কেনাকাটা করতে গিয়ে বুঝতেই পারেন না কী কিনবেন? চৈত্র সেলের ভিড় সকলের ভাল লাগে না। কিন্তু নববর্ষই হোক বা আসন্ন গরমকাল— নতুন ভাবে সাজগোজ করতে সকলেই পছন্দ করেন। খুব বেশি ঘোরাঘুরি না করে যদি এক ছাদের নীচে সাজ-পোশাকের যাবতীয় জিনিস কিনতে চান, তা হলে ঢুঁ মারতে পারেন শহরের বিভিন্ন ফ্যাশন প্রদর্শনীগুলিতে। তেমনই এক প্রদর্শনী চলছে হিন্দুস্তান পার্কের ভিকি গার্ডেন্সে। ২৬ মার্চ, শনিবার এই প্রদর্শনীর শেষ দিন। সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। আয়োজনে ‘লুমস ইউভ্স অ্যান্ড মোর’।
দেশের বিভিন্ন প্রদেশের হাতের কাজ একসঙ্গে করার প্রচেষ্টাই এই প্রদর্শনী। উদ্যোক্তারদের পক্ষে সঞ্চিতা ঘোষ বললেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করি দেশের বিভিন্ন ধরনের হস্তশিল্পীদের নিয়ে আসার। প্রত্যেকটি স্টলে আলাদা ধরনের জিনিস পাবেন। কোনওটাই দ্বিতীয় স্টলে পাবেন না।’’
কলকাতারও নানা বস্ত্রবিপণি থেকে পোশাকশিল্পীরা তাঁদের সম্ভার সাজিয়ে বসেছেন এখানে। শাড়ি, ছিঁট কাপড়, কুর্তি, ব্লাউজের পাশাপাশি পাওয়া যাবে নানা রকমের ব্যাগ এবং গয়নাগাঁটি। নানা রকম বাহারি জুতো, ঘর সাজানোর সামগ্রী, বিছানার চাদর— বাদ নেই কিছুই।
অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আসা এক কারিগর জানালেন এ বারের নতুন কাজ কাঞ্জিভরম শাড়িতে কলমকারী কাজ। হাতে আঁকা ছবিগুলিতে রং ধরাতে ব্যবহার করা হয়েছে ঘিয়ের। সেই গন্ধ নাকে আসবে শাড়ি ধরলেই। প্রাকৃতিক রং কাপড়ে ধরানোর উপায় এটিই।
একই রকম প্রাকৃতিক রঙের ব্যবহার করেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত পোশাকশিল্পী অনুরাধাও। অসমের অনুরাধার মেখলা বা শাড়ি পরে দেখা গিয়েছে বিদ্যা বালন বা তাপসী পন্নুর মতো বহু বলি-তারকাদের। তিনি এ বছর এই প্রদর্শনীতে নিয়ে এসেছেন তাঁর নতুন মেখলার সংগ্রহ। রং ধরানো হয়েছে হলুদ দিয়ে।
শুধু দেশ নয়, এই প্রদর্শনীতে অংশ নিতে এসেছেন আফগানিস্তানের কারিগরও। নানা রকম হাতে তৈরি আফগানি গয়নার পশরা সাজিয়ে বসেছেন তাঁরা। এ বছর ভারতে আসতে অসুবিধা হল না? মৃদু হেসে তিনি বললেন, ‘‘যত অসুবিধা ও দেশেই, ভারতে কোনও অসুবিধা হয় না আমাদের।’’ ব্যবসার হাল কেমন ও দেশে। প্রশ্ন শুনে নিচু স্বরে উত্তর এল, ‘‘ও দেশের হাল তো আপনারা আমাদের চেয়ে ভাল জানেন। কিছুই হচ্ছে না, ব্যবসা এখানে এলে ভাল হয়।’’ উত্তর যতই বিষাদ, মুখের ততটাই মিষ্টি হাসি আফগানি কারিগরের।
প্রদর্শনীর প্রথম দিন দেখা গেল অভিনেতা এবং বাচিকশিল্পী সুজয় প্রসাদ চট্টপাধ্যায়কে। পোশাক এবং গয়নায় যে তাঁর অভিনব রুচি রয়েছে, তা তাঁর পরিচত মহলে সকলেরই জানা। নানা রকমের গয়না দেখতে দেখতে তিনি বললেন, ‘‘এই ধরনের প্রদশর্নীগুলোয় এক জায়গায় অনেক ধরনের জিনিস পাওয়া যায়। আর পাঁচ জনের চেয়ে আলাদা পোশাক বা গয়না চাইলে এখানে আসাটাই শ্রেয়। এই প্রদর্শনীতে অনেক ধরনের ব্যাগ দেখলাম। সেগুলো যেমন সুন্দর, তেমনই প্রয়োজনীয়।’’ আফগানি গয়নার পশরা থেকে নিজের জন্য একটি বেছে নিলেন সুজয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy