গরম থেকে বাঁচতে সানগ্লাস, সানস্ক্রিন, টুপি ও ছাতার ব্যবহার করতে হবে। ফাইল ছবি।
সাম্প্রতিক কালের মধ্যে শীতলতম ছিল এ বারের মার্চ। আর গত সাত বছরের মধ্যে এ বারই উষ্ণতম এপ্রিলের সাক্ষী থাকছেন শহরবাসী।
তাপমাত্রার এই দ্রুত রদবদল ভাবাচ্ছে চিকিৎসকদের। এরই মধ্যে আজ, সোমবার থেকে তাপপ্রবাহের সতর্কতা রয়েছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলা এবং উত্তরের মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুরে তাপপ্রবাহ হতে পারে। তীব্র দহন থেকে বাদ যাবে না কলকাতাও। এই পরিস্থিতিতে সুস্থ থাকতে তাই গরম-ঠান্ডার চড়া হেরফের যেন শরীরের ক্ষতি না করে, সেই পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জেরিয়াট্রিক মেডিসিন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বলছেন, ‘‘হঠাৎ ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ঠান্ডায় (শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জায়গা) ঢুকলাম, আবার সেখান থেকে বেরিয়ে ৩৮ ডিগ্রি গরমে চলে এলাম, এমন করা যায় না। তাপমাত্রার এত পার্থক্য শরীর নিতে পারবে না। এমনটা হলে অসুস্থ হয়ে পড়তেই পারেন যে কেউ!’’ হদ্রোগের শল্য চিকিৎসক কুণাল সরকার বললেন, ‘‘মানুষ এসিতে থাকবেন ভেবে তো শরীরের গঠন হয়নি, তাই এসির ব্যবহার বুঝে করা উচিত। পরিবেশ ও ঘরের তাপমাত্রায় পাঁচ থেকে ১০ ডিগ্রির বেশি পার্থক্য যাতে না হয়, খেয়াল রাখতে হবে।’’ তাঁদেরপরামর্শ, বেলা ১০টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত সময়ে রোদে বেরোনো এড়িয়ে চলতে হবে। যদি সেটা সম্ভব না হয়, মনে রাখতে হবে, শরীরে যেন জলের ঘাটতি না হয়। ঘামের সঙ্গে নুনও দেহ থেকে বেরিয়ে যায়, তাই জলের পাশাপাশি নুনও শরীরে যাওয়া দরকার। ডাবের জল খাওয়া ভাল। চিঁড়ে-মুড়ি ভেজানো জল শরীরের পক্ষে আরামদায়ক।
গরম থেকে বাঁচতে পোশাকও গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে সব চিকিৎসকের ভোট সুতির বস্ত্রে। কোনও মতেই কালো পোশাক ব্যবহারের পক্ষে নন চিকিৎসকেরা। সঙ্গে সানগ্লাস, সানস্ক্রিন, টুপি ও ছাতার ব্যবহার করতে বলছেন। ত্বক নিয়েও সতর্ক থাকতে বলছেন তাঁরা। জানাচ্ছেন, প্রখর তাপ আর ঘামের কারণেই ত্বকের সমস্যা বাড়ে। র্যাশ বেরোনো, ত্বক লালচে হয়ে যাওয়ার মতো নানা অসুবিধা দেখা দেয়। যাঁদের ত্বক অত্যন্ত স্পর্শকাতর, গরমে তাঁদের বেশি সতর্ক থাকা জরুরি। শিশুরোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ বলেন, ‘‘ঘাম বসে বাচ্চাদের র্যাশ বেরোনোর প্রবণতা বেশি দেখা যায়। শিশুদের যতটা সম্ভব বাড়িতে রাখতে হবে। পাশাপাশি, তেল জাতীয় কিছু গায়ে না মাখানো ভাল। বদলে শ্যাম্পু দিয়ে শিশুদের স্নান করানো উচিত। জলবাহিত রোগ নিয়েও এই সময় থেকেই বাড়তি সতর্ক হতে হবে।’’
চিকিৎসকদের অপছন্দের তালিকায় রয়েছে কাটা ফল, মশলাযুক্ত খাবার ও জাঙ্ক ফুড। তাঁদের মতে, দুপুরে রাস্তার কাটা ফল খেয়ে পেটের অসুখ নিয়ে ভুগছেন, এমন উদাহরণ অসংখ্য। চোখ নিয়েও এই সময়ে বাড়তি সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। চক্ষু চিকিৎসক জ্যোতির্ময় দত্ত বললেন, ‘‘চার বছর থেকে ২০ বছর বয়সিদের চোখে এই সময়ে কনজ়াংটিভাইটিস দেখা যায়। চোখ লাল হয়ে যায়, চোখে অস্বস্তি হয়। তবে এটা ছোঁয়াচে নয়। চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে ভাল হয়। অনেক ক্ষেত্রে পর পর দু’-তিন বছর গরমে এই জিনিস হতে পারে। ভুল হয়ে যায় যদি অভিভাবকেরা ফের একই জিনিস হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া আগের ওষুধই খাওয়ান। এতে চোখে ছানিও পড়ে যেতে পারে।’’
চিকিৎসকদের পরামর্শ, গরমের সময়ে বাইরে থেকে বাড়িতে ফিরে ভাল ভাবে হাত-মুখ ও চোখ ধোয়া উচিত। চোখ লাল হলে বা শুকনো হওয়া আটকাতে হালকা ঠান্ডা জল দিনে কয়েক বার চোখে ছেটালে উপকার হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy