Advertisement
E-Paper

প্রযুক্তির ব্যবহারে কার জীবন কেমন হয়েছে? শরীরচর্চা থেকে লেখাপড়া, নানা কথা উঠে এল আলোচনায়

বিভিন্ন বয়সে প্রযুক্তির ব্যবহার ভিন্ন। জরুরি মেল, তথ্য আদানপ্রদান তো আছেই। তা ছাড়া কেউ নিজের কনটেন্ট তৈরিতে কাজে লাগান। কেউ আবার নিজের সৃষ্টিকে বেঁধে ফেলেছেন প্রযুক্তির সঙ্গে। আলোচনায় অংশ নিলেন অভিনেত্রী নুসরত জাহান, চিকিৎসক রূপালি বসু, প্রাক্তন আইএএস দেবাশিস সেন প্রমুখ।

প্রযুক্তি ছাড়া সত্যিই কি জীবন অচল?

প্রযুক্তি ছাড়া সত্যিই কি জীবন অচল? ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:০০
Share
Save

স্কুলের প্রয়োজন ছাড়া সাড়ে চার বছরের ছেলেকে প্রযুক্তি থেকে দূরেই রাখেন অভিনেত্রী নুসরত জাহান। কিন্তু নিজের ফিটনেস সংক্রান্ত যাবতীয় দায়ভার দিয়ে রেখেছেন হাতে বাঁধা ঘড়িটির উপর। প্রযুক্তির ভাল-খারাপ দু’দিকই রয়েছে। নুসরতের মতে, “কে কী ভাবে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করছেন, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। তবে সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করার অনেকটা দায়িত্ব নিয়েছে প্রযুক্তি। কতটা ঘুমোবেন, কতটুকু শরীরচর্চা করবেন, কতটা জল খাবেন— সবটা তো প্রযুক্তির সাহায্যেই হচ্ছে। এমনকি, জরুরি কাজ করতে গিয়ে দীর্ঘ ক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকলে সেই প্রযুক্তিই মনে করিয়ে দেবে এ বার উঠে দাঁড়ানোর সময় হয়েছে। আমার জীবন অনেক সহজ হয়েছে প্রযুক্তির সাহায্যে।”

শুক্রবার দক্ষিণ কলকাতার একটি শপিং মলে নতুন করে পথ চলা শুরু করল ‘ইমাজিন’ সংস্থা। সেই উপলক্ষে দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির ব্যবহার ও তার ভালমন্দ নিয়ে বিশেষ একটি আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই উঠে এল এমন সব কথা।

আলোচনায় (বাঁ দিক থেকে) দেবাশিস সেন, রূপালি বসু, প্রীতি সরকার, সায়রা শাহ হালিম, অঙ্কিত আদিত্য, নুসরত জাহান এবং শৌর্য্য শেঠ।

আলোচনায় (বাঁ দিক থেকে) দেবাশিস সেন, রূপালি বসু, প্রীতি সরকার, সায়রা শাহ হালিম, অঙ্কিত আদিত্য, নুসরত জাহান এবং শৌর্য্য শেঠ। ছবি: সংগৃহীত।

অনেকেরই ধারণা, প্রযুক্তি প্রবীণদের জন্য নয়। তবে দেবাশিস সেনের ক্ষেত্রে বিষয়টি একেবারে উল্টো। দীর্ঘ দিন হিডকোর শীর্ষ পদে ছিলেন প্রাক্তন আইএএস দেবাশিস। সে কাজ থেকে অবসর নিয়েছেন ঠিকই। তবে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন প্রযুক্তি দিয়েই। কথায় কথায় তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত বহুলব্যবহৃত যত ধরনের ‘এআই’ রয়েছে, তিনি তার প্রায় সিংহভাগই ব্যবহার করে ফেলেছেন। ‘এআই আর্ট’-এর প্রতি তাঁর বিশেষ আসক্তি রয়েছে। তাঁর কথায়, “প্রযুক্তি ব্যবহার করা কঠিন নয়। যে কোনও বয়সেই তা ব্যবহার করা যায়। প্রযুক্তির সাহায্যে আমি আমার ফোন, ল্যাপটপকে ক্যানভাসের মতো ব্যবহার করি।”

চিকিৎসাক্ষেত্রে প্রযুক্তি বিপ্লব ঘটিয়েছে। রোগনির্ণয়, অস্ত্রোপচার থেকে দুর্গম অঞ্চলে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া— সেই প্রযুক্তির হাত ধরেই সম্ভব হয়েছে। কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালের কার্যনির্বাহী প্রধান চিকিৎসক রূপালি বসু জানান, প্রযুক্তি ছাড়া তাঁর জীবন প্রায় অচল। জরুরি মেল, মিটিং থেকে গুরুত্বপূর্ণ রিপোর্ট নিয়ে পর্যালোচনা— মুঠোফোনেই সব কাজ সারেন তিনি। রূপালির বক্তব্য, “আমার কাছে প্রযুক্তি আর কাজ সমার্থক। প্রযুক্তি ছাড়া হাসপাতালের মতো বৃহত্তর ক্ষেত্রের পরিকাঠামো সামাল দেওয়া সম্ভব নয়।”

ভাবুন তো, আজকের দিনে কত জন পকেটে খুচরো পয়সা নিয়ে দোকানে যান? ব্যাঙ্কে লাইনে দাঁড়িয়ে টাকাপয়সা লেনদেন করেন কিংবা খাবার নিয়ে বাড়ি যাবেন বলে রেস্তরাঁর বাইরে ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকেন ক’জন? সমাজকর্মী তথা আইনজীবী সায়রা শাহ হালিমের মতে, সমাজের সব স্তরে প্রযুক্তি ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, “পড়াশোনা, চিকিৎসা, বিনোদন— এখন তো সবই প্রযুক্তিনির্ভর। খোঁজ নিয়ে দেখুন, সমাজের নানা স্তরের মানুষ ডিজিটাল পেমেন্ট সম্পর্কে জানেন। তার জন্য অবশ্যই শিক্ষার প্রয়োজন। সুতরাং প্রযুক্তির ভাল দিক তো রয়েছে।”

তর্কের খাতিরে অনেকেই হয়তো বলবেন, প্রযুক্তির ব্যবহার তরুণ প্রজন্মকে নিঃসঙ্গ করে তুলেছে। সারা দিন ফোনের নেশায় আসক্তদের একাকিত্ব গ্রাস করার প্রমাণ তো মিলেছে। তবে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারেই পাশের বাড়ির মেয়ে প্রীতি সরকার খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছেছে। দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাটিয়ে, টাকা জমিয়ে অন্যের ব্যবহৃত আইফোন কিনেছিলেন প্রীতি। প্রথম করা ভিডিয়োই কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসাবে তাঁকে পরিচিত করে তোলে। প্রীতি বলেন, “আইফোনের দৌলতে আমার জীবন বদলে গিয়েছে।”

প্রযুক্তি এখন শুধু তথ্য অনুসন্ধানে আবদ্ধ নেই। উন্নত হতে হতে অফিসের টেবিল থেকে সে এখন হাতের মুঠোয় এসে পৌঁছেছে। যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডালপালা মেলে, নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ করে চলেছে। অঙ্কিত আদিত্য পেশায় ব্যবসায়ী। কিন্তু নেশায় সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার, অন্দরসজ্জা শিল্পী। আলাদা আলাদা ক্ষেত্রে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন তিনি। গুরুমুখী শিক্ষা নয়। বরং প্রযুক্তিই তাঁর কাছে গুরুকুল।

Technology Daily life Medical Services Creative Skills Artifical Intelligence

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}