অক্সিজেন ছাড়া শরীর চলতে পারে না। কিন্তু শ্বাসের মাধ্যমে যে অক্সিজেন শরীরে প্রবেশ করে তা শরীরের সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গে পৌঁছে যায় কী করে, তা ভেবে দেখেছেন কি? শরীরের সর্বত্র অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে রক্তে থাকা হিমোগ্লোবিন। আর সেই হিমোগ্লোবিনের জন্য দরকার পড়ে আয়রন। হাতের কাছে থাকা খুব সামান্য দামে বাজারে পাওয়া খাবার থেকে শরীর প্রয়োজনীয় আয়রন পেতে পারে। তেমন সাতটি খাবারের সন্ধান জেনে নিন।
১। থোড়
আসলে কলাগাছের কাণ্ড। শহরের বাজারে খুঁজলেই থোড় পাওয়া যাবে। আর এই থোড়ে রয়েছে ভরপুর আয়রন। বছর কয়েক আগেও বাঙালি বাড়িতে থোড় ভাজা, থোড়ের ঘণ্ট, থোড়ের ছেঁচকি খাওয়ার চল ছিল। কিন্তু সম্ভবত থোড় কাটার ঝক্কির জন্যই ধীরে ধীরে সেই সব রান্না হারিয়েছে। থোড়ের নানা গুণ আছে। তবে রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরির জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী।
২। ডুমুর
কথায় বলে ডুমুরের ফুল। যাকে দেখা যায় না। তবে ইদানীং শহুরে বাজারহাটে ডুমুরের দেখাও আর পাওয়া যায় না। ডুমুরেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। এ ছাড়াও ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, জিঙ্ক, ক্যালশিয়ামের মতো উপকারী খনিজ রয়েছে ডুমুরে। রক্তাল্পতার সমস্যা থাকলে ডুমুর খেয়ে উপকার মিলতে পারে।
৩। থানকুনি পাতা
রক্তাল্পতার সমস্যায় আগে থানকুনি পাতার রস নিয়মিত খেতে বলা হত। তার কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, যা রক্তে লোহিত কণিকা তৈরি করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, এতে থাকা ভিটামিন সি রোগপ্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে। এ ছাড়াও থানকুনি পাতায় থাকা ব্যাকোসাইড এ এবং বি মস্তিষ্কের কোষ গঠন করে, তাতে রক্ত সঞ্চালনও বৃদ্ধি করে।
৪। মোচা
কলাগাছের ফুল হলেও মোচা আসলে সব্জিই। আর এই সব্জিতেও আয়রনের মাত্রা বেশি। মোচা শরীরে আয়রনের একটি অত্যন্ত ভাল উৎস। এতে আয়রনের সঙ্গে ভিটামিন ই-ও থাকে। এ ছাড়া রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, কপার এবং ফসফরাসের মতো খনিজ, যা রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করে অক্সিজেন পরিবহনে সাহায্য করার পাশাপাশি শরীরকে অন্যান্য রোগ থেকেও দূরে রাখে।
৫। পালং শাক
পালং শাকেও প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে ভিটামিন এ, সি, কে, ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম এবং পটাশিয়াম। তাই পালং শাক রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।
৬। কচু শাক এবং কচু
কচু শাক, কচুর লতি এবং কচুতেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। গ্রাম বা মফস্সলের বাজারে এই শাক বা সব্জি পাওয়া গেলেও শহুরে বাজারে খুঁজে কিনতে হবে। কচুর শাক এবং কচুর লতি দিয়ে নানা রকমের সুস্বাদু রান্না করা যায়। কচুতেও আয়রনের পাশাপাশি রয়েছে প্রচুর ফাইবার, যা ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও সহায়ক হতে পারে।
৭। টম্যাটো
টম্যাটোতেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। এ ছাড়াও ভিটামিন সি, লাইকোপেন রয়েছে। নিয়মিত টম্যাটো খেলেও রক্তাল্পতার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পাশাপাশি, তা রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃ্দ্ধিতেও সাহায্য করে।