Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Anuttama Banerjee

চেষ্টা করেও পর্ন দেখার নেশা কাটাতে পারছেন না? মুক্তির উপায় বলে দিলেন মনোবিদ

‘কী করে বলব? সঙ্গে অনুত্তমা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের এই সপ্তাহের বিষয় ছিল ‘পর্নে আসক্তি’।

পর্ন দেখার নেশা কাটাতে মুক্তির উপায় দিলেন মনোবিদ।

পর্ন দেখার নেশা কাটাতে মুক্তির উপায় দিলেন মনোবিদ। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২২ ২০:৩৪
Share: Save:

নিষিদ্ধ কোনও জিনিসের প্রতি কৌতূহল সব সময়েই বেশি থাকে। কিন্তু তা নিখাদ কৌতূহল। আবার কখনও সেই কৌতূহল পরিণত হয় আসক্তিতে। বিশ্বায়ন আর ব্যস্ত সময়ে, এই দুইয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলেছে প্রযুক্তির হাতছানি। বয়স নির্বিশেষে সকলের কাছেই নেটদুনিয়া যেন ‘সব পেয়েছির আসর’। এই সব চাওয়া-পাওয়ার ফাঁক গলেই জন্মাচ্ছে নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি টান। তার মধ্যে ‘পর্নোগ্রাফি’ অন্যতম।

অতিরিক্ত নীলছবি দেখলে বাস্তব এবং কল্পনার মধ্যে একটি ফারাক তৈরি হয়। ব্যক্তিগত জীবনেও এর প্রভাব পড়ে। দীর্ঘ দিনের পর্ন দেখার অভ্যাস অনেক সময়ে নিজের মনে লুকিয়ে থাকা যৌনতার ভাষাকেও বদলে দেয়। মোবাইল কিংবা কম্পিউটারের পর্দায় যৌনতার যে ছবি ফুটে ওঠে, সেটাই একমাত্র বলে ধরে নিতে শুরু করেন অনেকে। অনেক সময়ে ভাবনার মধ্যেও সেটিই একমাত্র নিদর্শন হয়ে থেকে যায়। সেখানেই সমস্যার সূত্রপাত। এই বিষয়টি নিয়েই সোমবার আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক ও ইউটিউবে আলোচনায় বসলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘কী করে বলব? সঙ্গে অনুত্তমা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের এই সপ্তাহের বিষয় ছিল ‘পর্নে আসক্তি’। পর্ন দেখা নিয়ে অনেকেরই ভাবনা থাকে। পাশাপাশি আসে দুর্ভাবনাও। কিন্তু অনেকেই তা নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চান না। তবে প্রতি সপ্তাহের মতো এ পর্বেও ইমেলে অনেক প্রশ্ন পেয়েছিলেন মনোবিদ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জন জানিয়েছেন, গ্রাম ছেড়ে শহরে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে আসার পরে পর্ন শব্দটির সঙ্গে প্রথম পরিচয়। ধূমপান, মদ্যপান নয়, ধীরে পর্ন দেখার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়তে থাকেন। এই আসক্তি যে অন‍্যগুলির চেয়ে কম ক্ষতিকারক নয়, তা বুঝতে পারছিলেন। এখন তাঁর বয়স ২২। পেশায় সরকারি কর্মচারী। কিন্তু কলেজবেলার সেই পর্ন আসক্তি এখনও পিছু ছাড়েনি। প্রতি মুহূর্তে শারীরিক এবং মানসিক শক্তি তলানিতে এসে ঠেকেছে। বিভিন্ন অনুপ্রেরণামূলক ভিডিয়ো দেখেও স্বাভাবিক জীবনে ফেরা সম্ভব হচ্ছে না। তবে কলেজবেলার আসক্তির কারণ এখানের চেয়ে আলাদা। অফিস থেকে ফিরে ক্লান্ত হয়ে পড়লে সেই ক্লান্তি আর চাপ থেকে মুক্তি পেতেই পর্ন দেখা হয়। কিন্তু এই সমস্যা কাউকে বলতে পারছেন না।

এই প্রশ্নের ধার ঘেঁষে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও এক জন লিখেছেন, ‘‘আমি দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। পড়ার চাপে যখন ক্লান্ত হয়ে যাই, তখন পর্ন দেখেই চাঙ্গা হই। ছোটবেলায় পর্ন সাইট খুঁজে পেতাম না বলে দেখার সুযোগ ছিল না। এখন প্রযুক্তির কারণে সবই দেখা সম্ভব হয়। তা ছাড়া পুরুষের যৌনাঙ্গ দেখার প্রতি আলাদা একটা আকর্ষণ রয়েছে। এর ফলে পড়াশোনার যে কোনও ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে, তা নয়। কিন্তু ভবিষ্যতে কোনও সমস্যা হতে পারে কি না, তা ভেবে দুশ্চিন্তা হচ্ছে। এক বার প্রায় হাতেনাতে ধরা পড়ে যাচ্ছিলাম মায়ের কাছে। কোনও ভাবে বকা খাওয়া থেকে বেঁচেছি। কিন্তু সমস্যা রয়েই যাচ্ছে।’’

যাঁরা সমস্যার কথা জানিয়েছেন তাঁরা একটি বিশেষ বয়সের। কেউই ২৫ বছর পেরোয়নি। তাঁদের উদ্দেশে মনোবিদের উত্তর, ‘‘কিছু কিছু লক্ষণ যখন নিজেদের মধ্যে টের পাওয়া যাচ্ছে এবং নিজেকে এর মধ্যে থেকে উত্তরণের পথ খোঁজার চেষ্টা চলছে। নিজেকে দেখতে পাওয়া এবং সেখান থেকে বেরোতে চাওয়ার ইচ্ছাটাই একটা বিরাট বড় সম্ভাবনা। কারণ অনেক সময়ে সমস্যা থেকে নিজেরাই পালিয়ে যাই। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না। অন্যকে না বলতে পারলেও নিজের কাছে গোপন করছেন না কেউ। বদলের দরকার আছে, তা বোঝাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া মানে বাকিটা আস্তে লড়ে এবং গ়ড়ে নেওয়া সম্ভব হবে। আসলে এ ক্ষেত্রে চটজলদি ক্লান্তিমুক্তির পথ হিসাবে বেছে নেওয়া হচ্ছে পর্নোগ্রাফিকে। অর্থাৎ, দৈনন্দিন জীবনের একটা অংশ হয়ে উঠছে। কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে, জীবনের একটা অংশ হয়ে উঠলেও তা যেন জীবন না হয়ে ওঠে। সেটাই জরুরি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Anuttama Banerjee Loke Ki Bolbe
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy