Advertisement
E-Paper

‘মস্তিষ্কে পচন’ ধরে! কখন ওই সমস্যা হয়? কোন ৫ অভ্যাস রপ্ত করলে আটকানো সম্ভব?

চিকিৎসা বিজ্ঞানে এমন কোনও শব্দের অস্তিত্ব নেই। যদিও আধুনিক সমাজে বেশ চালু শব্দ ‘ব্রেইন রট’। গত বছরই (২০২৪ সালে) অক্সফোর্ড ইউনিার্সিটি প্রেস ওই শব্দবন্ধটিকে ‘ওয়ার্ড অফ দ্য ইয়ার’-এর তকমা দিয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৫ ০৮:৫৫
Share
Save

বুদ্ধির ধার কমে যাচ্ছে, মনে হয় কি কখনও? হয়তো কাজ করে চলেছেন। অথচ ইপ্সিত ফল পাচ্ছেন না। মনোসংযোগই করতে পারছেন না ভাল করে। তখন কি মনে হয় চিন্তাশক্তি গতি হারিয়েছে। থমকে গিয়েছে এক জায়গায়! এমন পরিস্থিতির কারণ হিসাবে নানা জনে নানা ব্যাখ্যা দিতে পারেন। তবে কেউ কেউ বলবেন, আপনি ‘ব্রেইন রট’-এর শিকার। আক্ষরিক ভাবে যার অর্থ মস্তিষ্কে পচন ধরেছে!

চিকিৎসা বিজ্ঞানে এমন কোনও শব্দের অস্তিত্ব নেই। যদিও আধুনিক সমাজে বেশ চালু শব্দ ‘ব্রেইন রট’। গত বছরই (২০২৪ সালে) অক্সফোর্ড ইউনিার্সিটি প্রেস ওই শব্দবন্ধটিকে ‘ওয়ার্ড অফ দ্য ইয়ার’-এর তকমা দিয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত।

ব্রেইন রট কাকে বলা হবে?

এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বলা হয়েছে, মেধাকে চ্যালেঞ্জ না করা, ভোঁতা বিষয়বস্তুতে ভরে উঠেছে সমাজমাধ্যম। সেই সব বিষয়বস্তু দিনভর অতিরিক্ত পরিমাণে দেখার ফলে ব্যক্তিবিশেষের বোধ-বুদ্ধি এবং মেধাধৃত্তিরও প্রভূত অবনতি হচ্ছে। চিন্তাশক্তিতে আসছে আলস্য। কমছে স্পষ্ট ভাবনা চিন্তার ক্ষমতাও। এই অবনতিকেই বলা হচ্ছে ব্রেইন রট।

ছবি: সংগৃহীত।

ব্রেইন রট-এর উপসর্গ

যাঁদের ব্রেইন রটিং-এর সমস্যা হচ্ছে, তাঁদের নিম্নোক্ত কিছু অসুবিধা হতে পারে---

১. মনোসংযোগের সমস্যা, কোনও একটি বিষয়ে চিন্তা নিবদ্ধ করতে না পারা।

২. স্মরণশক্তির অবনতি।

৩. মানসিক ক্লান্তিবোধের মাত্রা বেড়ে যাওয়া।

৪. কাজে অনুপ্রেরণা না পাওয়া, সৃষ্টিশীলতার অভাব।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে সমস্ত অভ্যাস ব্রেইন রটের কারণ, তা দীর্ঘমেয়াদে মেধার অবনতির কারণ হতে পারে এমনকি, তার থেকে ডিমেনশিয়াও হতে পারে। তাই মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা জরুরি। তার জন্য বদলে ফেলা দরকারি কিছু অভ্যাস।

ছবি: সংগৃহীত।

কী কী অভ্যাস বদলানো দরকার?

১। স্ক্রিন টাইম কমানো

টানা মোবাইল দেখে যাওয়া বা টিভি দেখা মস্তিষ্ককে বিহ্বল করে তুলতে পারে। এতে চিন্তাশক্তিকে উন্নত করার কোনও উপাদান তো থাকেই না। বরং ওই অভ্যাস মানসিক ক্লান্তিবোধ বাড়িয়ে তুলতে পারে। ধীরে ধীরে মনোসংযোগের ক্ষমতাও কমিয়ে দিতে পারে। তাই সমাজমাধ্যম দেখা, মোবাইলে সিনেমা-সিরিজ় দেখার সময় বেঁধে নিতে হবে। সব মিলিয়ে দিনে ২-৩ ঘণ্টার বেশি ওই কাজে ব্যয় করা যাবে না। বদলে বই পড়া, শরীরচর্চার মতো কাজ বেশি করতে হবে। তাতে মস্তিষ্ক উজ্জীবিত হবে বেশি।

২। মস্তিষ্ক সক্রিয় রাখা

মস্তিষ্ক হল পেশির মতো। নিয়মিত সঞ্চালন না করলে সক্রিয়তা হারাবে। বুদ্ধির ধার বজায় রাখতে তাই এমন কাজ করুন, যা মস্তিষ্ককে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে। ধাঁধার সমাধান করা, দাবা খেলা, নতুন কোনও দক্ষতা রপ্ত করা, বই পড়া, ইত্যাদি করলে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ সক্রিয় হয়। তাতে সমস্যার সমাধান করার ক্ষমতা,স্মৃতিশক্তি, সৃষ্টিশীলতা বাড়ে।

৩। শরীর চর্চা করা

শরীরকে ভালো রাখলে, তা পরোক্ষে মাথাও ভাল রাখবে। নিয়মিত শরীরচর্চা মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। তাতে মস্তিষ্ক প্রয়োজনীয় অক্সিজেন এবং পুষ্টির জোগান পায়। তাই প্রতিদিন অন্তত আধ ঘণ্টার জন্য শরীরচর্চা করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

৪। মস্তিষ্কের খাবার

প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কী কী খাবার থাকছে, তার উপর নির্ভর করে মস্তিষ্ক তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাচ্ছে কি না। পুষ্টি না পেলে মস্তিষ্কে প্রদাহ, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস, মানসিক শ্রান্তিবোধ ও আসতে পারে। প্রয়োজনীয় পুষ্টি দিতে নিম্নোক্ত খাবারগুলি রাখা যেতে পারে খাদ্য তালিকায়।

* শাকপাতা যেমন পালং শাক।

* স্বাস্থ্যকর স্নেহপদার্থের জন্য বাদাম এবং দানা শস্য।

* ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার

* অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল।

ছবি: সংগৃহীত।

৫। বিশ্রাম এবং ঘুম

ক্লান্ত মস্তিষ্ক দ্বারা কোনও কাজ সুষ্ঠ ভাবে হওয়া সম্ভব নয়। দিনের শেষে মস্তিষ্ক নিজেকে মেরামত করে, যাবতীয় স্মৃতিকে আলাদা করে সরিয়ে রেখে আবার একটা দিনের জন্য পুনরুজ্জীবিত হয় ঘুমিয়ে। সেই ঘুম এবং বিশ্রাম না হলে মস্তিষ্ক আচ্ছন্ন হয়ে থাকে। স্পষ্ট চিন্তা ভাবনার ক্ষমতা যায় কমে। মস্তিষ্কের বিশ্রামের জন্য ঘুমানোর নির্দিষ্ট সময় ঠিক করুন। রোজ সেই সময়েই ঘুমোন। অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। ঘুমোতে যাওয়ার অন্তত এক ঘন্টা আগে ডিজিটাল পর্দা থেকে চোখ সরান।

Brain Rot brain fog brain recharge cognitive function

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}