—প্রতীকী চিত্র।
লুপাস রোগের কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কমে যায়। তাই ওই অসুখে ভোগা শিশুদের দ্বিতীয় কোনও সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি খুব বেশি। সে কারণেই পরিজনদের বেশি মাত্রায় সতর্ক থাকতে হবে। রবিবার ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেল্থ (আইসিএইচ) আয়োজিত লুপাস রোগ সংক্রান্ত সম্মেলনে এমনই বার্তা দিলেন চিকিৎসকেরা।
তাঁরা জানাচ্ছেন, লুপাস হল সিস্টেমিক অটোইমিউন ডিজ়িজ় বা কানেক্টিভ টিসু ডিজ়িজ়। এর ফলে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা অজ্ঞাতকারণে নিজের শরীরেরই বিভিন্ন কোষ ও কলাকে ধ্বংসের চেষ্টা করে।তাতে আক্রান্ত অংশে প্রদাহ হয়ে প্রচণ্ড ফুলে ওঠার পাশাপাশি যন্ত্রণা শুরু হয়। লুপাসের কারণে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে।
বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কিডনির সমস্যা বেশি দেখা যায় বলেও জানান, আইসিএইচ-এর পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজিস্ট রাজীব সিংহ। তিনি বলেন, “লুপাস আক্রান্ত অন্তত ৫০ শতাংশ শিশুরই কিডনিতে সমস্যা দেখা যায়। তবে যথাযথ চিকিৎসায় রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।” এই রোগের নির্দিষ্ট কারণ আজও জানা যায়নি বলেই দাবি আইসিএইচের পেডিয়াট্রিক রিউম্যাটোলজিস্ট প্রিয়ঙ্কর পালের। তিনি বলেন, “পরিবেশগত বা জিনগত কারণে লুপাস আক্রান্ত হয় অনেকেই। তবে ওই দু’টিই একমাত্র কারণ, এমনটা জোর দিয়ে বলা যায় না।”
২০০৭ সাল থেকে পার্ক সার্কাসের ওই শিশু হাসপাতালে প্রিয়ঙ্কর ও রাজীব একসঙ্গেলুপাসের চিকিৎসা শুরু করেন বলে এ দিন জানান হাসপাতালেরকার্যনির্বাহী অধিকর্তা, শিশুরোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ। ওই হাসপাতালে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৫০ জন লুপাস আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসা হয়েছে। যাদের বয়স ৮ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। তবে সচরাচর না হলেও, পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের মধ্যেও এই অটোইমিউন ডিজ়িজ়ের প্রকোপ দেখা যায় বলে জানাচ্ছেন প্রিয়ঙ্কর। তিনি বলেন, “বড়দের ক্ষেত্রে রোগের প্রভাব ধীরে দেখা দিলেও, শিশুদের আচমকা বাড়াবাড়ি হয়। অনেককেই আইসিইউ-তে ভর্তি করতে হয়।”
আইসিএইচ-এর অধ্যক্ষ চিকিৎসক জয়দেব রায় জানান, জ্বর, শরীরের যে কোনও অংশে র্যাশ, সব সময়ে নেতিয়ে থাকা, চুল পড়া, রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়া, বিভিন্ন গাঁটে ব্যথার মতো উপসর্গ যদি দীর্ঘদিন ধরে কোনও শিশুর মধ্যে দেখা যায়, তা হলে অবিলম্বে পরীক্ষা করে দেখতে হবে, সে লুপাসে আক্রান্ত কি না। তিনি বলেন, “ঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করলেলুপাসকে নিয়ন্ত্রণে রেখে স্বাভাবিক জীবন যাপন সম্ভব।”
এ দিন মঞ্চে দাঁড়িয়ে জোর গলায় সেই কথাই শোনালেন এডুকেশনে স্নাতক অপূর্বা সেনগুপ্ত। ১৩ বছর বয়সে তাঁর লুপাস ধরা পড়ে। পরে মস্তিষ্ক ও ফুসফুসেও সংক্রমণ হয়েছিল। সেরিব্রাল পল্সিতে এবং চার বছর ধরে লুপাসে আক্রান্ত হাওড়ার সঙ্গীতা মারিক এ দিনের অনুষ্ঠানে গাইলেন, ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে...’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy